• দিনমজুরের বাড়িতে বিদ্যুতের বিল ১ কোটি ৬১ লক্ষ টাকা! সর্বস্বান্ত হওয়ার আতঙ্কে এ কী করলেন তিনি?...
    আজকাল | ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: দিন আনি দিন খাই দশা, দু’বেলা দু'মুঠো অন্য সংস্থানের জন্য প্রত্যেক দিন মাথার ঘাম পায়ে ফেলতে হয় তাঁকে। এহেন এক দরিদ্র দিনমজুরের বাড়িতে এমন বিদ্যুতের বিল এলো যা দেখে জ্ঞান হারানোর দশা তাঁর। মাত্র দুই মাসের বিদ্যুৎ বিল ১ কোটি ৬১ লক্ষ টাকা! এমনই ঘটনা ঘটেছে তামিলনাড়ুতে। বিদ্যুৎ বিল দেখে দিশেহারা ওই দিনমজুরের নাম মারিয়াপ্পান।

    তামিলনাড়ুর মুলাইক্কারাইপট্টাই এর কাছে মারুধাকুলাম এর বাসিন্দা ওই দিনমজুরের বাস ছোট্ট একটি বাড়িতে। সেই তাঁরই জুলাই এবং অগাস্ট মাসের বিদ্যুৎ বিল এসেছে ১,৬১,৩১,২৮১টাকা! বিদ্যুৎ দেখা মাত্র আতঙ্কিত হয়ে পড়েন মারিয়াপ্পান। তড়িঘড়ি ছুটে যান তামিলনাড়ু জেনারেশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কর্পোরেশন লিমিটেডের মুলাইক্কারাইপট্টাই শাখায়। সেখানে বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মীরাও বিল দেখে আকাশ থেকে পড়েন। বেশ কিছুক্ষণ যাচাই করার পর বোঝা যায়, কোনও এক কর্মীর অমনোযোগের কারণেই ভুল ছাপানো হয়েছে বিল। খোঁজ নিয়ে দেখা যায় দুই মাসে মাত্র ৪৯৪ টাকার বিদ্যুৎ ব্যবহার করেছেন।

    তামিলনাড়ুর ওই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পক্ষ থেকে প্রকাশিত একটি বিবৃতিতে জানানো হয়েছে এখন আর সরকারি কর্মীরা সরাসরি গিয়ে বিদ্যুতের মিটার পরীক্ষা করেন না। বেসরকারি সংস্থার থেকে আনা আংশিক সময়ের কর্মীরা সেই কাজ করেন। তাঁর ভুলের কারণেই এমন ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় আমরা অত্যন্ত লজ্জিত। ওই সংস্থাকে ইতিমধ্যেই সতর্ক করা হয়েছে, ভবিষ্যতে যেন এমন ঘটনা আর না ঘটে।

    তবে বিদ্যুতের বিল দেখে চমকে যাওয়ার বিষয়টি নতুন নয়। গত মাসেই গুরগাঁওয়ের এক বাসিন্দা এমন এক অভিজ্ঞতার কথা জানান, তা নেটিজেনদের চমকে দিয়েছিল। জয়েন হুড অ্যাপের সহ-প্রতিষ্ঠাতা যশবীর সিং জানান তাঁর বিগত দুই মাসের বিদ্যুৎ বিল এসেছে ৪৫,৪৯১ টাকা!

    যশবীর তাঁর এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্টে বিলের স্ক্রিনশট পোস্ট করে লেখেন, “বিদ্যুৎ বিল মিটিয়ে দিলাম, এবার থেকে মোমবাতি জ্বালাব ভাবছি।” এই রসিক মন্তব্যের সঙ্গে যুক্ত ছবিটি মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে যায়। পোস্টটি ৭,৫০০-এরও বেশি লাইক পেয়েছে এক্স-এ। পোস্টের নিচে অসংখ্য মন্তব্যও করেছেন বহু মানুষ।

    পোস্টটি ঘিরে ইন্টারনেটে নানা মতামত উঠে আসে। কেউ কেউ যশবীরের বাড়ির আকার, এয়ার কন্ডিশনারের সংখ্যা, ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতির ব্যবহার ইত্যাদি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। অনেকে মনে করছেন, বেশি ইউনিট খরচ মানেই বেশি বিল, এবং এ নিয়ে ‘সোশ্যাল মিডিয়ায় সাড়া জাগানো’র পরিবর্তে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের দিকে মনোযোগ দেওয়া উচিত ছিল তাঁর।

    দুই ক্ষেত্রে সমাজের সম্পূর্ণ দুই মেরুর মানুষ সমস্যায় পড়েছেন। কিন্তু বিদ্যুতের বিল নিয়ে ঝামেলার শেষ নেই কোনও দিকেই। বিশেষ করে গরীব মানুষের ক্ষেত্রে সমস্যা বহুগুণ বেশি। তামিলনাড়ুর ওই দিনমজুর দৈনিক কাজের হিসাবে মজুরি পান। বিদ্যুতের বিল নিয়ে দৌড়ঝাঁপ করতে গিয়ে সারাদিনে আর কাজটাই করা হয়নি তার। বিদ্যুতের বিল দিতে গিয়ে হারাতে হল সেই দিনের রুজিরুটির সংস্থান।
  • Link to this news (আজকাল)