প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে গুরুত্বপূর্ণ মোড়। শনিবার ইডির বিশেষ আদালতে আত্মসমর্পণ করলেন রাজ্যের কারা এবং ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পমন্ত্রী তথা বীরভূমের বোলপুরের তৃণমূল বিধায়ক চন্দ্রনাথ সিনহা। এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) তাঁর হেফাজতের আবেদন করলেও, আদালত আপাতত সেই আবেদন খারিজ করে শর্তসাপেক্ষে জামিন মঞ্জুর করেছে।
চন্দ্রনাথের বিরুদ্ধে এই মামলায় ইতিমধ্যেই চার্জশিট জমা দিয়েছে ইডি। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের পর রাজ্যের এই মন্ত্রীর বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল হয়েছে। এর আগে তাঁর বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে নগদ ৪১ লক্ষ টাকাউদ্ধার করেছিল কেন্দ্রীয় সংস্থার আধিকারিকেরা। এরপর দু’বার ইডির তলবে অনুপস্থিত ছিলেন চন্দ্রনাথ, যদিও গত মাসে তিনি আচমকাই হাজিরা দেন। তবে তখন তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল কি না, তা স্পষ্ট নয়। তার আগেই ইডি চার্জশিট দিয়ে দিয়েছিল।
শনিবার আদালতে আত্মসমর্পণ করে ব্যক্তিগত বন্ডে জামিনের আবেদন করেন চন্দ্রনাথ সিনহা। যদিও ইডি দাবি করে, তদন্তের স্বার্থে তাঁকে সাত দিনের হেফাজতে প্রয়োজন। শুনানি শেষে বিচারক ব্যক্তিগত ১০ হাজার টাকার বন্ডে জামিন মঞ্জুর করেন মন্ত্রীকে। তবে আদালতের তরফে বেশ কিছু কড়া শর্ত আরোপ করা হয়েছে। জানানো হয়েছে, মামলার পরবর্তী শুনানি না হওয়া পর্যন্ত চন্দ্রনাথ সিনহা নিজের বিধানসভা কেন্দ্র বোলপুর ও কলকাতা ছাড়া আর কোথাও যেতে পারবেন না। পাশাপাশি, তাঁকে তদন্তে পূর্ণ সহযোগিতা করতে হবে বলেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ইডির আইনজীবী ধীরাজ দ্বিবেদী বলেন, ‘আমরা হেফাজতের জন্য দরখাস্ত করেছি। সাত দিনের জন্য ওঁকে হেফাজতে চেয়েছিলাম। আগামী ১৬ তারিখ তার শুনানি হবে। তাঁর মধ্যে উনি কলকাতা এবং নিজের বিধানসভা কেন্দ্রের বাইরে কোথাও যেতে পারবেন না।’
প্রসঙ্গত, নিয়োগ দুর্নীতিতে বলাগড়ের বহিস্কৃত তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষকে গ্রেপ্তারের পর চন্দ্রনাথ সিনহার নাম উঠে আসে। ইডির তলবের পরেও চন্দ্রনাথ কয়েকবার তা এড়িয়ে যায়। কিন্তু পরে তিনি ইডির কাছে হাজিরা দিয়ে প্রয়োজনীয় নথিপত্র জমা দিয়েছেন বলে জানিয়েছিলেন তিনি। ইডির দাবি, তাঁর অ্যাকাউন্টে প্রায় দেড় কোটি টাকার অস্বচ্ছ লেনদেনের প্রমাণ মিলেছে। এইসমস্ত তথ্য চার্জশিটে পেশ করেছে ইডি আধিকারিকেরা। এমনকি ইডির নির্দেশ অমান্য করারও কথা উল্লেখ রয়েছে চার্জশিটে।