স্কুল সার্ভিস কমিশনের (এসএসসি) এসএলএসটি পরীক্ষার আগেই প্রতারিত হচ্ছেন! এমন প্রশ্ন তুলে সমাজমাধ্যমে প্রচার করে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হলেন এক গৃহশিক্ষক। অভিযুক্তের নাম অরিন্দম পাল। শুক্রবার পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনা থানার পুলিশ বাড়ি থেকে তাঁকে পাকড়াও করে। শনিবারই বছর ত্রিশের ওই যুবককে আদালতে হাজির করানো হবে বলে পুলিশ সূত্রে খবর।
আগামী ৭ এবং ১৪ সেপ্টেম্বর রয়েছে এসএসসি-র পরীক্ষা। তার দু’দিন আগে সমাজমাধ্যমে একটি পোস্ট নজরে আসে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পুলিশের। শুক্রবার সংশ্লিষ্ট পোস্টটিকে ‘ফেক’ (ভুয়ো) বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। সমাজমাধ্যমেই পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তের গ্রেফতারির কথা।
অরিন্দম পাল নামে একটি ফেসবুক ব্যবহারকারী পোস্টে লেখেন, ‘‘আমার বাড়ি মুর্শিদাবাদে। গত দু’দিন আগে আমার ফোন নম্বরে একটি ফোন আসে। জিজ্ঞেস করা হয়, এসএলএসটি পরীক্ষায় পাশ করে চাকরি করতে চাও? মোট ১৪ লাখ টাকা লাগবে। প্রশ্নপত্র দু’দিন আগে পেয়ে যাবে।’’ তিনি আরও লেখেন, ‘‘মুর্শিদাবাদ থেকে পরীক্ষার দু’দিন আগে বর্ধমান প্রশ্নপত্র এবং উত্তরপত্র দিয়ে যাবে। সেগুলো মুখস্থ করতে হবে। পরীক্ষার দিন পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছেও দেবে। তার পর দিন ৫০ হাজার দিতে হবে। ইন্টারভিউয়ের সময় ৪ লক্ষ টাকা লাগবে। আর বাকি টাকা চাকরি পাওয়ার পরে।’’ এর পর ওই যুবকের প্রশ্ন, ‘‘তা হলে কি এ বার এই ভাবে প্রতারণা হবে? প্রশ্নপত্র ‘লিক’ (ফাঁস) হয়ে যাবে?’’
এই পোস্টের সত্যাসত্য খতিয়ে দেখতে শুরু করে পুলিশ। পাশাপাশি ওই ফেসবুক প্রোফাইলের মালিকের খোঁজ শুরু হয়। শেষমেশ চন্দ্রকোনা টাউন থানার মাংরুল গ্রামপঞ্চায়েত এলাকায় একটি বাড়ি থেকে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তিনি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে ওই মিথ্যা পোস্ট করেছেন বলে দাবি তদন্তকারীদের। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার বলেন, ‘‘আগামী ৭ এবং ১৪ স্কুল সার্ভিস কমিশনের এসএলএসটি পরীক্ষার্থীদের বিভ্রান্ত করতে, সাধারণ মানুষ তথা পরীক্ষার্থীদের মধ্যে প্রশাসন এবং সরকারি পরীক্ষা ব্যবস্থাকে সন্দেহজনক করে তোলার অপচেষ্টা হয়েছে। যে ব্যক্তি এই কাজ করেছেন, তাঁকে শনাক্ত করে পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘সকলের কাছে আবেদন করা হচ্ছে, এমন মিথ্যা এবং বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার করবেন না। এতে আপনাকে আইনি ব্যবস্থার মুখোমুখি হতে হবে।’’