• কীভাবে লাইসেন্সড দোকান থেকে বেআইনি কারবারিদের অস্ত্র পাচার? ব্যারাকপুরকাণ্ডে চাঞ্চল্যকর মোডাস...
    ২৪ ঘন্টা | ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • পিয়ালি মিত্র: কীভাবে লাইসেন্সড দোকান থেকে বেআইনি কারবারিদের অস্ত্র পাচার? তদন্তে উঠে আসছে একাধিক মোডাস অপারেন্ডি। ব‍্যারাকপুরের বিপুল অস্ত্র উদ্ধার যোগে গ্রেফতার হয়েছে বিবাদি বাগের শতাব্দী প্রাচীন অস্ত্র বিপণির তিন মালিক। বাজেয়াপ্ত হয়েছে ৪১টি বন্দুক । রহড়ার ফ্ল‍্যাট থেকে ধৃত বেআইনি অস্ত্র কারবারি মধুসুদন মুখার্জি। এই বিপণির থেকে বেআইনিভাবে অস্ত্র ও কার্তুজ কিনতো বলে জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা।

    তদন্ত উঠে আসছে একাধিক মোডাস…

    মোডাস ১...

    লাইসেন্স রয়েছে এমন বহু ব্যক্তি ডিলারের কাছে অস্ত্র জমা রাখেন। বহু বছর ধরে সেই অস্ত্র অনেক ক্ষেত্রে দোকানেই পড়ে থাকে । অনেক সময় সেগুলি নিতেও আসে না অস্ত্রের মালিক । এমন অস্ত্র বেআইনি অস্ত্র কারবারিদের কাছে বিক্রি করে দিত এই দোকানের মালিকরা। পরে সেই অস্ত্রগুলি যার মধ্যে একনালা , দোনালা বন্দুক রয়েছে, সেগুলি চড়া দামে কালো বাজারে বিক্রি করেন মধুসুদনরা । মূলত বিভিন্ন ভেরির মালিকরা কেনেন এই অস্ত্র।

    মোডাস ২…

    শুধু অস্ত্র নয়। গুলিও বেআইনিভাবে বিক্রি করা হতো। লাইসেন্স রয়েছে এমন ব্যক্তির বছরে ৫০টি গুলি কিনতে পারেন। কিন্তু অনেকেই বছর ৫/৬টি গুলি কেনেন। এই বিপণির মালিকরা অনেক ক্ষেত্রে বিনা পয়সায় তাদের ৫/৬ রাউন্ড গুলি দিয়ে দিত। পরিবর্তে তারা ৫০টি গুলি কিনেছে বলে হিসেবে দেখানো হত। সেই অতিরিক্ত গুলি বিক্রি করে দেওয়া হয় বেআইন অস্ত্র ব্যবসায়ীদেরকে।

    মোডাস ৩...

    গুলি টেস্ট দেখানো হত খাতায় কলমে। আদতে সেগুলিও বিক্রি করা হত বেআইনি ভাবে। টেস্টের প্রমাণ হিসাবে খালি গুলির খোল দেখাতে হয়। মধুসুদন সেই গুলির খোলও সাপ্লাই দিতেন। পরিবর্তে তাজা কার্তুজ বেআইনিভাবে কিনে নিতেন।

    চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে জীবনতলা থেকে উদ্ধার হয় বিপুল অস্ত্র। সেই মামলায় আগে রাজ‍্য এসটিএফের হাতে গ্রেফতার হয়েছিল এই দোকানের ২ জন কর্মী । ওই মামলায় মোট ৭ জন গ্রেফতার হয় বেঙ্গল এসটিএফের হাতে। সেই মামলায় দোকান মালিক তিনজন আদালত থেকে আগাম জামিন নিয়েছিলেন। গতমাসে রহরার ফ্ল‍্যাট থেকে গ্রেফতার হন মধুসূদন মুখার্জি । উদ্ধার হয় ১০০০ রাউন্ড গুলি, ১৫টি অস্ত্র। সেই মামলাতে ফের ওই দোকানের যোগ পায় এসটিএফ। ইতিমধ্যেই দোকানটি সিল করে দিয়েছে এসটিএফ।

    গোটা ঘটনায় ফের প্রশ্ন উঠছে কলকাতা পুলিসের আর্মড সেকশনের ভূমিকা নিয়ে। কারণ যে ৪১টি বন্দুক বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে, তার কোনও নথি পাওয়া যায়নি। প্রতিমাসে দোকানে স্টক মিলেয়ে দেখার কথা আর্মড সেকশনের। তাদের নজরদারি থাকলে কীভাবে বেহিসাবি এই অস্ত্র সম্পর্কে কোনও খোঁজ পেল না কলকাতা পুলিস? উঠছে প্রশ্ন।

     

  • Link to this news (২৪ ঘন্টা)