• শহরতলি জুড়ে ভুয়ো পুলিস, প্রেস আর ডাক্তার স্টিকার সাঁটানো গাড়ির ছড়াছড়ি, মডিফায়েড সাইলেন্সর নিয়েও পদক্ষেপ সোদপুর ট্রাফিক গার্ডের
    বর্তমান | ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বরানগর: সিগন্যালে দাঁড়িয়ে রয়েছে সব গাড়ি। অথচ, পাশ দিয়ে হুশ করে বেরিয়ে যাচ্ছে পুলিস স্টিকার লাগানো চার চাকা। আবার রাস্তার উপর ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে রয়েছে পুলিস ও প্রেস স্টিকার সাঁটানো গাড়ি। কিন্তু ওই গাড়ির সব ক’টি আদৌ কি পুলিস ও প্রেসের? সোদপুর ট্রাফিক গার্ড অভিযানে নামতেই ধরা পড়ছে একের পর এক ভুয়ো স্টিকার লাগানো গাড়ি। শুধু তাই নয়, বিকট আওয়াজ তুলে রাস্তা ও পাড়া কাঁপানো বাইকারদের বিরুদ্ধেও কড়া পদক্ষেপ করা হচ্ছে। বুধবার এক বাইকচালককে আটক করে উৎপাদক কোম্পানির নিজস্ব সাইলেন্সরের জায়গায় তাঁর বাইকে থাকা বিকট আওয়াজের মডিফায়েড সাইলেন্সর খুলতে বাধ্য করা হয়। মিস্ত্রি ডাকিয়ে ওই সাইলেন্সার খোলার পাশাপাশি আইন অনুযায়ী ফাইনও করা হয়। 

    এছাড়া চলতি মাসেই পুলিস স্টিকার সাঁটানো একটি স্করপিও গাড়ি সোদপুর চারমাথা মোড়ে সিগন্যাল ভেঙে বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। সামনে দাঁড়ানো ট্রাফিক পুলিস চালকের কাছে জানতে চান, এটা কোন থানার গাড়ি। কিন্তু কিছু না বলেই গাড়িটি বেরিয়ে যাচ্ছিল। ফলে ওই ট্রাফিক পুলিসকর্মীরা গাড়িটিকে আটকান। তখন গাড়িচালক জানান, গাড়িটি কোনও থানার নয়, ব্যক্তিগত। তাহলে পুলিস স্টিকার কেন? এই প্রশ্নে চালক জানান, গত বছর লোকসভা ভোটের সময় কমিশন গাড়িটি নিয়েছিল। তখন পুলিসের কোনও আধিকারিক নির্বাচনী কাজে গাড়িতে চড়তেন। সেই থেকেই রয়েছে পুলিস স্টিকার।

    খোলেননি কেন সেই স্টিকার? এই প্রশ্নে চালক বলেন, এই স্টিকার থাকলে রাস্তায় ঝামেলা পোহাতে হয় না। শেষে পুলিসকর্মীরা ওই ব্যক্তিকে স্টিকার খুলিয়ে সতর্ক করে গাড়িটি ছেড়ে দেন। একইভাবে চলতি মাসে একাধিক ভুয়ো স্টিকার লাগানো প্রেস, ডাক্তারের গাড়ি ধরা পড়েছে। তাঁদের প্রকাশ্যে ভুল স্বীকার করানোর পাশাপাশি স্টিকার খুলতে বাধ্য করা হয়। পুলিস জানিয়েছে, প্রথমবার অপরাধের জন্য সতর্ক করে ছাড়া হয়েছে। ওইসব গাড়ির নম্বর ও চালকের ফোন নম্বর নথিবদ্ধ করে রাখা হয়েছে। এইসব ভুয়ো গাড়ির পাশাপাশি একশ্রেণির বাইক আরোহীদের দাপটে নাভিশ্বাস উঠছে শহরবাসীর। মডিফায়েড সাইলেন্সার লাগিয়ে বাইকগুলি বিকট আওয়াজ করে চলছে। তাতে কানে তালা লাগার জোগাড়। এইসব বাইকাররা মাঝরাতে বিটি রোড সহ শহরের বিভিন্ন রাস্তা ও পাড়ায় দাপট দেখাচ্ছে। তীব্র শব্দের দাপটে মাঝরাতে বহু মানুষের ঘুম ভাঙছে। মঙ্গলবার সকালে সোদপুর ট্রাফিক মোড়ে ঘোলার এক যুবককে হাতেনাতে পাকড়াও করা হয়। সোদপুর ট্রাফিক গার্ডের ইনসপেক্টর কুমারেশ ঘোষের নেতৃত্বে ওই যুবককে পাকড়াও করে গ্যারাজ মিস্ত্রি ডাকাতে বাধ্য করা হয়। রাস্তার উপর দাঁড়িয়েই ওই সাইলেন্সার খুলিয়ে বাইক কোম্পানির দেওয়া আসল সাইলেন্সার লাগানো হয়। পাশাপাশি মোটর ভেহিকেলস আইন অনুযায়ী পাঁচ হাজার টাকা ফাইনও করা হয়। ট্রাফিক পুলিস জানিয়েছে, এই অভিযান চলবে।
  • Link to this news (বর্তমান)