নেপাল-তুরস্কে কেন বারবার সফর ইন্দোনেশিয়ার সেই মহিলার? প্রশ্ন
বর্তমান | ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি ও সংবাদদাতা, নকশালবাড়ি: ম্যাসাজ পার্লারের আড়ালে আইএসআইয়ের হয়ে চালাত চরবৃত্তি। শিলিগুড়ির নেপাল সীমান্ত পানিট্যাঙ্কি থেকে ইন্দোনেশিয়ার মহিলাকে গ্রেপ্তারের পর এমন অনুমান করছেন গোয়েন্দারা। ধৃতের নাম নিনওমান মুর্নি ওরফে নি কাডেক সিসিয়ানি। বয়স ৪৯ বছর। গোয়েন্দারা জানিয়েছে, মুম্বই, নেপাল, তুরস্ক চষে বেরিয়েছে ধৃত মহিলা। সন্দেহভাজন এই বিদেশি লাস্যময়ীর সঙ্গে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থার সংস্রব রয়েছে বলেই খবর। ধৃতের মোবাইলে বেশকিছু সন্দেহজনক ফোন নম্বর মিলেছে। ধৃতকে জেরা করছে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলি।
দার্জিলিংয়ের অতিরিক্ত পুলিস সুপার(কার্শিয়াং) অভিষেক রায় বলেন, নেপাল সীমান্ত থেকে ইন্দোনেশিয়ার ওই মহিলাকে ধরে খড়িবাড়ি থানার হাতে তুলে দিয়েছে এসএসবি। ধৃতের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। ঘটনার সমস্ত দিক গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পানিট্যাঙ্কিতে ইন্দো-নেপাল সীমান্তের ৯০নম্বর পিলারের কাছ থেকে ইন্দোনেশিয়ার ওই মহিলাকে আটক করে এসএসবি। সে নেপালে পাড়ি দিচ্ছিল। তারা ওই মহিলার পাসপোর্ট সহ বিভিন্ন নথি খতিয়ে দেখে চমকে যান। এরপর তারা ওই মহিলাকে পুলিসের হাতে তুলে দেয়। পুলিস ও গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় এক দশক আগে এদেশে আসে ইন্দোনেশিয়ার ওই মহিলা। দেখতে স্মার্ট। পরনে সাদা টপ ও জিন্স প্যান্ট। চোখে চশমা। গায়ের রং ফরসা। মুম্বইতে তার ম্যাসাজ পার্লার আছে। সেই পার্লারকে সামনে রেখে ‘লাস্যময়ীর’ বেশে সে আইএসআইয়ের হয়ে চরবৃত্তি শুরু করেছিল বলেই সন্দেহ।
ধৃত মহিলা একাধিকবার নেপাল, তুরস্ক ও ইন্দোনেশিয়ায় গিয়েছে। প্রাথমিক তদন্তের পর গোয়েন্দারা জানিয়েছে, উত্তরবঙ্গের চিকেনস নেক সহ মুম্বই, নেপাল সীমান্তের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হাতানোই পাকিস্তানি গুপ্তচর সংস্থা ইন্টার সার্ভিসেস ইন্টিলিজেন্সের(আইএসআই) টার্গেট। সম্ভবত এজন্যই সন্দেহভাজন ওই লাস্যময়ীকে নামিয়েছিল আইএসআই। তারা ওই মহিলার সঙ্গে নেপালে ও তুরস্কে যোগাযোগ করত বলেই মনে হচ্ছে। সেকারণেই তুরস্কে ওই মহিলার থাকার ব্যবস্থা আইএসআই করে দিয়েছিল বলেই অনুমান । শুক্রবার ধৃত ইন্দোনেশিয়ার মহিলাকে শিলিগুড়ি মহকুমা আদালতে তোলা হয়। ধৃতকে পাঁচদিন পুলিস হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। পুলিস সূত্রের খবর, ধৃতের কাছ থেকে ভারতীয় নথি উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়াও ইন্দোনেশিয়ার পাসপোর্ট, মেয়াদ উত্তীর্ণ ভারতীয় ভিসা, আধারকার্ড, প্যানকার্ড, ব্যাঙ্কের নথি, নেপালের ট্যুরিস্ট ভিসাও বাজেয়াপ্ত হয়েছে। ভারতীয় আধারকার্ড ও প্যানকার্ডে ধৃতের নাম নিনওমান মুর্নি। কিন্তু পাসপোর্টে তার নাম নি কাডেক সিসিয়ানি। ইন্দোনেশিয়ার বালির বাসিন্দা। পুলিস সূত্রে খবর, মুম্বইতে এজেন্ট মারফত ভারতীয় জাল নথি তৈরি করেছে সে।