• ‘ওকে কেউ খুঁজে দিল না’, অঝোরে কান্না তেহট্টের নিহত বালকের মায়ের, শোকে পাথর বাবা
    প্রতিদিন | ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • রমণী বিশ্বাস, তেহট্ট: এখনও ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে খেলনা। ঘরে ভর্তি পোশাক, বইপত্র। ছেলে যে নেই তা মানতেই পারছেন না তেহট্টের নিশ্চিন্তপুরের নিহত বালকের মা। অঝোরে কেঁদেই চলেছেন তিনি। মাঝে মাঝে জ্ঞানও হারাচ্ছেন তিনি। একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে শোকে পাথর ছাত্রের বাবা।

    শুক্রবার স্কুল ছুটি ছিল। ছুটি থাকলে সারাদিন খেলাধূলাই করত স্বর্ণাভ। শুক্রবার দুপুরের খাওয়াদাওয়ার পর ৩টে নাগাদ বেরিয়ে যায়। সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে খেলে বাড়ি ফিরত সে। শুক্রবার অবশ্য আর বাড়ি ফেরা হয়নি স্কুলছাত্রের। উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। শুরু হয় খোঁজাখুঁজি। ছাত্রের মা বলেন, “পিছনে গেট দিয়ে গেলাম। স্বর্ণাভ, স্বর্ণাভ বলে ডাকলাম। যাদের বাড়িতে যায় সেখানে গেলাম। ডাকলাম। সবাই আছে। শুধু আমার ছেলেটাই ছিল না। সারারাত খোঁজা হল। থানায় ডায়েরি করা হয়। সকালেও খুঁজছিল। কেউ কেউ বলে উৎপল অপহরণ করেছিল। ওকে চেপে ধরে জিজ্ঞেস করে। তখন নাকি ও স্বীকার করে ছেলেকে মেরে ফেলে দিয়েছে।” অঝোরে কাঁদতে কাঁদতে তিনি বলেন, “কেউ আমার ছেলেটাকে খুঁজে দিল না।” কাঁদতে কাঁদতে মাঝে মাঝে জ্ঞান হারাচ্ছেন তিনি। ছাত্রের বাবাও শোকস্তব্ধ। বলেন, “অভিযোগ করা মাত্র পুলিশ এসেছিল রাতে। স্কুল না থাকলে একটু খেলতে যায়। সেরকম গিয়েছিল। কী যে হল!”

    বালক খুনের ঘটনায় নাম জুড়েছে প্রতিবেশী উৎপল এবং সোমা বিশ্বাসের। গণপিটুনিতে মৃত্যু হয়েছে তাঁদেরও। অভিযোগ, শিশুপাচারের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে যুক্ত ছিলেন উৎপল। স্বর্ণাভকেও সম্ভবত পাচার করতে চান তিনি। তাতে বাধা পাওয়ায় এই কাজ করেছে। তবে কারও কারও দাবি, উৎপলের সঙ্গে পুরনো বিবাদ ছিল নিহত বালকের পরিবারের। যদিও সে দাবি খারিজ করে দিয়েছেন নিহতের বাবা। তিনি বলেন, “আমার সঙ্গে ওর কোনও ঝুট ঝামেলা নেই। সন্দেহ ছিল না প্রথমে। পরে দেখলাম ওর বাড়ির কাছ থেকে দেহ পেলাম। শুনলাম ওর স্ত্রী নাকি বলেছে আমরাই মেরেছি।” সত্যি উৎপল যুক্ত কিনা, সে বিষয়ে পুলিশের তরফে কিছু জানানো হয়নি। আপাতত নিহত বালক, উৎপল এবং সোমার দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট হাতে আসার পরই বালকের মৃত্যু সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যাবে।
  • Link to this news (প্রতিদিন)