আজকাল ওয়েবডেস্ক: প্রতি বছর ভারতে প্রচুর মানুষ সাপের কামড়ে মারা যান। এটি বিশ্বের মধ্যে সবথেকে বেশি। প্রতি বছর যদি সঠিক হিসেব করা যায় তাহলে এই সংখ্যাটি প্রায় ৪৬ হাজার থেকে ৬০ হাজারের মধ্যে ঘোরাফেরা করে। গ্রামের দিকেই মানুষ সাপের কামড়ে বেশি মারা যান। এখানে সাপে কাটা মানুষকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার আগেই তিনি পঞ্চত্ব প্রাপ্তি পান।
তবে এবার নতুন করে সকলকে সাবধান করলে বিজ্ঞানীরা। তারা মনে করছেন পরিবেশের পরিবর্তন সাপের মধ্যেও বিরাট পরিবর্তন ঘটিয়েছে। এই পরিবর্তনের সবথেকে বেশি প্রভাব ফেলেছে তারা বিষে। প্রতি বছর যে হারে তাপমাত্রা বাড়ছে এবং প্রয়োজনের তুলনায় বেশি বৃষ্টিপাত হচ্ছে সেখান থেকে সাপের বিষ প্রতি বছরেই আরও উন্নত হয়েছে। ফলে যদি একটি মানুষকে সাপ কামড়ায় তাহলে সে অতি দ্রুত মারা যাবে।
ভারতের মাটিতে চার ধরণের সাপ বেশি দেখা যায়। দেশের কৃষক থেকে শুরু করে চিকিৎসক সকলেই এই প্রজাতিগুলি সম্পর্কে জানেন। এই তালিকায় কোবরা, কমন ক্র্যাট, রাসেল ভাইপার এবং সাধারণ ভাইপার সবার আগে রয়েছে। এদেরকে একসঙ্গে আমরা বিগ ফোর বলেও ডাকতে পারি। এদের সকলের বিষই একেবারে মারাত্বক। এরা মানুষের বাড়ির আশেপাশে থাকে বলে এরাই মানুষকে বেশি কামড়ায়ষ এরা যেকোনও পরিবেশে অতি সহজে থাকতে পারে। সেখানে গ্রাম থেকে শুরু করে কৃষকের জমি, জঙ্গল সর্বত্রই এদের সঙ্গে মানুষের দেখা হতে পারে।
গবেষকরা মনে করছেন প্রতিটি সময় এদেরকে প্রতিকূল পরিবেশের সঙ্গে লড়তে হচ্ছে বলে এদের বিষ একেবারে অন্য ধরণের চরিত্র তৈরি করেছে। সেখানে এতদিন ধরে ব্যবহার করা বিষ একেবারে কাজ করছে না। অনেক সময় দেখা গিয়েছে সাপে কাটা ব্যক্তি সুস্থ হওয়ার কয়েক মাস পরেও মারা গিয়েছেন।
পরিবেশের সঙ্গে সাপ সবার আগে জড়িয়ে রয়েছে। এদের শিকারি মনোভাব এদেরকে যুগ যুগ ধরে বেঁচে থাকতে সহায়তা করে। ফলে সেখান থেকে এদের বিবর্তনের হার সবথেকে বেশি। যদি সেই বিবর্তন হয় সাপের বিষে তাহলে তার থেকে ভয়ানক কিছুই হতে পারে না।
সমীক্ষা থেকে দেখা গিয়েছে বিহার, ঝাড়খণ্ড, অসম, উত্তরপ্রদেশের মানুষরা এখন সাপের কামড়ে বেশি মারা গিয়েছেন। এখানকার পরিবেশ সাপেদের পক্ষে অনুকুল। ফলে সেখান থেকে তাদের বংশবৃদ্ধি অনেকটা সহায়ক হয়েছে। পাশাপাশি সামাজিক মাধ্যমে সাপ নিয়ে প্রচলিত কাহিনী মানতে গিয়ে এখানকার মানুষরা অতি দ্রুত সাপের শিকার হয়েছেন।
মানুষ এবং সাপ উভয়েই কাছাকাছি বাস করে। সেখানে ঘরের কোণ থেকে শুরু করে সাধের বাগান সর্বত্রই সাপ দেখতে পাওয়া যায়। তবে তারা যদি বিষাক্ত হয় তাহলেই সর্বনাশ। দ্রুত চিকিৎসা না হলেই একেবারে শেষ। ভারতে যে বিষাক্ত সাপেরা রয়েছে তারা অতি সহজেই পরিবেশের সঙ্গে নিজেদের মানিয়ে নিতে পারছে। ফলে সেখান থেকে তাদের বিষের পরিমান অনেক বেশি রয়েছে।
পরিবেশের সঙ্গে অনেক ধরণের প্রাণীরা খাপ খাইয়ে নিয়ে নিজেদের শক্তি বাড়িয়ে নিয়েছে। তবে সেই তালিকায় সবার আগে থেকে গিয়েছে সাপ। এদের যে বিষের বিবর্তন ঘটেছে তাকে উপযুক্ত প্রতিশেধক যদি হাতে না থাকে তাহলে সেখান থেকে মানুষকে বাঁচানো সম্ভব নয়।