• শিশু ও নারীর ক্ষমতায়নে বড় পদক্ষেপ নিচ্ছে ত্রিপুরা সরকার, জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা 
    আজকাল | ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • নিতাই দে, আগরতলা: শিক্ষা ও নারীর ক্ষমতায়নে বড় পদক্ষেপ নিতে চলেছে ত্রিপুরা রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডাঃ) মানিক সাহা শুক্রবার আগরতলার রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে অনুষ্ঠিত ৬৪তম শিক্ষক দিবসের রাজ্যের মূল অনুষ্ঠানে জানিয়েছেন, খুব শীঘ্রই ত্রিপুরায় একটি মহিলা বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের প্রক্রিয়া শুরু হতে চলেছে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে রাজ্যের মহিলাদের উচ্চশিক্ষা ও আত্মনির্ভরতার নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‌আমাদের সরকার শিক্ষাক্ষেত্রে নয়া সংস্কার আনার লক্ষ্যে স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সেরা শিক্ষকদের নিয়োগ করছে। একইসঙ্গে রাজ্যে তিনটি নতুন সরকারি কলেজ স্থাপন করা হচ্ছে। কন্যা আত্মনির্ভর যোজনার অধীনে ছাত্রীদের হাতে স্কুটি তুলে দেওয়া হয়েছে, যাতে তাঁরা উচ্চশিক্ষার সুযোগ আরও সহজে পায়। সরকারি ডিগ্রি কলেজগুলিতে ছাত্র–ছাত্রীদের বিশেষ করে মেয়েদের জন্য সমস্ত ফি মকুব করা হয়েছে। মেয়েদের অগ্রগতির মাধ্যমেই সমাজ এগিয়ে যাবে, আর তাই মহিলাদের জন্য আলাদা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পদক্ষেপ অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।’‌ 

    অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী শিক্ষকতার পেশাকে ‘জাতি গঠনের মূল ভিত্তি’ হিসেবে বর্ণনা করেন। তাঁর কথায়, ‘‌অর্থ রোজগারের জন্য আপনি অন্য পেশা বেছে নিতে পারেন। কিন্তু শিক্ষকরা আবেগ, দায়িত্ব এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকেই এই মহৎ পেশায় আসেন। শিক্ষকরা হচ্ছেন একটি গাছের শিকড়। আর ছাত্রছাত্রীরা সেই গাছের ডালপালা, ফল ও ফুল। শিক্ষকরা যদি শক্ত ভিত গড়ে দেন, তবে জাতি এগিয়ে যাবে।’‌ তিনি আরও যোগ করেন, ‘‌শ্রেণিকক্ষে প্রবেশের আগে প্রতিটি শিক্ষক নতুন কিছু দেওয়ার চেষ্টা করেন। শিক্ষকতা পেশায় মানসিক, শারীরিক ও আবেগের শক্তি থাকা অত্যন্ত জরুরি। শিক্ষকরা জ্ঞান ও মূল্যবোধ গড়ে তোলেন। ছাত্রছাত্রীদের জীবন আলোকিত করে তোলেন। তারাই জাতির মেরুদণ্ড।’‌ মুখ্যমন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ঘোষিত জাতীয় শিক্ষা নীতি ইতিমধ্যেই ত্রিপুরায় বাস্তবায়ন হয়েছে। এর পাশাপাশি রাজ্যের প্রেক্ষিতে একাধিক নতুন উদ্যোগও নেওয়া হচ্ছে। রাজ্যভিত্তিক শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, অতীতে ডিএ ও ডিআরের দাবিতে রাজ্যের কর্মচারীদের আন্দোলনে রাস্তায় নামতে হয়েছে। কিন্তু বর্তমান সরকার কর্মচারীদের স্বার্থ সুরক্ষিত রাখার জন্য আন্তরিকভাবে কাজ করছে। তিনি স্পষ্ট জানান, ‘‌আগামী দিনে আমরা কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের ডিএ–ডিআর ব্যবধান হ্রাস করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা চালাচ্ছি।’‌ শিক্ষক দিবস উপলক্ষে রাজ্যের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ড. অতুল দেববর্মাকে পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর সম্মান, সমাজসেবী সমীর চক্রবর্তীকে ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি সম্মান এবং ডিসি পাড়া হেমন্ত স্মৃতি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা প্রণতি দেববর্মাকে মহারানী তুলসীবতি সম্মান প্রদান করেন মুখ্যমন্ত্রী। শিক্ষা দপ্তরের উদ্যোগে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য পদ্মশ্রী ড. অরুণোদয় সাহা, শিক্ষা দপ্তরের বিশেষ সচিব রাভেল হেমেন্দ্র কুমার, উচ্চশিক্ষা অধিকর্তা অনিমেষ দেববর্মা, এসসিইআরটির অধিকর্তা এল. ডার্লং, ককবরক ও অন্যান্য ভাষা দপ্তরের অধিকর্তা আনন্দ হরি জমাতিয়া, শিক্ষা অধিকর্তা এনসি শর্মা সহ রাজ্যের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও অন্যান্য আমন্ত্রিত অতিথিবর্গ।

     
  • Link to this news (আজকাল)