বড় সাফল্য কলকাতা পুলিশের, ভুয়ো ডিরেক্টর সেজে কোটি টাকা হাতিয়েছিল প্রতারকরা, নাসিক থেকে গ্রেপ্তার অভিযুক্ত...
আজকাল | ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: কোম্পানির ভুয়ো ডিরেক্টর সেজে কোটি টাকার প্রতারণার অভিযোগে ফের এক অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করল কলকাতা পুলিশ। বিশেষ অভিযান চালিয়ে মহারাষ্ট্রের নাসিক থেকে ধরা পড়েছে যোগেশ সুর্যবংশী (৩৯)। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, স্টেসালিট ইনফোটেক প্রাইভেট লিমিটেড নামক এক সংস্থার ডিরেক্টর হেমন্ত খেমকারের নামে ভুয়ো হোয়াটসঅ্যাপ আইডি তৈরি করেছিল অভিযুক্তরা। সেই ভুয়ো নম্বর থেকে হিসাবরক্ষককে একাধিক নির্দেশ দেওয়া হয়। অভিযোগ, ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর থেকে ২০২৫ সালের ৬ জানুয়ারি পর্যন্ত নির্দেশ অনুযায়ী চারটি ভিন্ন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে মোট ১.৫৫ কোটি টাকা স্থানান্তর করেন ওই হিসাবরক্ষক।
পরে সেই অর্থ বিভিন্ন অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ঘুরিয়ে ফেলা হয়। এর ফলে বড় অঙ্কের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ে ওই সংস্থা। প্রতারণার মাধ্যমে অভিযুক্তরা বিপুল অর্থ হাতিয়ে নেয়। এই মামলায় তদন্তে নেমে আগে ভিসঞ্জয় কুমার, জাবির আলি এবং অমিত চাভন নামক তিন অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছিল কলকাতা পুলিশ। তাদের জেরা করেই উঠে আসে যোগেশ সুর্যবংশী নামে আরও এক অভিযুক্তের নাম। আদালতের নির্দেশে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের একটি বিশেষ দল নাসিকে পৌঁছয়। স্থানীয় পুলিশের সহযোগিতায় শুক্রবার ভোরে অমৃতধাম এলাকার কালাস্কার রোডে তার বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয় যোগেশকে। পুলিশ সূত্রে খবর, প্রাথমিক জেরায় অভিযুক্ত স্বীকার করেছে, অভিযুক্ত অমিত চাভনের জন্য ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট জোগাড় করেছিল এবং তাকে নিয়ে গিয়েছিল দিল্লিতে।
সেখান থেকেই প্রতারণার পরিকল্পনা ও কার্যক্রম চালানো হত। যোগেশ তদন্তকারীদের কাছে আরও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে বলে দাবি পুলিশের। গ্রেপ্তার হওয়া যোগেশকে নাসিক আদালতে তোলা হয়। কলকাতায় এনে জেরা করার জন্য ট্রানজিট রিমান্ড চেয়েছে পুলিশ। পুলিশের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক জানিয়েছেন, ‘এটি একটি আন্তঃরাজ্য সাইবার প্রতারণা চক্র। আরও কেউ যুক্ত আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যোগেশ সুর্যবংশীর গ্রেপ্তার তদন্তকে আরও এগিয়ে নেবে।’ ঘটনার জেরে ব্যবসায়ী মহলে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ধরনের প্রতারণা রোধে কর্পোরেট সংস্থাগুলিকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আরও জোরদার করতে হবে। প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক থেকে গাড়ি ঋণের নামে বিপুল টাকা প্রতারণার ঘটনায় বড় সাফল্য পেয়েছিল কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ।
এই ঘটনায় জুলাই মাসে চার জনকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। পরে প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোড থেকে আরও দু’জন অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়। ধৃতরা দীর্ঘদিন ধরে পলাতক ছিলেন। ব্যাঙ্ক জালিয়াতির মামলায় এই নিয়ে মোট ছয় জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পুলিশ জানায়, ঠাকুরপুকুর এলাকায় ওই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক থেকে ২০২২ সালে গাড়ি কেনার নাম করে ঋণের আবেদন করেছিলেন কয়েকজন। পূর্বপরিকল্পিতভাবে তৈরি ভুয়ো কাগজপত্র ব্যাঙ্কে জমা দিয়েছিলেন অভিযুক্তরা। এইসব নথি ব্যবহার করে অভিযুক্তরা চারটি গাড়ি ঋণের জন্য আবেদন করেন এবং ব্যাঙ্কের সঙ্গে লোন-কাম-হাইপোথিকেশন চুক্তি করেন। মোট ঋণের পরিমাণ ছিল ৫৫.৩৪ লক্ষ টাকা। ঋণ নেওয়ার পরেই ভুয়ো নথির ব্যাপারটি নজরে আসে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের। ম্যানেজারের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নামে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ।