• দেশের সেরা যাদবপুর!  পিছনে ফেলল চেন্নাইয়ের আন্না বিশ্ববিদ্যালয়কে 
    আজকাল | ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: শিক্ষা মন্ত্রক প্রকাশ করল বহুল প্রতীক্ষিত ন্যাশনাল ইনস্টিটিউশনাল র‍্যাংকিং ফ্রেমওয়ার্ক (NIRF) ২০২৫। এ বছর ১০ম বর্ষে পদার্পণ করল এই র‍্যাংকিং ব্যবস্থা, যেখানে মোট ১৭টি ভিন্ন ভিন্ন বিভাগে দেশের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিকে মূল্যায়ন করা হয়েছে। ইঞ্জিনিয়ারিং , ম্যানেজমেন্ট, চিকিৎসা, আইন, ফার্মাসি, গবেষণা—এমনকি সদ্য যুক্ত সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট গোলস (SDGs) বিভাগও তালিকায় স্থান পেয়েছে, যা ভারতের উচ্চশিক্ষার ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে সাযুজ্য তুলে ধরে।

    সবচেয়ে নজরকাড়া বিভাগ ছিল ‘স্টেট পাবলিক ইউনিভার্সিটি’ বা রাজ্য সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বিভাগ। এ বছর বড়সড় পরিবর্তন ঘটেছে তালিকার শীর্ষে। কলকাতার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় প্রথম স্থান অধিকার করেছে, গত বছরের দ্বিতীয় স্থান থেকে এক ধাপ এগিয়ে। অন্যদিকে, চেন্নাইয়ের আন্না বিশ্ববিদ্যালয় প্রথম স্থান হারিয়ে নেমে এসেছে দ্বিতীয় স্থানে।

    শীর্ষ ১০ রাজ্য সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় (২০২৫):১. যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়, কলকাতা২. আন্না বিশ্ববিদ্যালয়, চেন্নাই৩. পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়, চণ্ডীগড়৪. অন্ধ্র বিশ্ববিদ্যালয়, বিশাখাপত্তনম৫. কেরল বিশ্ববিদ্যালয়, তিরুবনন্তপুরম৬. কুচিন ইউনিভার্সিটি অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি, কোচি৭. ওসমানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, হায়দরাবাদ৮. কাশ্মীর বিশ্ববিদ্যালয়, শ্রীনগর৯. গৌহাটি বিশ্ববিদ্যালয়, গৌহাটি১০. ভারতীয়ার বিশ্ববিদ্যালয়, কোয়েম্বাটুর

    শিক্ষা মন্ত্রকের মানদণ্ড অনুযায়ী, মূল্যায়ন করা হয়েছে পাঁচটি মূল সূচকে—

    পাঠদান ও শিক্ষণ

    গবেষণা ও পেশাগত অনুশীলন

    স্নাতকোত্তর ফলাফল

    সমাজের বিভিন্ন অংশের অন্তর্ভুক্তি ও সম্প্রসারণ

    সর্বসাধারণের ধারণা ও প্রতিপত্তি

    রাজ্য সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলির জন্য এই র‍্যাংকিং বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ এগুলি কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনায় সীমিত অর্থনৈতিক সম্পদ নিয়ে কাজ করলেও জাতীয় স্তরে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে এবং সুলভ খরচে উচ্চমানের শিক্ষা প্রদান করছে। গবেষণা, উদ্ভাবন ও সামাজিক অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রেও এই প্রতিষ্ঠানগুলির অবদান উল্লেখযোগ্য। শিক্ষাবিদদের মতে, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এই সাফল্য পশ্চিমবঙ্গ তথা পূর্ব ভারতের উচ্চশিক্ষার মানকে নতুনভাবে আলোচনায় নিয়ে আসবে। 

    অন্যদিকে, আন্না বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় স্থানে সরে আসা দক্ষিণ ভারতের শিক্ষা ক্ষেত্রে এক ধরনের স্বাস্থ্যকর প্রতিযোগিতা তৈরি করবে। যাদবপুরের সাফল্যের দিনে এই বিষয়ে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ইমনকল্যাণ লাহিড়ি জানান  ''স্বাধীনোত্তর ভারতে দেশ গড়ার দ্বান্দ্বিক যে প্রেক্ষাপট তাতে যাদবপুরের ভূমিকা অনস্বীকার্য। যাদবপুরের শিক্ষক, শিক্ষিকা এবং ছাত্রছাত্রীরা দ্বান্দ্বিক অগ্রগতির মিলিত শক্তি।'' 

    উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়নে স্বচ্ছতা ও দায়িত্ববোধ বাড়ানোর পাশাপাশি, NIRF র‌্যাঙ্কিং ছাত্রছাত্রীদের পছন্দের ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলছে। কারণ এর মাধ্যমে তাঁরা দেশব্যাপী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শক্তি ও দুর্বলতার তুলনামূলক ধারণা পান। এ বছর যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের শীর্ষস্থানে ওঠা রাজ্য সরকারি শিক্ষাব্যবস্থার জন্য এক বড় অর্জন হিসেবে ধরা হচ্ছে।
  • Link to this news (আজকাল)