বৃষ্টিতে শুকাচ্ছে না প্রতিমা, হ্যালোজেন ও ব্লো-ল্যাম্পেই ভরসা মৃৎশিল্পীদের
বর্তমান | ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, মেদিনীপুর: গণেশ পুজো মিটেছে। এবার সামনেই আসছে বিশ্বকর্মা পুজো। দুর্গাপুজোরও আর বেশি সময় বাকি নেই। বরাতও এসেছে অনেক। কিন্তু লাগাতার বৃষ্টির জেরে সমস্যায় পড়েছেন মেদিনীপুরের মৃৎশিল্পীরা। প্রতিমা তৈরি করলেও মাটি শুকাচ্ছে না। সেভাবে উঠছে না রোদও। আবার আকাশে সূর্যের দেখা মিললেও হঠাৎ করে বৃষ্টি ভিজিয়ে দিচ্ছে। তাই বাইরেও শুকোতে দেওয়া যাচ্ছে না। কীভাবে সময়ে প্রতিমা ডেলিভারি দেবেন তা নিয়ে চিন্তায় মৃৎশিল্পীরা। এই পরিস্থিতিতে মাটি শুকাতে হ্যালোজেন জ্বালিয়ে ও ব্লো-ল্যাম্প ব্যবহার করেছেন শিল্পীরা।
মেদিনীপুর শহরের মৃৎশিল্পীরা জানান, মাঝে মধ্যেই বৃষ্টি নামছে। ফলে মূর্তির গায়ের মাটি শুকাতে চাইছে না। তাই হ্যালোজেন লাইটের মাধ্যমে মূর্তি শুকানোর কাজ চলছে। ব্লো-ল্যাম্পও ব্যবহার করা হচ্ছে। বিশ্বকর্মা পুজোর অর্ডারও প্রচুর পরিমাণে এসেছে। দিনে ১৮ ঘণ্টা পরিশ্রম করেও কাজ শেষ করা যাচ্ছে না। অনেক শিল্পী সারারাত মূর্তি তৈরির কাজ করছেন। তবে, ব্লো-ল্যাম্প বেশি ব্যবহার করলে প্রতিমার মাটি ফেটে যাচ্ছে। মেদিনীপুর শহরের মৃৎশিল্পী অমিত মাহিন্দার বলেন, বৃষ্টির জন্য প্রতিমা তৈরি করতে খুবই সমস্যা হচ্ছে। প্রসঙ্গত, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলাজুড়ে কয়েক হাজার দুর্গাপুজো হয়। এরসঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে গণেশ ও বিশ্বকর্মা পুজো। প্রায় একমাসের মধ্যে তিনটি পুজো পড়েছে। কিন্তু শিল্পীদের সংখ্যা বাড়েনি। তাই চাপ বাড়ছে। জুলাই থেকেই বিভিন্ন মৃৎশিল্পীদের কাছে বায়না আসতে শুরু করে। বায়না পেয়ে শিল্পীরা খুশি হয়েছিলেন ঠিকই। কিন্তু বৃষ্টি তাঁদের হাসি মুখ কেড়ে নিয়েছে। এক শিল্পীর কথায়, এবছর কারিগর পাওয়া যাচ্ছে না। অনেকেই ভিনজেলায় কাজে গিয়েছেন। তার উপর ভালোমানের মাটি পেতে কালঘাম ছুটে যাচ্ছে। শহরের প্রতিটি মৃৎশিল্পী গড়ে ১০ থেকে ১৩টি দুর্গা তৈরি করছেন। এখনও বহু মৃৎশিল্পীরা ঠাকুর রঙ করার কাজ করতে পারেননি। তার উপর বিশ্বকর্মা তৈরির কাজ চলছে।মেদিনীপুর শহরের মৃৎশিল্পী রাজু দাস বলেন, ঠাকুর তৈরির প্রতিটি জিনিসের দাম বেড়েছে। তার সঙ্গে আবহাওয়ার এই অবস্থা। রোজ ২০ ঘণ্টা কাজ করেও সামাল দিতে পারছি না। জানি না কী পরিস্থিতি হবে। বিশ্বকর্মার ৭০টি প্রতিমা বানাচ্ছি। মেদিনীপুর শহরের বাসিন্দা স্বপন দাস বলেন, মাটি না শুকালে ফিনিশিং আসবে না। বেশিরভাগ মৃৎশিল্পীর দোকানে সারা দিন কাজ চলছে। গোটা জেলার ছবিটা একই।-নিজস্ব চিত্র