বিশ্ববাজারে দোলাচল অব্যাহত, কলকাতায় ফের রেকর্ড সোনার
বর্তমান | ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: আমেরিকার শুল্ক নীতি কিছুতেই থিতু হতে দিচ্ছে না বিশ্ব অর্থনীতিকে। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাজারে টাকার দামের পতন অব্যাহত। এই সবই সোনার দামকে রকেট গতিতে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছে। কলকাতাতে শুক্রবার আবারও রেকর্ড গড়ল সোনার দর। তার সঙ্গে রুপোর দর ঊর্ধ্বমুখী। আমেরিকার সুদ নীতি কী হবে, তার দিকে তাকিয়ে আছেন বিনিয়োগকারীরা। তাই আপাতত সোনার বাজার দোলাচলেই থাকবে, এমনটাই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
ওয়েস্ট বেঙ্গল বুলিয়ান মার্চেন্টস অ্যান্ড জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের দেওয়ার দর অনুযায়ী, শুক্রবার কলকাতায় ২৪ ক্যারেট বিশুদ্ধতার ১০ গ্রাম সোনার দর যায় ১ লক্ষ ৭ হাজার ৫০ টাকা। বৃহস্পতিবার সেই দর ছিল ১ লক্ষ ৬ হাজার ৯০০ টাকা। অন্যদিকে, ২২ ক্যারেট বিশুদ্ধতার গয়না তৈরির সোনার ১০ গ্রামের দামও এদিন পৌঁছয় ১ লক্ষ ১ হাজার ৭৫০ টাকায়। গত সোমবারই সেই দর প্রথমবারের জন্য এক লক্ষ টাকার গণ্ডি পেরিয়েছিল কলকাতায়। দিল্লিতেও শুক্রবার ২৪ ক্যারেট সোনার দর ৯০০ টাকা বেড়ে হয় ১ লক্ষ ৬ হাজার ৯৭০ টাকা। যদিও এদিন রাজধানীতে রেকর্ড উচ্চতার চেয়ে সামান্য কম ছিল সোনার দর। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাধারণত দিল্লির তুলনায় কলকাতায় হলুদ ধাতুর দাম কম হয়। কিন্তু এখন উল্টো হাওয়া বইছে। দিল্লিকে টপকে গিয়েছে কলকাতা। এদিন শহরে এক কিলো খুচরো রুপোর দর পৌঁছেছে ১ লক্ষ ২৪ হাজার ২০০ টাকায়। একদিনের তফাতে কেজি পিছু রুপোর দর বেড়েছে ৩০০ টাকা। সব দরের সঙ্গেই যোগ হবে ৩ শতাংশ হারে জিএসটি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আমেরিকার শুল্ক নীতি নিয়ে এখনও বিশ্বজুড়ে দোলাচল অব্যহত। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক নীতির কোনও পরিবর্তন করেন কি না, তা নিয়ে ধন্দ জিইয়ে রয়েছে বিশ্বজুড়ে। এরই মধ্যে আমেরিকার কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদের হার কমাতে পারে বলে জোরালো পূর্বাভাস রয়েছে। চলতি মাসের ১৬ ও ১৭ তারিখে নিজেদের আর্থিক নীতি পর্যালোচনা করবে মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারাল রিজার্ভ। সেখানেই সুদ কমানোর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হতে পারে। পাশাপাশি আমেরিকার কাজের বাজারের গতি প্রকৃতি কেমন, তার দিকেও নজর রাখছে লগ্নিকারীরা। তার কারণ, আর্থিক নীতি নির্ভর করবে সেই তথ্যের উপরও।
যেহেতু আমেরিকার সুদ নীতি গোটা বিশ্বের বিনিয়োগকে কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রণ করে, তাই লগ্নিকারীরা আপাতত নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে সোনাকে বেছে নিচ্ছেন। যেহেতু বিশ্বজুড়ে সোনার চাহিদা বাড়ছে, তাতে দামও বাড়ছে, বলছেন বিশেষজ্ঞরা। অন্যদিকে মার্কিন ডলারসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক মুদ্রার নিরিখে টাকার দাম ক্রমশ তলিয়ে যাচ্ছে। শুক্রবারই ডলারের নিরিখে টাকা সর্বকলীন তলানিতে পৌঁছায়। টাকার দাম ১৫ পয়সা কমে ডলার পিছু ৮৮.২৭-তে নামে। ফলে চড়া দরে সোনা আমদানি দাম বাড়াতে সাহায্য করছে বলেও মনে করা হচ্ছে।