নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: শহরের দেশবন্ধুপাড়ায় এবার দুর্গামণ্ডপে ৩৩ কোটি দেবতা! মাদুরাইয়ের মীনাক্ষী মন্দিরের আদলে এখানে তৈরি হচ্ছে প্যান্ডেল। আর সেই প্যান্ডেলে থাকছেন সমস্ত দেবদেবী। নবদ্বীপ ও পান্ডুয়ার শিল্পীরা দিনরাত এক করে ফাইবার দিয়ে দেবদেবীর মূর্তি গড়ার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। এদিকে, জলপাইগুড়িতে এবার পুজোয় নজর কাড়তে চলেছে শহর সংলগ্ন পাতকাটা কলোনি। এখানে একই পাড়ায় দু’টি বিগ বাজেটের পুজো। ভ্যাটিকান সিটি বনাম অমৃতসরের স্বর্ণমন্দির। এ যেন সম্প্রীতির বার্তা। একইসঙ্গে কারা বেশি দর্শক টানতে পারে, চলছে তারই লড়াই। সবমিলিয়ে তিস্তাপাড়ের শহরে জমজমাট পুজোর আমেজ।
জলপাইগুড়ির দেশবন্ধুপাড়ায় মীনাক্ষী মন্দিরের আদলে মণ্ডপ গড়ছে দিশারী ক্লাব। এবার তাদের পুজো ৬২ বছরে পা রাখল। ক্লাব সম্পাদক সত্যব্রত দে বলেন, শিল্পীরা অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন। যাঁরা মাদুরাইয়ে অবস্থিত মীনাক্ষী মন্দিরে যেতে পারেননি, তাঁরা এবার জলপাইগুড়িতে বসেই দেখতে পারবেন। মণ্ডপের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে তৈরি হচ্ছে প্রতিমা। নবদ্বীপের শিল্পীরাই প্রতিমা গড়ছেন। প্যান্ডেলেই প্রতিমা গড়ার কাজ চলছে। তাঁর দাবি, অন্তত দেড় হাজার দেবদেবীর মূর্তি থাকছে আমাদের মণ্ডপে, যা ৩৩ কোটি দেবদেবীর প্রতীকী।
ভ্যাটিকান সিটির আদলে মণ্ডপ তৈরি করছে জলপাইগুড়ির পাতকাটা কলোনি অগ্রণী সঙ্ঘ। এবার তাদের পুজোর ৬৮ বছর। ৬৫ ফুট উঁচু মণ্ডপে শুধুই বাঁশের কারুকার্য। মণ্ডপসজ্জায় রয়েছেন কোচবিহারের শিল্পীরা। শিলিগুড়ি থেকে আসছে ডাকের সাজের প্রতিমা। আলোকসজ্জায় জলপাইগুড়ির শিল্পী। উদ্বোধন চতুর্থীতে। পুজোর মাঠে বসবে আনন্দমেলা। ক্লাবসদস্য রাজা সরকার বলেন, আমরা পরিবেশবান্ধব পুজো উপহার দিতে চাই। সেকারণে শুধুমাত্র বাঁশ দিয়ে গোটা মণ্ডপ সাজিয়ে তুলছি। এটুকু বলতে পারি, গোটা জলপাইগুড়ি শহরের মানুষের ভিড় এবার আমাদের পুজো মণ্ডপে আছড়ে পড়বে।
অগ্রণী সঙ্ঘের মণ্ডপ থেকে ১৫০ মিটার দূরে পাতকাটা কলোনি কালচারাল ক্লাবের পুজো। এদের পুজোও এবার ৬৮ বছরে পা রাখল। অমৃতসরের স্বর্ণমন্দিরের আদলে প্রায় ৬৫ ফুট মণ্ডপ তৈরি হচ্ছে এখানে। প্লাই ও ফাইবার দিয়ে সাজানো হচ্ছে প্যান্ডেল। মণ্ডপসজ্জায় রয়েছেন জলপাইগুড়ির শিল্পীরা। শিলিগুড়ির কুমোরটুলি থেকে আসছে প্রতিমা। যেহেতু স্বর্ণমন্দিরের আদলে মণ্ডপ, তাই প্রতিমারও গোল্ডেন সাজ। অগ্রণী সঙ্ঘকে এক ইঞ্চি জমি ছাড়তে নারাজ কালচারাল ক্লাব। সেকারণে তাদেরও পুজো উদ্বোধন চতুর্থীতে। গত আদি যোগী থিমে পাতকাটা কলোনি কালচারাল ক্লাব যথেষ্টই ভিড় টানতে সক্ষম হয়েছিল। গতবারের রেকর্ড এবার ভাঙাই লক্ষ্য, জানিয়েছেন পুজো কমিটির সম্পাদক প্রসেনজিৎ কর্মকার।