আজকাল ওয়েবডেস্ক: খাবার ডেলিভারি ও কুইক কমার্স পরিষেবায় নতুন করে খরচের বোঝা চাপাল কেন্দ্র। কেন্দ্রীয় জিএসটি আইন (Section 9(5)) অনুযায়ী এবার থেকে ডেলিভারি চার্জের উপরও ১৮% জিএসটি দিতে হবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে জিএসটি কাউন্সিল। বুধবার বৈঠকের পর এই সিদ্ধান্তের কথা জানান অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। যদিও প্রত্যেক অর্ডারে জিএসটির প্রভাব সামান্য হলেও বড় সংখ্যায় তা যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে। অনুমান অনুযায়ী, ফুড ডেলিভারি অ্যাপ জোম্যাটোর ক্ষেত্রে প্রতি অর্ডারে প্রায় ২ টাকা এবং সুইগির ক্ষেত্রে ২.৬ টাকা প্রভাব পড়বে। আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ ব্যাঙ্ক মরগ্যান স্ট্যানলি জানিয়েছে, ‘জোম্যাটোর ক্ষেত্রে গ্রাহকরা ডেলিভারি ফি দেন গড়ে ১১-১২ টাকা। তার উপরে জিএসটি ধরলে প্রায় ২ টাকার বোঝা বাড়বে।’ সুইগির ক্ষেত্রে গড় ডেলিভারি ফি প্রায় ১৪.৫ টাকা, ফলে প্রতি অর্ডারে বাড়তি খরচ দাঁড়াচ্ছে ২.৬ টাকা।
অন্যদিকে, সুইগি ইন্সটামার্টে গড় ডেলিভারি ফি মাত্র ৪ টাকা হওয়ায় বাড়তি খরচ তুলনামূলকভাবে কম। হিসাব করলে দেখা যাচ্ছে, প্রতি অর্ডারে প্রায় ০.৮ টাকা। তবে ব্লিঙ্কিটের ক্ষেত্রে তেমন প্রভাব পড়বে না বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ তাদের ডেলিভারি চার্জ আগে থেকেই রাজস্বের আওতায় ছিল। ডেলিভারি চার্জের ওপর জিএসটি ধরা হত আগে থেকেই। ফলে, আলাদা করে কোনও পরিবর্তন হচ্ছে না। সরকারি আধিকারিকদের দাবি, এতদিন পর্যন্ত সংস্থাগুলি ডেলিভারি ফি-কে ‘পাশ-থ্রু এক্সপেন্স’ হিসেবে দেখিয়ে জিএসটি এড়িয়ে যেত। নতুন নিয়মে এই ফাঁকফোকর বন্ধ করা হয়েছে। আগামী ২২ সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকর হবে এই সিদ্ধান্ত। সময়ের দিক থেকেও বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ।
উৎসবের মরসুমকে সামনে রেখে ইতিমধ্যেই লাভ বাড়াতে জোম্যাটো ও সুইগি একাধিক অতিরিক্ত চার্জ চালু করেছে। যেমন প্ল্যাটফর্ম ফি, সার্জ প্রাইসিং, বৃষ্টির জন্য অতিরিক্ত ফি, দূরত্ব অনুযায়ী অতিরিক্ত ডেলিভারি ফি। অনেক শহরে প্ল্যাটফর্ম ফিও বেড়েছে। বর্তমানে জোম্যাটো প্রতি অর্ডারে ১২ টাকা এবং সুইগি ১৫ টাকা ফি নিচ্ছে। তবে, ফুড ডেলিভারি অ্যাপগুলি প্রতি অর্ডারে অল্প বাড়তি চার্জ দিলেও তার প্রভাব বিপুল। প্রতিদিন গড়ে ৫০ লক্ষ খাবার অর্ডার সামলাচ্ছে জোম্যাটো ও সুইগি মিলিয়ে। প্রতি অর্ডারে ২ থেকে ৩ টাকা অতিরিক্ত খরচ মানে সংস্থাগুলির আয় কোটি টাকায় গড়াবে। প্রসঙ্গত, নয়া কর ব্যবস্থায় কোপ পড়েছে সিনেমার টিকিটের ওপরেও।
১০০ টাকা পর্যন্ত দামের টিকিটের উপর এখন মাত্র ৫% জিএসটি প্রযোজ্য হবে, যা আগের ছিল ১২ শতাংশ। অর্থাৎ টিকিটের দামের উপর এবার থেকে কমে যাচ্ছে আরোপিত করের হার। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, জিএসটি ধারা কমে যাওয়ায়, একক-স্ক্রিন থিয়েটার এবং ছোট শহরগুলির বেশ উপকার হবে। কারণ সেইসব জায়গায় এখনও সিনেমা হলের টিকিটের দাম বহুক্ষেত্রেই ১০০ টাকার কম। লবণযুক্ত বা মশলাদার পপকর্নের উপর এবার থেকে আরোপিত হবে ৫ শতাংশ জিএসটি। ক্যারামেল পপকর্ন, তার উপর আবার ১৮ শতাংশ জিএসটি ধার্য হবে। একইসঙ্গে উল্লেখ্য, সিনেমা হলে প্রাপ্ত বায়ুযুক্ত এবং ক্যাফিনেটেড পানীয় (কোক, পেপসি)-র উপর নয়া কর ব্যবস্থায় ২৮% এর পরিবর্তে ৪০ শতাংশ কর ধার্য করা হচ্ছে। ধরা যাক, এখন যদি কোকের দাম হয় ৩৫০টাকা, তাহলে নয়া কর ব্যবস্থা চালু হলে তার দাম ৪৪৮ টাকা হতে পারে।