• ঘুমের মধ্যেই ভেঙে পড়ল দেওয়াল, দুই মেয়ের সঙ্গে মৃত্যু হল মায়ের...
    আজকাল | ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: বঙ্গোপসাগরের উপর তৈরি হওয়া নিম্নচাপের কারণে দক্ষিণবঙ্গে চলছে প্রায় লাগাতার বৃষ্টি। বৃষ্টির কারণে ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়ছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার উপকূল তীরবর্তী এলাকার মাটির নদী বাঁধ থেকে শুরু করে জেলার মাটির বাড়িগুলি। প্রতিদিনের মতোই রাতে খাওয়া দাওয়া করে ঘুমিয়ে ছিলেন মা ও তাঁর দুই মেয়ে। হঠাৎ ভোররাতে মাটির দেওয়াল চাপা পড়ে একসঙ্গে মৃত্যু হল তাঁদের। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গোটা এলাকায়। নেমে এসেছে শোকের ছায়া। ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ 24 পরগনার মন্দির বাজার থানার অন্তর্গত কামারপাড়া এলাকায়। 

    স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মৃতরা বৃহস্পতি কর্মকার (৪৩) মেয়ে শীলা কর্মকার (১৫) এবং প্রিয়াঙ্কা কর্মকার (১০)। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায় বৃহস্পতিবার রাতে প্রতিদিনের মতনই খাওয়া-দাওয়া করে মা ও দুই মেয়ে মাটির ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন। হঠাৎ ভোররাতে বিকট শব্দ পেয়ে এলাকার বাসিন্দারা চমকে ওঠেন। তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেখেন মাটির দেওয়ালের নিচে চাপা পড়ে রয়েছেন বৃহস্পতি কর্মকার ও তাঁর দুই মেয়ে। উদ্ধারের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েন তাঁরা। দ্রুত স্থানীয়রা মাটির দেওয়াল সরিয়ে  তাঁদের চিকিৎসা করানোর জন্য নাইয়ারহাট হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্মরত চিকিৎসকরা তিনজনকেই মৃত বলে ঘোষণা করেন।

    এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গোটা এলাকায়। পরিবারে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে মন্দির বাজার থানার পুলিশ। মৃতদেহ ময়না তদন্ত করার জন্য নিয়ে আসা হয়েছে ডায়মন্ড হারবার পুলিশ মর্গে। এ বিষয়ে স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, গতকাল রাতে প্রতিদিনের মতোই কামারপাড়া এলাকায় বৃহস্পতি তাঁর দুই নাবালিকা মেয়েকে নিয়ে মাটির বাড়িতে ঘুমাচ্ছিলেন। ভোররাতে হঠাৎই বিকট শব্দ শুনতে পাই আমরা। আমরা গিয়ে দেখি মাটির দেয়াল চাপা পড়ে রয়েছে তিনজন। এরপর তড়িঘড়ি আমরা মাটির দেয়ালের ধ্বংস স্তূপ থেকে তিনজনকেই উদ্ধার করি এবং চিকিৎসা করানোর জন্য নাইয়ারহাট হাসপাতালে নিয়ে যাই।

    কিন্তু চিকিৎসকরা তাঁদের মৃত বলে ঘোষণা করেন। এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া। ঘটনা জানার পর শুক্রবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করতে যান মন্দিরবাজার বিধানসভার বিধায়ক জয়দেব হালদার। পরিদর্শন করে পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দেন বিধায়ক। জয়দেব হালদারের অভিযোগ, কেন্দ্রীয় সরকার আবাস যোজনার টাকা আটকে রেখেছে। ওই মহিলা আবাস যোজনা ঘর পেয়েছিলেন। ইতিমধ্যে প্রথম কিস্তির টাকা ওঁর অ্যাকাউন্টে পাঠানোও হয়েছে। বাড়ি তৈরির কাজও শুরু করা হয়েছে। কিন্তু শেষপর্যন্ত এরকম একটা মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে গেল। পরিবারের পাশে আমরা সবসময় আছি।

    প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগে শিলিগুড়ির অদূরে রাজগঞ্জের সাহুডাঙ্গি এলাকার পাঘালু পাড়ায় প্রবল বৃষ্টিতে ঘরের পাঁচিল ভেঙে প্রাণ হারায় দুই শিশু। ঘটনায় গোটা এলাকায় নেমে আসে শোকের ছায়া ও চাঞ্চল্য। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রাতে ঘরের ভেতর ঘুমিয়ে ছিল দুই শিশু। সন্ধ্যা থেকেই শুরু হয়েছিল ভারী বৃষ্টি। বৃষ্টির মধ্যে হঠাৎই ওই দেওয়াল ভেঙে পড়ে শিশু দুজনের উপর। প্রচণ্ড আঘাতে তারা গুরুতর জখম হয়। ঘটনার পরেই পরিবারের সদস্যরা তড়িঘড়ি শিশুদের উদ্ধার করে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা পরীক্ষা করে দু'জনকেই মৃত ঘোষণা করেন। মৃত দুই শিশুর নাম মধুমিতা মোদক(৩) ও দেবায়ন মোদক (দেড় বছর)। খবর শুনে কান্নায় ভেঙে পড়েন পরিবারের সদস্যরা। 
  • Link to this news (আজকাল)