• পুজো প্যান্ডেলে আমার গান শুনে কেঁদে ফেলেছিলাম - জিৎ গঙ্গোপাধ্যায়
    বর্তমান | ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • দুর্গাপুজো এলেই স্মৃতির সরণি বেয়ে পৌঁছে যাই শৈশবের দিনগুলিতে। আমি ছোটবেলায় উত্তর কলকাতায় বড় হয়েছি। বন্ধুদের সঙ্গে দূরে গিয়ে ঠাকুর দেখার ছাড়পত্র ছিল না। কাছেপিঠে টুকটাক ঠাকুর দেখার অনুমতি মিলত। তখন প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে গিয়ে আর ডি বর্মন, আশা ভোঁসলে, কিশোর কুমার, আরতি মুখোপাধ্যায়ের গান শুনতাম। আমার মনে আছে কোনও প্যান্ডেলে গিয়ে একবার গান শুনতে শুরু করলে আমি পরপর সেই ক্যাসেটের সবকটা গান শুনে তারপর সেই প্যান্ডেল থেকে বাড়ি ফিরতাম। সে কারণে বন্ধুদের সঙ্গে ঝগড়াও শুরু হয়ে যেত! ওরা আমাকে ফেলে রেখে অন্য ঠাকুর দেখতে চলে যেত। আমি ওই প্যান্ডেলেই বসে থাকতাম। তারপর বাড়ি ফিরে মাকে বলতাম আমি একটি মাত্র ঠাকুর দেখেছি। এর বেশ কয়েক বছর পর ২০০১-২০০২ সালে যখন পুজোতে কলকাতায় আসতাম তখন প্যান্ডেলে খুব হিন্দি গান বাজত। আমার খুব কষ্ট হতো। মনে হতো পুজোতে প্যান্ডেলে বাংলা গান বাজবে না! আমার মা, বাবা, স্ত্রী চন্দ্রাণী সবাই আমাকে বাংলা পুজোর গান তৈরি করতে বলত। অবশেষে তৈরি হল ‘ঢাকের তালে’। শ্রেয়া ঘোষালের গাওয়া ‘শাঁখ বাজা, কাঁসর বাজা’ও খুব হিট হয়েছিল। এই দু’টি গান প্রায় প্রতিটা প্যান্ডেলে একবার হলেও বাজবেই। মা দুর্গার আশীর্বাদেই তা সম্ভব হয়েছে। কোথাও যেন এক অদ্ভুত সমাপতন। দুর্গা পুজোর সঙ্গে আমার সৃষ্টি জুড়ে গিয়েছে। প্রথম যেদিন প্যান্ডেলে গিয়ে আমার তৈরি গান শুনেছিলাম, সেদিন কেঁদে ফেলেছিলাম। বেশ কয়েক বছর পর এবার আবার আমার পুজোর গান আসছে। এই বছর পুজোতে আমার পাঁচটা গান মুক্তি পাচ্ছে। তার মধ্যে অন্যতম মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা গান। এখন ব্যস্ততা বেড়েছে তাই সব সময় পুজোতে কলকাতায় থাকা হয় না। কিন্তু, যেখানেই থাকি পুজোর সময় অষ্টমীর অঞ্জলি এবং ভোগ খেতেই হবে। মায়ের কাছে থাকলে মায়ের হাতের রান্না খাবই। আর বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিয়েই কেটে যায় জমজমাট দুর্গাপুজো।
  • Link to this news (বর্তমান)