শমীকের ‘দরবারে’ গোয়েন্দাগিরি! দলের পার্টি অফিসে ঢুকতে বাধা রাজ্য পদাধিকারীকে
প্রতিদিন | ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
স্টাফ রিপোর্টার: কর্মীদের কথা, অভিযোগ সরাসরি শোনার জন্য ‘দরবার’ বসিয়েছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য। আর শমীকের সেই দরবারেই ‘গোয়েন্দাগিরি’! শমীক মসনদে বসার আগে বঙ্গ বিজেপির ক্ষমতাসীন শিবিরেরই লোক বলে পরিচিত রাজ্য কমিটির এক পদাধিকারী বুধবার হাজির হয়েছিলেন দলের পুরনো রাজ্য দপ্তর ৬ নম্বর, মুরলীধর সেন লেনের পার্টি অফিসে। যে ঘরে দলের পুরনো কর্মীদের কথা মন খুলে শুনবেন শমীক, সেখানে অবশ্য ঢুকতে দেওয়া হয়নি ওই রাজ্য পদাধিকারীকে। শেষমেশ পার্টি অফিসের বাইরেই দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় ওই নেতাকে। যা নিয়ে গেরুয়া শিবিরেও শুরু হয়েছে চর্চা।
উপস্থিত দলের আদি শিবিরের অভিযোগ, আগের ক্ষমতাসীন শিবিরের ওই রাজ্য পদাধিকারী এসেছিলেন কর্মীরা রাজ্য সভাপতির কাছে কি সমস্যার কথা বলেন, তা শোনার জন্যই। আর এদিন মুরলীধর সেন লেনে বিজেপির রাজ্য দপ্তরে শমীকের সঙ্গে মন খুলে কথা বললেন শতাধিক নেতা-কর্মী। যাঁদের সিংহভাগই পুরনো, রাজ্য সভাপতিকে কাছে পেয়ে খুশি সকলেই। দল ও আগের ক্ষমতাসীন শিবিরের বিরুদ্ধে এসেছে একঝাঁক অভিযোগও। কেউ অভিযোগ করেন, তাঁদের কমিটি থেকে সরিয়ে দিয়ে অন্য পছন্দের মতো লোক নেওয়া হয়েছে। কারও অভিযোগ ছিল, তাঁদের দলে কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না।
অনেকে বলেছেন, সল্টলেক দপ্তর নয়, মুরলীধর সেন লেনের কার্যালয়কেই আবার প্রধান অফিস করা হোক। পার্টি অফিসের নিচের অফিস ঘরে খাতায় নাম লিখিয়ে দলে দলে দোতলায় গিয়ে রাজ্য সভাপতির সঙ্গে দেখা করেছেন। পুরনো কর্মী শামসুর রহমানের বক্তব্য, শমীকদার এই ধরনের উদ্যোগ চলতে থাকুক। উত্তর কলকাতা শহরতলির রাজীব মিশ্র বলেন, পার্টিতে শমীকদার মতো নেতারই দরকার ছিল। কর্মীদের সঙ্গে দেখা করার এই উদ্যোগ কেউ আগে নেয়নি। পুরনোদের গুরুত্ব দেওয়া হোক বলে দাবি করেছেন রাজারহাট-গোপালপুরের শ্যামলকুমার মণ্ডল, মৃণালকান্তি মণ্ডলরা। দল নিয়ে কর্মীদের অভিযোগ, সমস্যার কথা শুনে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়েছেন শমীক। নোটও নিয়েছেন। কোথায় কীভাবে চলতে হবে তাও বাতলে দিয়েছেন। সব কর্মীকেই দলের কাজে লাগাতে চান তিনি। আর শমীকের দরবারে তাঁর সঙ্গে ছিলেন প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়, রবীন চট্টোপাধ্যায়, তাপস চট্টোপাধ্যায়ের মতো পুরনো নেতারা। কিছুক্ষণ অবশ্য ছিলেন প্রাক্তন বিধায়ক তাপস রায়ও।
তবে উত্তর কলকাতা জেলার সভাপতি তমোঘ্ন ঘোষ ছিলেন বাইরেই। ঝাড়গ্রাম, দুই ২৪ পরগনা, ঘাটাল-সহ একাদিক জেলা থেকে এদিন কর্মীরা এসেছিলেন। পরে শমীক বলেন, ”দরবার কিছু নয়। আমি আসব, দেখাও করব কর্মীদের সঙ্গে। সকলের মত প্রকাশের অধিকার আছে।” এদিকে প্রশ্ন, শমীকের এই কার্যকর্তা বন্ধুর দরবারে কে বা কারা ওই রাজ্য নেতাকে গোয়েন্দাগিরি করতে পাঠাল? আর দল এগোচ্ছে বলে দাবি করা হলেও বঙ্গ বিজেপিতে গোষ্ঠীকোন্দল যে অব্যাহত, তা এদিন আবার সামনে এল।