ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: নজিরবিহীন অশান্তি বিধানসভায়। বাংলা ও বাঙালি নিয়ে বৃহস্পতিবার আলোচনায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বক্তব্য রাখতে উঠলে তুমুল হইহট্টগোল শুরু করেন বিজেপি বিধায়করা। তার প্রতিবাদ করতে নামে তৃণমূলও। শাসক শিবিরের একাধিক বিধায়ক ওয়েলে নেমে প্রতিবাদ দেখাতে থাকেন। শশী পাঁজা, নয়না বন্দ্যোপাধ্যায়, রত্না দে নাগ, অসীমা পাত্র, উত্তরা সিংহরায়রা নিজেদের আসন ছেড়ে নেমে বিজেপির আচরণের প্রতিবাদ করেন। পরিবেশ এতটাই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যে নিজের আসন ছেড়ে ওয়েলে নেমে আসেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী। পরিস্থিতি শান্ত করার দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেন। নিজের দলের বিধায়কদের শান্ত করে নিজেদের আসনে ফেরত পাঠান। মহিলা বিধায়কদের নির্দেশ দেন, নিজেদের আসনে বসেই স্লোগান তুলে সরব হতে হবে। তাঁর কথা শুনে সকলে আসনে চলে যান।
বৃহস্পতিবার বিধানসভায় আলোচনার গোড়া থেকেই বিজেপির তরফে অশান্তি শুরু হয়। বিধায়করা স্লোগান তুলতে থাকেন, ‘ওয়ান টু থ্রি ফোর/ তৃণমূলে সবাই চোর’। সঙ্গে সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ”ওয়ান টু থ্রি ফোর/ বিজেপি সব থেকে বড় চোর।” মোদি সরকারকে ‘ভোটচোর’ বলে উল্লেখ করে তিনিও স্লোগান তোলেন, ‘মোদি চোর, বিজেপি চোর।’ তাঁর কথায়, ”ভোট চোরের দল তোমরা। দেশে পরিবর্তন চাই। বিজেপি হঠাও, দেশ বাঁচাও। বাংলা বিরোধী বিজেপি হঠাও, দেশ বাঁচাও। তোমাদের জিরো করে দেব। দেশ বিক্রি করে দিয়েছো, লজ্জা করে না?”
আজ বাংলা সংক্রান্ত আলোচনায় মুখ্যমন্ত্রীরই মূলত বক্তব্য রাখার কথা ছিল। কিন্তু তাতেই বাধা দিতে শুরু করেন বিরোধীরা। দফায় দফায় বাধাপ্রাপ্ত হয় মুখ্যমন্ত্রীর ভাষণ। তিনি বিজেপি বিধায়কদের বলার অনুমতি দিতে বলেন স্পিকারকে। কিন্তু তারপরও অশান্তি জারি থাকে। বিধানসভার অন্দরে নিয়মভঙ্গের জন্য বিজেপি বিধায়ক শংকর ঘোষকে সাসপেন্ড করেন স্পিকার। তাতে অশান্তি আরও তুঙ্গে ওঠে। বিজেপি বিধায়কদের সঙ্গে মার্শালদের হাতাহাতি হয়। এরপরই তৃণমূল বিধায়করাও পালটা প্রতিবাদে নামেন। বিজেপি বিরোধী স্লোগান তুলতে থাকেন। তবে পরিস্থিতি ক্রমশ হাতের বাইরে চলে যেতে থাকলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে আসরে নেমে তা সামলান।