আজকাল ওয়েবডেস্ক: গণেশ উৎসব চলাকালীন মুম্বই পুলিশকে হোয়াটসঅ্যাপে একাধিক বিস্ফোরণের হুমকি দিয়ে “১ কোটি মানুষ হত্যা করা হবে” দাবি করার অভিযোগে নয়ডায় ৫০ বছর বয়সী এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অভিযুক্তকে হুমকি বার্তা পাঠাতে সিম কার্ড সরবরাহের অভিযোগে আরেকজনকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার মুম্বই ট্রাফিক পুলিশের হোয়াটসঅ্যাপ হেল্পলাইনে পাঠানো ওই বার্তায় দাবি করা হয়, ১৪ জন পাকিস্তানি জঙ্গি শহরে ঢুকে পড়েছে এবং তারা ৪০০ কেজি আরডিএক্স ৩৪টি গাড়িতে পুঁতে রেখেছে।
এই বার্তা পাওয়ার পরই নিরাপত্তা নিয়ে হইচই শুরু হয়, কারণ মুম্বই পুলিশ তখন গনেশ চতুর্দশী উপলক্ষে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করছিল। শনিবারের এই দিনেই ১০ দিনের গণেশ চতুর্থী উৎসবের সমাপ্তি হয় প্রতিমা বিসর্জনের মাধ্যমে। সূত্রের খবর, অভিযুক্তের নাম অশ্বিনিকুমার সুরেশকুমার সুপ্রা, যিনি বিহারের পাটনার বাসিন্দা। তিনি মোবাইল ফোন বন্ধ করে রেখেছিলেন। স্থানীয় গোয়েন্দা তথ্য, নজরদারি এবং একটি মুদির দোকান থেকে পাওয়া সিসিটিভি ফুটেজের ভিত্তিতে নয়ডা সেক্টর ৭৯ থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাঁকে মুম্বই পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। অশ্বিনিকুমার একজন জ্যোতিষী ও ব্যবসায়ী। বর্তমানে তিনি স্ত্রী থেকে আলাদা হওয়ার মামলা করেছেন।
মুম্বই পুলিশের যুগ্ম কমিশনার সিপি রাজীব নারায়ণ মিশ্র জিজ্ঞাসাবাদের সময় প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে নয়ডা পুলিশ কমিশনার লক্ষ্মী সিং-এর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এরপরই স্পেশাল উইপনস অ্যান্ড ট্যাকটিকস টিম গঠন করে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মুম্বই পুলিশ জানিয়েছে, পাঠানো হুমকি বার্তায় ‘লস্কর-ই-জিহাদি’ নামে একটি সংগঠনের উল্লেখ রয়েছে। শুক্রবার এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, “ট্রাফিক পুলিশ এর আগেও এই ধরনের হুমকি বার্তা পেয়েছে। আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। গুরুত্বপূর্ণ স্থানে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে এবং কম্বিং অপারেশন চলছে। মুম্বইকারদের অনুরোধ করা হচ্ছে গুজবে কান দেবেন না এবং কোনও সন্দেহজনক কিছু দেখলে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে জানান। অ্যান্টি-টেররিজম স্কোয়াডকেও (ATS) এই হুমকি বার্তার বিষয়ে জানানো হয়েছে।
প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে এটি একটি ভুয়ো হুমকি। তবে প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণের মাধ্যমে বার্তার উৎস খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। কর্মকর্তারা বলেন, বিসর্জনের দিনে রাস্তায় বিপুল ভিড় হবে, তাই সর্বোচ্চ সতর্কতা নেওয়া হচ্ছে। এরপর অজ্ঞাতপরিচয় অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধি (Bharatiya Nyaya Sanhita)-এর ৩৫১ ধারা (অপরাধমূলক ভয় দেখানো) এবং উপধারা ২, ৩ ও ৪-এর অধীনে ওরলি থানায় মামলা দায়ের করা হয়। মূর্তি বিসর্জনের সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় শহরে ২১ হাজারেরও বেশি পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। শনিবার লাখো মানুষ রাস্তায় নামবেন, যখন মুম্বই সমুদ্র, অন্যান্য জলাধার ও কৃত্রিম পুকুরে গণেশ প্রতিমার বিসর্জন দেবে।