• বালকের দেহ উদ্ধার, ‘খুনে’র অভিযোগে গণপিটুনিতে মৃত আরও ২, তেহট্টে তুলকালাম
    প্রতিদিন | ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • রমণী বিশ্বাস, তেহট্ট: বছর নয়েকের শিশুর দেহ উদ্ধার ঘিরে নদিয়ার তেহট্টের নিশ্চিন্তপুরে তুলকালাম। স্থানীয় সূত্রে খবর, এলাকাবাসীর মারধরে ওই শিশুরই দুই প্রতিবেশীর মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনায় জখমও হয়েছেন বেশ কয়েকজন। তাঁদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

    নিহত স্বর্ণাভ মণ্ডল, তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র। অন্যান্য দিনের মতো শুক্রবার দুপুর ৩টে নাগাদ বাড়ি থেকে খেলতে বেরয় সে। দু’ঘণ্টা কেটে গেলেও তার কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। তারপর শুরু হয় খোঁজখবর। রাত পর্যন্ত এলাকায় খুঁজে তার হদিশ পাওয়া যায়নি। বাধ্য হয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হন পরিবারের লোকজন। নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়। তা সত্ত্বেও গোটা রাত বালকের কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি। এদিকে, শনিবার সকালে বাড়ির কাছে পুকুরে ত্রিপল মোড়া কিছু একটা ভাসতে দেখেন স্থানীয়রা। সেটি উদ্ধার করে খুলতে গিয়ে দুর্গন্ধ পাওয়া যায়। এরপর দেখা যায় ত্রিপল মোড়া অবস্থায় রয়েছে বালকের দেহ। তেহট্ট থানায় খবর দেওয়া হয়।

    স্থানীয়দের দাবি, ওই বালককে খুন করা হয়েছে। পুকুরের পাশেই থাকা বিশ্বাস দম্পতির উপর চড়াও হয় এলাকাবাসী। অভিযোগ, বাড়ির ভিতর জোর করে ঢুকে পড়েন স্থানীয়রা। উৎপল ও সোমার বাড়ি ভাঙচুরের চেষ্টা করা হয়। বাড়ির পাশে থাকা বিশ্বাস দম্পতির চটের গুদামে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। বিশ্বাস দম্পতিকে বাড়ি থেকে টেনেহিঁচড়ে বের করা হয়। চলে বেধড়ক মারধর। অচৈতন্য হয়ে পড়েন তাঁরা। ইতিমধ্যে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় তেহট্ট থানার বিশাল পুলিশবাহিনী। ব়্যাফ নামে। উৎপল ও সোমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকরা জানান মৃত্যু হয়েছে তাঁদের। পুলিশ সূত্রে খবর, নিহতের পরিবারের সঙ্গে বিশ্বাস দম্পতির পুরনো বিবাদ ছিল। সেই বিবাদের জেরে অপহরণ করে খুন কিনা, খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এই ঘটনায় প্রশ্নের মুখে পুলিশের ভূমিকাও। পরিবারের দাবি, নিখোঁজ ডায়েরি করা সত্ত্বেও পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। তৎপর হলে হয়তো স্বর্ণাভকে বাঁচানো সম্ভব হত। দেহ উদ্ধারের খবর পাওয়ার পরেই পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছলে বিশ্বাস দম্পতিকেও রক্ষা করা সম্ভব হত বলেও দাবি স্থানীয়দের একাংশের।
  • Link to this news (প্রতিদিন)