আজকাল ওয়েবডেস্ক: হাতে আর মাত্র কয়েক মাস। আগামী নভেম্বরেই হয়তো বিহারে বিধানসভা ভোট হবে। রাজনৈতিক দলগুলি প্রচারের ঝাঁঝ বাড়িয়েছে। কিন্তু, অস্বস্তিতে এনডিএ! আসন রফা নিয়ে বিজেপি এবং জেডিইউ-এর মধ্যে টানাপোড়েন তুঙ্গে। ফলে এখনও শাসক জোটের আসন রফা চূড়ান্ত করতে হিমশিম অবস্থা।
গতবাররে ভোটে বিহারে একক সংখ্য়াগরিষ্ঠ দল ছিল বিজেপি। আসন কম পেলেও নীতীশ কুমারই ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এবারও এনডিএর মুখ সেই নীতীশই। তাঁর নেতৃত্বেই লড়বে এনডিএ। কিন্তু, এবার দলের আসন সংখ্যা বাড়াতে মরিয়া জেডিইউ নেতৃত্ব। ফলে জোটের আসন রফা নিয়ে পদ্ম বাহিনীকে কড়া শর্ত বেঁধে দিয়েছে জেডিইউ।
নীতীশ কুমারের নেতৃত্বাধীন দলের দাবি, গেরুয়া শিবিরের চেয়ে বেশি আসনে এবারের ভোট লড়াই করবে তির চিহ্নধারী দলটি। এমনকি সেটা একটা আসন হলেও! একজন প্রবীণ বিজেপি নেতা বলেছেন, "এখন পর্যন্ত আমদের যা মনে হচ্ছে তা হল, জেডি(ইউ) অতিরিক্ত আসন চায়, এমনকি যদি বিজেপির চেয়ে একটি বেশিও হয় তাহলেই হবে, যাতে (বিহারের মুখ্যমন্ত্রী) নীতীশ (কুমার)জির জনপ্রিয়তা এবং বিজেপি নেতৃত্বের তাঁর ক্ষমতার উপর আস্থা সুসংহত হয়।"
জেডি(ইউ) সূত্র জানিয়েছে যে, বিজেপির চেয়ে কমপক্ষে একটি আসন বেশি পাওয়া হল 'রাজনৈতিক প্রতীকীকরণ'।
একজন প্রবীণ জেডি(ইউ) নেতা বলেছেন, "লোকসভা নির্বাচন নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে হয়েছিল। সেই সময় বিজেপি ১৭টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল এবং আমরা ১৬টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলাম। বিধানসভা নির্বাচন নীতিশ কুমারকে মুখ্যমন্ত্রী মুখ হিসাবে তুলে ধরে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা হচ্ছে। ফলে আমাদের আরও একটি আসন পাওয়া স্বাভাবিক। এটা নীতীশ কুমারের নেতৃত্ব এবং এনডিএ-র মধ্যে সমন্বয় উভয় ক্ষেত্রেই ভোটারদের কাছে সঠিক বার্তা দেবে।"
শরিকি বিবাদের মধ্যেই চিরাগ পাসোয়ান নেতৃত্বাধীন এলজেপি (আরভি) (পাঁচ জন সাংসদ রয়েছে) আসন্ন নির্বাচনে ৪০টি আসন দাবি করছে। তবে সূত্র জানিয়েছে যে, বিজেপি এবং জেডি(ইউ) তাদের প্রাপ্ত আসন সংখ্যার অর্ধেকের বেশি দেওয়ার প্রয়োজন বোধ করছে না।
একজন বিজেপি নেতা বলেছেন, "রাজ্যে চিরাগের উচ্চাকাঙ্ক্ষা এমনভাবে ভারসাম্যপূর্ণ করা দরকার যাতে জেডি(ইউ) প্রভাবিত না হয়।" সূত্র জানিয়েছে, উপেন্দ্র কুশওয়াহার জাতীয় লোক মঞ্চ এবং জিতন রাম মাঞ্জির হিন্দুস্তান আওয়াম মোর্চার মতো অন্যান্য শরিকদেরও তাদের সংখ্যা নির্ধারণের পরে স্থান দেওয়া হবে।
২০২০ সালের বিধানসভা নির্বাচনে, মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের নেতৃত্বে জেডি(ইউ) ১১৫টি আসনে এবং বিজেপি ১১০টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল। সেই সময়ে, এনডিএ-র অংশ বিকাশশীল ইনসান পার্টি (ভিআইপি) ১১টি আসনে এবং এইচএএম (এস) সাতটি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল। এলজেপি (তখন সম্মিলিত) ১৩৫টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল। বিজেপি সবচেয়ে শক্তিশালী অংশীদার হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে, জেডি(ইউ)-এর ৪৩ আসনের তুলনায় ৭৪টি আসন জিতেছে।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ-র সভাপতিত্বে নয়াদিল্লিতে বিহার নির্বাচন নিয়ে এক বৈঠকের সমাপ্তির পর, বিজেপির জাতীয় নেতৃত্ব "ঐক্যবদ্ধ এনডিএ ফ্রন্ট" তুলে ধরতে অব্যাহত রাখার নির্দেশ দিয়েছিল। বিজেপি সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, তারা বিধানসভা জুড়ে যৌথ কর্মী সম্মেলন করবে।