ভারতে রেকর্ড হারে কমল শিশুমৃত্যু, ১০ বছরে হ্রাস ৩৭ শতাংশের বেশি! বাস্তবের সঙ্গে পরিসংখ্যান সামঞ্জস্যপূর্ণ?
আজকাল | ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: স্বাস্থ্য পরিষেবায় উন্নতি ঘটছে? ভারতের রেজিস্ট্রার জেনারেলের জারি করা ২০২৩ সালের নমুনা নথিভুক্ত ব্যবস্থার রিপোর্ট অনুসারে, দেশে শিশুমৃত্যুর হার (আইএমআর) রেকর্ড সর্বনিম্ন ২৫-এ পৌঁছেছে। যা ২০১৩ সালে ছিল ৮০। ফলে ওই ১০ বছরে (২০১৩-২০২৩) তুলনায় ৩৭.৫ শতাংশ কমেছে।
আইএমআর এর অর্থ হলো শিশুমৃত্যুর হার (Infant Mortality Rate)। এটি একটি নির্দিষ্ট বছরে প্রতি ১,০০০টি জীবিত জন্মের এক বছরের কম বয়সী শিশুর মৃত্যুর সংখ্যাকে নির্দেশ করে। এই হারটি একটি দেশের স্বাস্থ্যসেবার মান, মাতৃস্বাস্থ্য এবং আর্থ-সামাজিক অবস্থার একটি গুরুত্বপূর্ণ সূচক হিসেবে কাজ করে।
২০২৩ সালের তথ্য বিবেচনা করে নমুনা নথিভুক্ত ব্যবস্থার (এসআরএস) ২০২৩ রিপোর্ট অনুসারে, ১৯৭১ সালে জন্মানো প্রতি হাজার শিশুর মধ্যে ১২৯টি মারা যেত, যা নাটকীয়ভাবে কমেছে। ৮০ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। এতে দেখা গিয়েছে যে মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড় এবং উত্তরপ্রদেশে আইএমআর-এর মাত্রা দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ ৩৭টি। সর্বনিম্ন তিনটি, মণিপুরে।
২১টি বৃহৎ রাজ্যের মধ্যে কেরলই ছিল একমাত্র রাজ্য যেখানে একক অঙ্কের আইএমআর পাঁচটি। মণিপুরের পরে কেরলই কম শিশু মৃত্যু হারের তালিকায় দেশে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে।
রিপোর্টে দেখা গিয়েছে যে, গ্রামাঞ্চলে আইএমআর-এর দেশব্যাপী হ্রাস ৪৪ থেকে ২৮-এ দাঁড়িয়েছে। দেশের শহরাঞ্চলে এই সংখ্যা ২৭ থেকে ১৮-এ নেমে এসেছে। এটি দশকব্যাপী যথাক্রমে প্রায় ৩৬ শতাংশ এবং ৩৩ শতাংশ হ্রাসকে নির্দেশ করে।
ভারতের রেজিস্ট্রার জেনারেলের জারি করা ২০২৩ সালের নমুনা নথিভুক্ত ব্যবস্থার রিপোর্টে, দেশের জন্মহার এবং মৃত্যুহার হ্রাসের বিষয়টিও তুলে ধরা হয়েছে।
জন্মহার জনসংখ্যার উর্বরতার একটি পরিমাপ এবং জনসংখ্যা বৃদ্ধির একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্ধারক। এর মাধ্যমে একটি নির্দিষ্ট অঞ্চল এবং বছরে প্রতি হাজার জনসংখ্যায় জীবিত জন্মের সংখ্যা তুলে ধরে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, "গত পাঁচ দশকে সর্বভারতীয় স্তরে জন্মহার উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে। যা ১৯৭১ সালে ৩৬.৯ ছিল, ২০২৩ সালে ১৮.৪ হয়েছে। গ্রাম-শহরের পার্থক্যও এই বছরগুলিতে হ্রাস পেয়েছে। তবে, গত পাঁচ দশকে শহরাঞ্চলের তুলনায় গ্রামীণ এলাকায় জন্মহার বেশি রয়েছে।"
রিপোর্টে বলা হয়েছে যে, গত দশকে জন্মহার প্রায় ১৪ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে, ২০১৩ সালে ২১.৪ থেকে ২০২৩ সালে ১৮.৪ হয়েছে। গ্রামীণ এলাকায় ২২.৯ থেকে ২০.৩ (প্রায় ১১ শতাংশ হ্রাস) হ্রাস পেয়েছে। শহরাঞ্চলের ক্ষেত্রে, জন্মহার ১৭.৩ থেকে ১৪.৯ কমেছে (প্রায় ১৪ শতাংশ হ্রাস)।
২০২৩ সালের পরিসংখ্যান মোতাবেক, বিহারে জন্মহার সর্বোচ্চ ২৫.৮, যেখানে আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে জন্মহার সর্বনিম্ন ১০.১।
গত পাঁচ দশক ধরে মৃত্যুর হার ধীরে ধীরে হ্রাস পেয়েছে, যা ১৯৭১ সালে ১৪.৯ ছিল, যা ২০২৩ সালে ৬.৪ হয়েছে।
গ্রামাঞ্চলে, ২০২২ সালে ৭.২ থেকে কমে ২০২৩ সালে ৬.৮ হয়েছে। শহরাঞ্চলে, ২০২২ সালে ৬.০ থেকে কমে ২০২৩ সালে ৫.৭ হয়েছে।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, চণ্ডীগড়ে সর্বনিম্ন চার এবং ছত্তিশগড়ে সর্বোচ্চ ৮.৩ মৃত্যুর হার রয়েছে।
"জনসংখ্যা পরিবর্তনের মৌলিক উপাদানগুলির মধ্যে মৃত্যুহার অন্যতম এবং জনসংখ্যাতাত্ত্বিক গবেষণা এবং জনস্বাস্থ্য প্রশাসনের জন্য সম্পর্কিত তথ্য অপরিহার্য। মৃত্যুহার হল মৃত্যুর একটি সহজতম পরিমাপ এবং নির্দিষ্ট অঞ্চল এবং সময়কালে প্রতি হাজার জনসংখ্যায় মৃত্যুর সংখ্যা হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়।"