রাজ্য নেতৃত্বের হস্তক্ষেপের পরও শিলিগুড়িতে হাল ফেরেনি তৃণমূলে, এখনও বেলাগাম দলের একাংশ
বর্তমান | ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: রাজ্য নেতৃত্বের হস্তক্ষেপের পরও শিলিগুড়িতে হাল ফেরেনি তৃণমূল কংগ্রেসের। দলের একাংশ বেলাগাম বলে অভিযোগ। একই সঙ্গে, দলীয় কিছু পদক্ষেপ নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। অভিযোগ, দলের কোর কমিটি অপরিকল্পিতভাবে পদক্ষেপ নেওয়ায় এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। দার্জিলিং জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের চেয়ারম্যান (সমতল) সঞ্জয় টিবরেওয়াল অবশ্য বলেন, রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশ মতোই এখানে দল পরিচালনা করা হচ্ছে। দলীয় শৃঙ্খলা বজায় রাখতে বেশকিছু পদক্ষেপও নেওয়া হয়েছে। এখানে দল ঠিকঠাক মতই চলছে।
কয়েকদিন আগে দলের কোর কমিটি ও বিভিন্ন শাখা সংগঠনের নেতা-নেত্রীদের সঙ্গে কলকাতায় বৈঠক করে তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্ব। সকলকে দলীয় শৃঙ্খলা বজায় রাখা এবং ঐক্যবদ্ধভাবে চলার নির্দেশ দেওয়া হয় বলে খবর। অথচ শিলিগুড়িতে দলে এখনও হাল ফেরেনি। কখনও পুরসভার কাউন্সিলার, আবার কখনও গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্যরা বিতর্কে জড়িয়ে পড়ছেন। একইসঙ্গে বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েতের ক্ষমতা দখল নিয়ে জোড়াফুল শিবির একাধিক গোষ্ঠীতে বিভক্ত হয়েছে বলে অভিযোগ। ইতিমধ্যে মাটিগাড়া-২ পঞ্চায়েতে প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব পেশ করা হয়েছে। আরও কিছু পঞ্চায়েতে অনাস্থা পেশের ছক কষা হয়েছে। দলের একাংশের অভিযোগ, দলীয় অভিজ্ঞ, দক্ষ ও দুর্দিনের নেতাদের বাইরে রেখে শুধুমাত্র পুরসভা ও মহকুমা পরিষদের কয়েকজন সদস্যকে নিয়ে কোর কমিটি গড়া হয়েছে। বিভিন্ন ইস্যুতে ওই কমিটি যে ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছে, তা মানা যায় না। যা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। যেমন পুরসভায় শ্রাবণী দত্তের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হলেও দিলীপ বর্মনের বিরুদ্ধে নির্বিকার বলে অভিযোগ। আবার মাটিগাড়ায় অনাস্থা প্রস্তাব যাঁরা এনেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। মহকুমা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ প্রিয়াঙ্কা বিশ্বাস ও অঞ্চল সভাপতিকে শোকজ করা হয়েছিল। অন্যান্য পঞ্চায়েতে কোন্দল নিয়ে কোনও পদক্ষেপই নেওয়া হয়নি। দলের এমন দু’মুখো নীতির জেরেই গ্রামীণ এলাকায় বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন বেশকিছু নেতা-নেত্রী।
দলের দার্জিলিং জেলার চেয়ারম্যান (সমতল) অবশ্য বলেন, এখানে দল অনেকটাই বড় হয়েছে। কিছু জায়গায় মতপার্থক্য রয়েছে। তাতে কোনও সমস্যা নেই। মাটিগাড়া-২ পঞ্চায়েতের অনাস্থার বিষয়টিও মিটে যাবে। কিন্তু দলীয় শৃঙ্খলার ঊর্ধ্বে কেউ নই। শৃঙ্খলা যেই ভাঙছেন, তাঁর বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যে মেয়র পারিষদকে পদ থেকে সরানো হয়েছে। মাটিগাড়ায় দু’জনকে শোকজ করা হয়েছে। এখানে দল সুষ্ঠুমতোই চলছে।