সংবাদদাতা, বোলপুর: যুবকের রহস্যমৃত্যুর ঘটনায় অভিযুক্তদের পাঁচটি মোবাইল ও মৃতের দু’টি মোবাইল বাজেয়াপ্ত করেছে বোলপুর থানার পুলিস। কললিস্ট ধরে অভিযুক্তদের আলাদাভাবে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়েছে। তবে ময়নাতদন্ত ও ফরেন্সিক রিপোর্ট হাতে না আসা পর্যন্ত রোহিত সাউয়ের মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নিয়ে ধন্দে রয়েছে পুলিস। ঝুলন্ত অবস্থায় মৃতদেহ উদ্ধার হলেও মৃতের পরিবারের দাবি, তাকে খুন করে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। ঘটনার দু’দিন পরও শুক্রবার বোলপুরের ১৭নম্বর ওয়ার্ডের বিবেকানন্দপল্লি ক্যানেলপাড় এলাকা কার্যত থমথমে ছিল। প্রতিবেশীরাও অভিযুক্ত দোয়েল সহ তার পরিবারের কঠিন শাস্তির দাবি জানিয়েছে। আজ, শনিবার দোষীদের শাস্তির দাবিতে প্রতিবাদ মিছিলের ডাক দিয়েছেন বিবেকানন্দপল্লি ক্যানেল পাড়ের বাসিন্দারা।
মৃত যুবক রোহিতের সঙ্গে প্রতিবেশী বিবাহিতা যুবতী দোয়েল দাসের সম্পর্ক ছিল। টাকা লেনদেন ঘিরে দীর্ঘদিন ধরেই তাদের মধ্যে ঝামেলা চলছিল। বুধবার সকালে ক্যানেলপাড় থেকে রোহিতের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। যদিও এলাকাবাসীর দাবি, মৃতের পা নীচে ঠেকেছিল। খুনের অভিযোগ তুলে উত্তেজিত জনতা দোয়েলের বাড়ি ভাঙচুর করে। অভিযুক্ত দোয়েল, তার মা, স্বামী, দিদি ও জামাইবাবুকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিস। ফরেন্সিক টিম ঘটনাস্থল ও দোয়েলের বাড়ি থেকে বিভিন্ন নমুনা সংগ্রহ করেছে। রোহিত ও দোয়েলের একাধিক কল রেকর্ড ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। টাকার লেনদেন নিয়ে দোয়েলকে হুমকি শোনা যায়। শুক্রবার পাঁচ অভিযুক্তকে আদালতে তোলা হলে বিচারক আটদিন পুলিসি হেফাজতের নির্দেশ দেন।
পুলিস দোয়েল ও রোহিতের সম্পর্কে টানাপোড়েনের প্রকৃত কারণ জানার চেষ্টা করছে। তাদের মতানৈক্য ও টাকার লেনদেনের জেরেই এই ঘটনা কিনা তা খতিয়ে দেখছে পুলিস। অভিযুক্তদের প্রত্যেকের মোবাইলের কললিস্ট ধরে ধরে তাদের আলাদাভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে পুলিসের এক আধিকারিক জানিয়েছেন। রোহিতের কাছ থেকে টাকা নিয়ে দোয়েল কাকে দিয়েছিল তাও খতিয়ে দেখছে পুলিস। অভিযুক্ত দোয়েলের দিদিকেও এই ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কিন্তু তার তিন বছরের কোলের শিশু রয়েছে। শিশুটির যত্নে যাতে কোনও ত্রুটি না হয় সেই বিষয়টি দেখার জন্য বোলপুর আদালত পুলিসকে মানবিক হওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। পুলিসও যথাযথভাবে পালন করছে বলে জানিয়েছেন জেলার পুলিস সুপার আমনদীপ। তিনি বলেন, এই ঘটনায় আর কেউ জড়িত আছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্ত চলছে।