• সাইবার প্রতারণার টাকা সরানো হয় বিদেশে, বাঁকুড়ায় ধৃতদের জেরা করে জানল পুলিস
    বর্তমান | ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বাঁকুড়া: সাইবার প্রতারণার পর পুলিসের ধরপাকড় এড়াতে অপরাধীদের নেপালে আশ্রয়ের কথা আগেই জানতে পেরেছিল পুলিস। এবার তারা জানতে পেরেছে, ওই চক্র প্রতারণার টাকাও বিদেশে সরিয়ে ফেলে। বাঁকুড়ায় একটি সংস্থার ফ্র্যাঞ্চাইজি দেওয়ার নামে প্রতারণায় ধৃত দু’জনকে জেরা করে পুলিস এই চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে। পুলিসের অনুমান, ইতিমধ্যে দেশের নানা এলাকা থেকে হাতানো কয়েকশো কোটি টাকা এই চক্র বিদেশে সরিয়ে ফেলেছে। পুলিস ধৃতদের জেরা চালিয়ে যাচ্ছে।

    জেলা পুলিসের এক শীর্ষ কর্তা বলেন, সাইবার প্রতারণার টাকা বিদেশে পাচার করা হয়। ফলে তা উদ্ধার করতে তদন্তকারীদের সমস্যা হয়। আমরা ধৃতদের জেরা করে এই প্রতারণাচক্রের কিংপিনের সন্ধান পেতে চাইছি।

    বাঁকুড়ার একাধিক ব্যবসায়ীর থেকে প্রতারকরা প্রায় ৫০লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। শহরের এক হোটেল ব্যবসায়ী ৩১লক্ষ, ভৈরবস্থান মোড়ের দুই ব্যবসায়ী মোট ২০লক্ষ টাকা খুইয়েছেন। প্রত্যেককেই ওই সংস্থার আউটলেট খোলার টোপ দেওয়া হয়। সংস্থার ওয়েবসাইট জাল করে তাঁদের ঠকানো হয়। প্রতারকদের একজন সংস্থার এরিয়া ম্যানেজারের নাম করে ওই ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথাবার্তা চালিয়েছিল। তার কথামতোই ব্যবসায়ীরা একাধিক অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠান। তারপর ওই ব্যক্তি বেপাত্তা হয়ে যায়। এবিষয়ে এক ব্যবসায়ীর অভিযোগ পেয়ে পুলিস মামলা রুজু করেছিল। তদন্তে নেমে কলকাতা থেকে প্রতারণাচক্রের সদস্য শেখ শামিম ও সমীর খানকে গ্রেপ্তার করা হয়। ধৃতরা বাঁকুড়া সাইবার ক্রাইম থানার হেফাজতে রয়েছে। তাদের জেরা করে পুলিস বেশকিছু তথ্য পেয়েছে। তবে তদন্তের স্বার্থে সাইবার ক্রাইম থানার আধিকারিকরা এখনই সবকিছু সংবাদমাধ্যমকে জানাতে চাননি। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, প্রতারকরা প্রথমে ‘টার্গেট’ বেছে নেয়। কার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে মোটা টাকা লেনদেন হয়, তা তারা কৌশলে জেনে নেয়। ব্যাঙ্ককর্মীদের একাংশও অনেকসময় এতে তাদের সাহায্য করে। এক্ষেত্রে হোটেল ও রেস্তরাঁ ব্যবসায়ীদের টার্গেট করা হয়েছিল। তাঁদের নামী সংস্থার ফ্র্যাঞ্চাইজি কম টাকায় পাইয়ে দেওয়ার টোপ দেওয়া হয়। তারপর নির্দিষ্ট ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠিয়ে দিতে বলে প্রতারকরা। টাকা হাতিয়ে নেওয়ামাত্র তাড়াতাড়ি তা অন্য অ্যাকাউন্টে সরিয়ে নেওয়া হয়। পরে অ্যাকাউন্ট থেকে তুলে টাকা ‘ডাম্প’ করা হয়। ধাপে ধাপে হাওলার মাধ্যমে ওই টাকা বিদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। অনেকসময় ওই টাকায় সোনা বা বিটকয়েন কিনে নেওয়া হয়। যার নাগাল পাওয়া পুলিসের পক্ষে মুশকিল হয়ে যায়।
  • Link to this news (বর্তমান)