কেন্দ্রীয় বিজ্ঞপ্তি নিয়ে প্রশ্ন, ২০২৪-এর মধ্যে যাঁরা এসেছেন তাঁদের কী হবে জিজ্ঞাসা মুখ্যমন্ত্রীর...
আজকাল | ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: ১ সেপ্টেম্বর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে জানিয়েছে, আফগানিস্তান, বাংলাদেশ এবং পাকিস্তান থেকে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সদস্যরা (হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পার্সি এবং খ্রিস্টান) যারা ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ধর্মীয় নিপীড়ন থেকে বাঁচতে ভারতে এসেছিলেন। তাদের পাসপোর্ট বা অন্যান্য ভ্রমণ নথি ছাড়াই দেশে থাকতে দেওয়া হবে। তারা সবাই ভারতের নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন। এই বিজ্ঞপ্তি নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। বিধানসভার বিশেষ অধিবেশন বক্তব্য রাখার সময় তাঁর প্রশ্ন, ‘২০২৪ সালের মধ্যে যাঁরা এ দেশে এসেছেন, তাঁদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে তো?’ তাঁর আশ্বাস, কারও নাগরিকত্ব কেড়ে নিতে দেবেন না তিনি।
বৃহস্পতিবার বিধানসভার বিশেষ অধিবেশন বাংলা ভাষার অপমান এবং ভিনরাজ্য বাংলভাষীদের হেনস্থা নিয়ে আলোচনা ছিল। তখনই মমতা কেন্দ্রকে প্রশ্ন করেন, “২০২৪ সাল পর্যন্ত যাঁরা এসেছেন, তাঁদের রেশন, নাগরিকত্ব, সাংবিধানিক অধিকার দেবেন তো?’’ তার পরেই তিনি আশ্বাস দিয়ে বলেন, ‘‘আমরা কারও নাগরিক অধিকার কাড়তে দেব না।’’
গত বছর কার্যকর হওয়া নাগরিকত্ব সংশোধন আইন (সিএএ)-এ বলা হয়েছিল নির্যাতিত সংখ্যালঘুদের সদস্যরা যারা ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৪ বা তার আগে ভারতে এসেছিলেন, তাদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ)-এ নাগরিকত্বের জন্য আবেদনের সময়সীমা আরও ১০ বছর বাড়িয়ে দিয়েছে কেন্দ্র। ২০২৫ সালে নির্বাচন রয়েছে বাংলা এবং অসমে। তার আগেই নাগরিকত্ব সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। বিজ্ঞপ্তি প্রকশের সময় নিয়েও বিজেপিকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি মমতা। তাঁর কটাক্ষ, “ভোটের আগেই কেন্দ্রের বিজেপি সরকার ‘ক্যা ক্যা’ (সিএএ বা সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন) শুরু করে।”
দিনহাটার উত্তমকুমার ব্রজবাসী, মাথাভাঙ্গা-২ ব্লকের নিশিকান্ত দাস ছাড়াও ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী জেলার একাধিক বাসিন্দা ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালের এনআরসি নোটিশ পেয়েছেন। সকলকেই নিজেদের ভারতীয় প্রমাণ করার আদেশ দেওয়া হয়েছে। বৈধ ভোটার কার্ড, আধার কার্ড এবং রেশন কার্ড থাকা সত্ত্বেও কেন এমন নোটিশ, প্রশ্ন সকলের। এই প্রসঙ্গ তুলে মমতা বলেন, “যাঁরা ক্যা ক্যা করেন তাঁরা নাগরিকত্ব দেয়নি। কোচবিহারের রাজবংশী ভাই কেন হেনস্থার শিকার হলেন? কেন মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষের উপর অত্যাচার হল?”
বৃহস্পতিবার আলোচনার শুরুতেই দফায় দফায় উত্তাল হল বিধানসভার অন্দর। তুলকালাম, ধুন্ধুমার পরিস্থিতিতে ওয়েলে নেমে সকলকে জায়গায় বসতে বলেন মমতা। তীব্র কটাক্ষ করেন রাজ্যের বিরোধী রাজনৈতিক দল, বিজেপিকে। বিজেপিকে 'চোর' কটাক্ষ করে, বাংলা বিরোধী বিজেপি হঠানোর ডাক দেন বিধানসভার অন্দর থেকেই।
বিধানসভায় এদিন মমতা বিজেপি বিধায়কদের ধিক্কার জানান, বাংলা বিরোধীতার জন্য। তিনি বলেন, “আমি বাংলা ভাষায় কথা বলি, মানুষ তা জানতে পারলে এদের মুখোশ খুলে যাবে। এরা দুর্নীতিবাজ, এরা গোদি চোর, ভোট চোর এবং সবচেয়ে বড় ডাকাতের দল, দুর্নীতিবাজের দল। বাঙালির উপর অত্যাচার করার দল। বিজেপি আজকে দেশের লজ্জা। আমি তীব্র ধীক্কার জানাই বাংলা ভাষার উপর অত্যাচার করার জন্য। এমন একদিন আসবে বাংলার মানুষ একজন বিজেপিকেও এখানে দেখতে চাইবেন না। বাংলার উপর অত্যাচার করে, সবাই হারবে।”