সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘রাশিয়ার থেকে তেল কিনে সেই তেলের মুনাফা লুটছে ভারতের ব্রাহ্মণরা।’ সম্প্রতি ভারতের বিরুদ্ধে এমনই বর্ণবিদ্বেষী মন্তব্য করেছিলেন ট্রাম্পের বাণিজ্য উপদেষ্টা পিটার নাভারো। তাঁর সেই অভিযোগ উড়িয়ে শুক্রবার কড়া বিবৃতি দিল বিদেশমন্ত্রক। স্পষ্ট ভাষায় জানানো হয়েছে, “নাভারোর মন্তব্য শুধু মিথ্যা নয়, বিভ্রান্তিকর।” শুধু তাই নয়, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ইস্যুতেও ভারতের নীতি এদিন স্পষ্ট করে দেন বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল।
মার্কিন কুকথার জবাবে এদিন সাংবাদিক বৈঠক করে বিদেশমন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, ভারত ও আমেরিকার মধ্যে আন্তর্জাতিক কৌশলগত অংশীদারিত্ব রয়েছে। যা অভিন্ন স্বার্থ, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ এবং জনগণের সঙ্গে সুসম্পর্কের ভিতের উপর দাঁড়িয়ে। দুই দেশের সম্পর্ক বহু পরিবর্তন ও চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে গিয়েছে ঠিকই, তবে তা আজও অটুট। ভারত চায় পারস্পরিক শ্রদ্ধা এবং অভিন্ন স্বার্থের ভিত্তিতে এই সম্পর্ক এগিয়ে চলুক। একইসঙ্গে বলেন, “মার্কিন আধিকারিকের তরফে যে মন্তব্য করা হয়েছে তা শুধু মিথ্যা নয়, বিভ্রান্তিকর। এই ধরনের বিভ্রান্তিকর মন্তব্যে ভারত-আমেরিকার সম্পর্ককে প্রভাবিত করবে না।”
উল্লেখ্য, রাশিয়ার তেল কেনার জন্য সম্প্রতি ভারতের তীব্র সমালোচনায় সরব হয়েছিলেন ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সহযোগী তথা মার্কিন বাণিজ্য উপদেষ্টা নাভারো। তিনি বলেন, “মোদি একজন মহান নেতা। কিন্তু আমি বুঝতে পারছি না কেন তিনি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিঙের সঙ্গে একই শয্যায় যাচ্ছেন। বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশের নেতার এটা করা উচিত নয়। আমি শুধু ভারতীয় জনগণকে বলব, দয়া করে এখানে কী ঘটছে সেটা বুঝুন। ওখানে (ভারতে) আমজনতার ক্ষতি করে ব্রাহ্মণেরা মুনাফা করছে। আমাদের এটা বন্ধ করা দরকার।” তিনি অভিযোগ করেন, ভারত ইউরোপ, আফ্রিকা এবং এশিয়ার বাজারে রাশিয়ার তেল বিক্রি করে বিপুল লাভ করছে। আর এই তেল কেনার কারণে লাভবান হচ্ছে ভারতের ব্রাহ্মণরা। নাভারোর এই মন্তব্য স্বাভাবিকভাবেই বিতর্ক তৈরি করে। এবার সেই মন্তব্যের জবাব দিল ভারত।
এর পাশাপাশি রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধ প্রসঙ্গে ভারতের নীতি আরও একবার স্পষ্ট করে জয়সওয়াল বলেন, এই যুদ্ধ থামাতে যে কোনও শান্তি প্রক্রিয়ায় ভারতের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। ভারত চায় দুই পক্ষই গঠনমূলক পদক্ষেপের পথে এগিয়ে যাক। ভারতের অবস্থান আজও একইভাবে স্পষ্ট। এই যুদ্ধ দ্রুত শেষ হোক এবং ইউক্রেনে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা হোক। এছাড়া সম্প্রতি সূত্র মারফৎ জানা যাচ্ছিল ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক সংঘাতের জেরে হয়ত কোয়াড বৈঠকে যোগ দেবেন না ডোনাল্ড ট্রাম্প। সে প্রসঙ্গে ভারত কিছু না জানালেও এদিন জয়সওয়াল বলেন, কোয়াড ভারত, আমেরিকা, জাপান এবং অস্ট্রেলিয়ার অভিন্ন স্বার্থ আলোচনার একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যার্টফর্ম। সদস্য দেশগুলির সঙ্গে কূটনৈতিক পরামর্শের পরে এই সম্মেলনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।