• বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যেই পড়ুয়াকে '৫০-৬০ বার' চড়! ভিডিও ভাইরাল হতেই হুলস্থূল...
    আজকাল | ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: গত মাসে লখনউয়ের অ্যামিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের আইনের এক ছাত্রকে তাঁর সহপাঠীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্কিং লটে একটি গাড়ির ভেতরে "৫০-৬০ বার" চড় মেরেছে বলে অভিযোগ। ঘটনাটির ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। সেখানে দেখা গিয়েছে, গত ২৬শে আগস্ট শিখর মুকেশ কেশরওয়ানি তাঁর এক বন্ধুর সঙ্গে ক্লাসে যোগ দিতে গাড়িতে করে এলে তাঁকে চড় মারা হয়েছে। 

    ঘটনার পর পরই হামলার কারণ জানা যায়নি। অ্যামিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে কোনও বিবৃতি মেলেনি।

    নির্যাতিত শিখরের বাবা মুকেশ কেশরওয়ানির অভিযোগের ভিত্তিতে দায়ের করা এফআইআর-এ পাঁচ শিক্ষার্থী - আয়ুষ যাদব, জাহ্নবী মিশ্র, মিলায় ব্যানার্জি, বিবেক সিং এবং আর্যমান শুক্লা-র নাম উল্লেখ করা হয়েছে।

    ভুক্তভোগীর বাবার মতে, এই ঘটনার ফলে তাঁর ছেলে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে এবং সে আর কলেজে যেতে চাইছে না।   

    হামলার বিস্তারিত তথ্য প্রদান করে মুকেশ বলেন, ২৬শে আগস্ট তাঁর ছেলে কলেজে যাচ্ছিল, ঠিক সেই সময় হানহেমান চৌরাহা থেকে তাঁর বন্ধু সৌম্য সিং যাদব তাঁকে তাঁর গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়।

    ক্যাম্পাসের পার্কিং লটে পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গেই অভিযুক্ত ছাত্রটি ঘটনাস্থলে এসে শিখরকে বলেছিল যে, তাঁদের তাঁর সঙ্গে কোনও একটা বিষয়ে কথা বলা দরকার। এরপর শিখরকে তাঁরা সৌম্যর গাড়িতে তুলে নেয়। এর পরবর্তী ৪৫ মিনিট ধরে ভুক্তভোগীকে হুমকি ও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। তাঁর আরও সংযোজন, "১১ই আগস্ট, আমার ছেলের লিগামেন্ট সার্জারি করা হয়েছিল। সে লাঠির সাহায্যে হাঁটছিল।" তারপর জাহ্নবী মিশ্র এবং আয়ুষ যাদব আমার ছেলেকে কমপক্ষে ৫০ থেকে ৬০ বার চড় মারেন এবং বাবা-মা তুলে গালিগালাজ করেন। ওরা আমাদেরও হত্যার হুমকি দেয়। ঘটনার সময়ে বিবেক সিং এবং মিলা ব্যানার্জি আক্রমণের ভিডিও রেকর্ড করে এবং ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে দেয়। তাঁরা আমার ছেলের ফোনও ভেঙে ফেলে। আমি যখন কলেজে যাই, তখন তাঁরা আমাকে হুমকি দেয় এবং কলেজে আসতে বারন করে দেয়।  এরা আমাকেও একইভাবে আক্রমণের হুঁশিয়ারি দিয়েছিল।"  

    অভিযোগকারী অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

    ভাইরাল ভিডিওটিতে কী দেখানো হয়েছে?

    ১০১ সেকেন্ডের ভিডিওটিতে, সামনের যাত্রীর আসনে থাকা একজন ছাত্রীকে শিখরের বাম গালে ক্রমাগত চড় মারতে দেখা যাচ্ছে এবং প্রতিবার আক্রমণ থেকে পালানোর চেষ্টা করার সময় তাঁকে তাঁর হাত নামাতে (হাত নীচে করো, তোমার হাত নামিয়ে দাও) বলতে দেখা যাচ্ছে।

    শিখরের ডান পাশে থাকা একজন ছাত্রকে বাধা দিতে দেখা যাচ্ছে এবং আইনের ছাত্রকে তাঁর হাত দূরে রাখতে বলা হচ্ছে। এক পর্যায়ে, সে আক্রমণাত্মকভাবে শিখরের ডান হাত ঠেলে সরিয়ে দেয় এবং তার ডান গালে একটি আঘাত করে। তবে শিখর দমতে নারাজ ছিল।  

    গাড়ির ভেতরে থাকা বাকি ছাত্ররা যাকে আয়ুশ বলে সম্বোধন করে, সেই ছাত্রটিকে শিখরকে গালিগালাজ করতে শোনা যায়।

    এরপর ছাত্রীটি শিখরের মুখোমুখি হয়ে বলে, "তুমি কী বললে? চরিত্র? চরিত্র?" এবং আরও কয়েকবার তাঁকে থাপ্পড় মারতে থাকে।

    আয়ুশ আবার বাধা দেয়। এবং শিখরকে তার হাত সরিয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। "আগার ম্যাঁ মারনা শুরু করঙ্গা... হাত নীছে কর (যদি আমি মারতে শুরু করি, তোমার হাত নিচে রাখো)," তাঁকে ভুক্তভোগীর দিকে চিৎকার করতে শোনা যায়।

    "চরিত্র কা বোলা থা... হাত নীছে কর... তুমি জাহ্নবীর কথা বলবে... তুমি সৌম্যর কথা বলবে...," সে বলে, শিখরকে চড় মারতে থাকে এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে।

    গাড়ির আরেকজন আরোহী, যার মুখ দেখা যাচ্ছিল না এবং সম্ভবত ভিডিওটি রেকর্ড করছিল, তাঁকে বলতে শোনা যায় যে- শিখর ক্ষমা চেয়েছে এবং আয়ুশকে আক্রমণ বন্ধ করতে বলে।

    তবে আয়ুশ নির্লিপ্ত ছিল এবং শিখরকে আক্রমণ করতে থাকে। সে তাঁর বন্ধু আর্যমানকে শিখরের বাম হাত ধরে রাখতে বলে এবং তারপর আবারও তাঁকে আরও কয়েকবার চড় মারে। তাঁর অন্তত দুই বন্ধু তাঁকে না বলা পর্যন্ত সে থামে না।
  • Link to this news (আজকাল)