উত্তাল যমুনা! ভয়াবহ বন্যার আশঙ্কা, ডুবল রাজধানী ও নয়ডা
আজকাল | ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: দিল্লি এবং তার আশপাশ সংলগ্ন জাতীয় রাজধানী অঞ্চলের (এনসিআর) বিভিন্ন অংশে যমুনা নদীর জলস্তর বৃদ্ধি পেয়েছে৷ এর কারণে জলাবদ্ধতা অব্যাহত রয়েছে। গত কয়েক দিনের প্রবল বৃষ্টিপাতের ফলে নদীর জল আশেপাশের সড়ক, কৃষিজমি ও নিচু এলাকাগুলিকে প্লাবিত করেছে।
সংবাদমাধ্যমে শেয়ার করা ভিডিও ও ছবি থেকে দেখা যায়, যমুনা নদীর আশেপাশের অঞ্চলগুলিতে ব্যাপক হারে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে। এমনকী বন্যার জল আবাসিক এলাকায় প্রবেশ করেছে।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, শুক্রবার সকাল ৭টায় দিল্লির সিগনেচার ব্রিজ এলাকায় যমুনা নদীর জল বিপদসীমার উপরে উঠে আসে। দিল্লিতে যমুনার সতর্কতা চিহ্ন নির্ধারিত হয়েছে ২০৪.৫ মিটার এবং বিপদসীমা ২০৫.৩৩ মিটার।
শুক্রবার সকাল ৮টায় দিল্লির পুরাতন রেলওয়ে ব্রিজ এলাকায় যমুনার জলস্তর ছিল ২০৭.৩১ মিটার, যা এই মৌসুমের সর্বোচ্চ ২০৭.৪৮ মিটারের খুব কাছাকাছি। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, সকাল ৬টায় জলস্তর ছিল ২০৭.৩৫ মিটার, এবং তা সকাল ৭টায় কমে ২০৭.৩৩ মিটারে নামে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দিনের বেলা জলস্তর আরও কিছুটা কমতে পারে বলে আশা করা যাচ্ছে।
বন্যা পরিস্থিতির কারণে উত্তর রেলপথ বিভাগ (Northern Railway) দিল্লি ডিভিশনের পুরাতন যমুনা ব্রিজে ট্রেন চলাচল স্থগিত করেছে। এর ফলে ৬০টিরও বেশি ট্রেন চলাচল নিয়ন্ত্রিত করা হয়েছে।
দিল্লির সিভিল লাইন্স এলাকার মনাস্টেরি মার্কেট এখনও জলমগ্ন অবস্থায় রয়েছে যমুনার জলে। একইভাবে, নিগম বোধ ঘাট এলাকাও সম্পূর্ণভাবে জলমগ্ন হয়ে পড়েছে।
যমুনা বাজার, বাসুদেব ঘাট এবং আশেপাশের আবাসিক এলাকাগুলিও প্লাবিত হয়েছে। জানা গিয়েছে কালিন্দী কুঞ্জ এলাকার বিভিন্ন অংশ প্লাবিত হওয়ায় সেখানে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর (NDRF) চারটি দল মোতায়েন করা হয়েছে। জাতীয় রাজধানীর পার্শ্ববর্তী অঞ্চলগুলো, যেমন- নয়ডা, গাজিয়াবাদ ও গুরগাঁওতেও জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে এবং সম্ভাব্য বন্যার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।
নয়ডার বেশ কয়েকটি এলাকা, বিশেষ করে সেক্টর ১২৫, ১৩৫ এবং ১৫১ — প্লাবিত হয়েছে। এছাড়া, হরিয়ানার হাতনিকুণ্ড ব্যারেজ থেকে অতিরিক্ত জল ছাড়ার কারণে গাজিয়াবাদ জেলার একটি বন্যাক্রান্ত গ্রাম থেকে অন্তত ৫৫টি পরিবারকে উদ্ধার করা হয়েছে।
কর্তৃপক্ষ আগাম সতর্কতা হিসেবে নিচু এলাকা থেকে মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় পাম্প মেশিন বসানো হয়েছে, যাতে জমে থাকা জল দ্রুত বের করে ফেলা যায়।
খবর অনুযায়ী, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিভাবকদের অনুরোধ করা হয়েছে, স্কুল খোলার সময়সূচি ও অন্যান্য আপডেটের জন্য স্থানীয় প্রশাসন ও স্কুল কর্তৃপক্ষের অফিসিয়াল ঘোষণা অনুসরণ করতে।
এর আগে সোমবার ও মঙ্গলবার দিল্লি-এনসিআর এলাকায় টানা বৃষ্টিপাতে জলমগ্নতা ও ট্রাফিক জ্যাম সৃষ্টি হয়। নয়ডার সেক্টর ৬২, ১৮ এবং গ্রেটার নয়ডার কিছু অংশে প্রচণ্ড জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। এর ফলে রাস্তায় যান চলাচলে ব্যাঘাত ঘটে এবং শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ দেখা দেয়।
পাশাপাশি গুরুগ্রাম ও গাজিয়াবাদেও একই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে জনগণকে অনাবশ্যক যাতায়াত থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে বৃষ্টির সময়।