• ‘বাঙালি পার্টি’ প্রমাণে ভরসা দুর্গাপুজো, প্রথমবার দিল্লিতে বিজয়া সম্মিলনী বিজেপির
    বর্তমান | ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: ‘জয় শ্রীরাম’ অতীত। পরিবর্তে সম্প্রতি বাংলায় এসে জনসভায় ‘জয় মা দুর্গা’, ‘জয় মা কালী’ সম্বোধনে ভাষণ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বাঙালি অস্মিতায় শান দিতেই প্রধানমন্ত্রীর এহেন পদক্ষেপ বলে দাবি রাজনীতির কারবারিদের। নিজেদের ‘বাঙালি’ পার্টি এবং ‘বাঙালির পার্টি’ প্রমাণে মরিয়া হয়ে উঠেছে বিজেপি। আগামী বছর রাজ্যে গুরুত্বপূর্ণ বিধানসভা নির্বাচন। ছাব্বিশের ভোটে বাংলা ও বাংলাভাষী বিতর্কে রাশ টানতে পদ্মশিবিরের অন্যতম প্রধান হাতিয়ার বাঙালির সেরা উৎসব দুর্গাপুজো। সাম্প্রতিক অতীতে মূলত বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে বাংলাভাষীদের ‘বাংলাদেশি’ হিসেবে চিহ্নিত করার অভিযোগ উঠেছে। সরব হয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিরোধী মহাজোট ‘ইন্ডিয়া’র শরিক দলগুলিও। আগামী বছর পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা ভোটে এই বিষয়টি তাদের জন্য ব্যুমেরাং হতে পারে আশঙ্কা করেই এবার বাংলা ও বাঙালিয়ানা প্রশ্নে দলীয় কৌশল পরিবর্তন করছে বিজেপি। জানা যাচ্ছে, দেশের রাজধানীতে এই প্রথমবার বিজয়া সম্মিলনীর আয়োজন করতে চলেছে দিল্লি বিজেপি। এক্ষেত্রে বাঙালি জনসংযোগই তাদের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য।

    শুধু বিজয়া সম্মিলনী নয়, প্রবাসী বাঙালিদের মন জয়ে পৃথক দুর্গাপুজো কমিটিও তৈরি করেছে গেরুয়া শিবির। দিল্লি বিজেপির বেঙ্গলি সেলকেই ওই কমিটির দেখভাল করতে বলা হয়েছে। সামগ্রিক বিষয়কেই অত্যন্ত ইঙ্গিতপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক তথ্যাভিজ্ঞ মহল। সূত্রের খবর, মূলত দিল্লি বিজেপির উদ্যোগেই আজ, শনিবার মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তার সঙ্গে শহরের অন্তত শ’খানেক পুজো কমিটির উদ্যোক্তাদের একটি বৈঠক হতে পারে। সেখানে আসন্ন দুর্গাপুজোর আয়োজন সংক্রান্ত বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা। সূত্রের খবর, কয়েক সপ্তাহ আগেই দিল্লিতে দুর্গাপুজো কমিটির একাংশের সঙ্গে গেরুয়া শিবিরের একটি বৈঠক হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গ বিজেপির প্রাক্তন সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। ওই বৈঠকেই বিজয়া সম্মিলনীর বিষয়টিকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে তা দিল্লি বিজেপির সভাপতি বীরেন্দ্র সচদেবার অনুমোদনও পেয়েছে।

    এই প্রসঙ্গে লকেট বলেন, ‘এই প্রস্তাব মূলত আমিই দিয়েছিলাম। এর আগে দিল্লিতে এমন আয়োজন হয়নি। ইতিমধ্যে দিল্লি বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব সবুজ সঙ্কেত দিয়েছে বলে শুনেছি। বিজেপি প্রথম থেকেই বাংলা এবং বাঙালির পাশে আছে।’ প্রাথমিকভাবে স্থির হয়েছে, দীপাবলির আগেই দিল্লিতে বিজয়া সম্মিলনী সেরে ফেলবে বিজেপি। এনডিএমসি সভাঘর বা বিজেপির সম্প্রসারিত কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে তা আয়োজন করা হবে। ৫০ বছরের পুজো, ১০০ বছর ও তদূর্ধ্ব পুজো এবং সার্বিকভাবে ভালো আয়োজন করা পুজো কমিটিগুলিকে বিশেষ স্বীকৃতি দেওয়া হবে। দিল্লি বিজেপির বেঙ্গলি সেলের পক্ষে অরুণ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘এর মধ্যে কোনও রাজনীতি নেই। বাঙালিদের নিয়েই বিজেপি সরকার পথ চলতে আগ্রহী। সেইমতো পদক্ষেপ করা হচ্ছে।’
  • Link to this news (বর্তমান)