বিজেপি কণ্ঠরোধ করতে চাইছে, কিন্তু বাংলার জন্য আমি বলবই, বিধানসভায় হুঙ্কার মুখ্যমন্ত্রীর
বর্তমান | ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: নজিরবিহীন ঘটনা! আজ, বৃহস্পতিবার বিধানসভায় ভিন রাজ্যে বাংলা ভাষার অপমান ও বাঙালিদের হেনস্তার বিরুদ্ধে পেশ হওয়া প্রস্তাবে বক্তব্য রাখার কথা ছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সেইমতো এদিন বিধানসভায় নির্ধারিত সময়ে পৌঁছে যান মুখ্যমন্ত্রী। বক্তব্য রাখতে উঠতেই শুরু হয় হট্টগোল। মুখ্যমন্ত্রীকে বক্তব্য রাখতে বারবার বাধা দেন বিজেপি বিধায়করা। তখন মুখ্যমন্ত্রী ঠিক করেন, প্রস্তাবের উপর বিজেপি বিধায়করা বক্তব্য রাখুক। যদিও তাতে কর্ণপাত না করেই হট্টগোল করতেই থাকেন বিজেপি বিধায়করা। তখনই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলা ভাষা নিয়ে এরা আলোচনা চায় না। আমার কণ্ঠরোধ করতে চাইছেন। কিন্তু আমি বাংলার জন্য বলবই।’বিধানসভার কক্ষে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে শুরু করে। বিজেপি বিধায়করা তুমুল হট্টগোল করতে থাকেন। চেয়ার ছেড়ে বারবার উঠে পরিস্থিতি সামলাতে একাধিক নির্দেশ দেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু তাতে লাভ হয়নি। সভার কার্যবিবরণী ছিঁড়ে ছুড়তে থাকেন বিজেপি বিধায়করা। বাধ্য হয়েই বিজেপির পরিষদীয় দলের মুখ্য সচেতক শঙ্কর ঘোষকে সাসপেন্ড করেন স্পিকার। তাঁকে মার্শাল দিয়ে কক্ষের বাইরে বের করে দেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়। তখনই গণ্ডগোল চরমে পৌঁছয়। শঙ্কর ঘোষ ও বিজেপি বিধায়কদের সঙ্গে মার্শালদের ধস্তাধস্তি হয়। যাতে আঘাত লাগে শঙ্করের। তারপরেও বিধানসভার কক্ষে মুখ্যমন্ত্রীকে বাংলা ভাষা সংক্রান্ত প্রস্তাবের উপর বক্তব্য রাখতে বাধা দেন বিজেপি বিধায়করা। একে একে অগ্নিমিত্রা পল, মিহির গোস্বামীকে সাসপেন্ড করেন স্পিকার। বিজেপি বিধায়ক অশোক দিন্দা ও বঙ্কিম ঘোষকে কক্ষ থেকে বহিষ্কারও করা হয়। তারপরেই বিজেপি বিধায়কদের স্লোগানের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মুখ্যমন্ত্রী।তিনি বলেন, ‘আজকের দিনটি বিধানসভার ইতিহাসে কলঙ্কিত অধ্যায়। বিজেপি বিশ্বাসঘাতক, সবচেয়ে বড় ডাকাত দেশকে বিক্রি করে দিচ্ছে। এরা বাংলা-বিরোধী, দুর্নীতিবাজ। বিজেপি গদিচোর-ভোটচোরের দল। অস্ত্র-টাকা-কমিশন দিয়ে বিজেপি ভোটে জিতে আসে। স্বাধীনতা আন্দোলনে বিজেপির কোনও অবদান নেই। আমেরিকা-চীনের পায়ে পড়ছে বিজেপি সরকার। ভেদাভেদের রাজনীতি করছে বিজেপি। দেশকে বিক্রি করে দিচ্ছে বিজেপি। বাংলা ভাষার উপর সন্ত্রাস মেনে নেব না।’ শেষে বাংলা ভাষা সংক্রান্ত বিধানসভায় আনা রাজ্য সরকারের প্রস্তাব ভোটাভুটির মাধ্যমে পাশ হয়ে যায়।