লালকেল্লা থেকে চুরি গেল ১ কোটি টাকার সোনা! ঘটনায় চাঞ্চল্য, নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন...
আজকাল | ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: দিল্লির ঐতিহাসিক লালকেল্লায় চাঞ্চল্যকর এক চুরির ঘটনা ঘটেছে। জৈন ধর্মীয় উৎসবের মাঝেই প্রায় এক কোটি টাকার সোনার কলস উধাও হয়ে যায়। ওই কলসটি ছিল প্রায় ৭৬০ গ্রাম খাঁটি সোনা দিয়ে তৈরি এবং তার উপর বসানো ছিল প্রায় ১৫০ গ্রাম হীরা, রুবি ও পান্না। প্রতিদিনের পূজার কাজে ব্যবহৃত এই মূল্যবান কলসটি দিল্লির প্রখ্যাত ব্যবসায়ী সুধীর জৈনের ব্যক্তিগত সম্পত্তি বলে জানা গেছে। তিনি প্রতিদিন পূজার জন্য কলসটি অনুষ্ঠানে নিয়ে যেতেন।
ঘটনাটি ঘটে চলতি সপ্তাহে, ‘দশলক্ষণ মহাপর্ব’-এর সময়। ওই অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা। তাঁকে স্বাগত জানানোর ব্যস্ততার মধ্যেই মঞ্চ থেকে কলসটি চুরি হয়ে যায়। আনুষ্ঠানিকতা শেষ হওয়ার পর পূজা পুনরায় শুরু হলে দেখা যায়, কলসটির আর কোনও খোঁজ নেই। দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, অনুষ্ঠানস্থলের সিসিটিভি ফুটেজে এক সন্দেহজনক ব্যক্তির গতিবিধি ধরা পড়েছে। ইতিমধ্যেই সন্দেহভাজনকে চিহ্নিত করা হয়েছে এবং খুব শিগগিরই গ্রেপ্তারের সম্ভাবনা রয়েছে। পুলিশ মনে করছে, কয়েক দিনের মধ্যেই মামলার তদন্তে বড় সাফল্য মিলবে।
এই জৈন উৎসবটি আগামী ৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত লালকেল্লায় চলবে। কিন্তু এর মধ্যেই এমন ঘটনা ঘটায় নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে। লালকেল্লা শুধু ইউনেস্কোর ঘোষিত ঐতিহ্যবাহী স্থাপত্যই নয়, জাতীয় গুরুত্বের এক প্রতীক। এখানেই প্রতি বছর স্বাধীনতা দিবসে প্রধানমন্ত্রী জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। এমন জায়গায় দুষ্কৃতীদের এই দুঃসাহসিক কাজ নিরাপত্তা ব্যবস্থার বড়সড় ফাঁকফোকরকে সামনে নিয়ে এসেছে। এটি লালকেল্লার নিরাপত্তা ঘিরে প্রথম বিতর্ক নয়। এর আগে স্বাধীনতা দিবসের প্রস্তুতিমূলক মহড়ায় এক নকল বোমা শনাক্ত করতে ব্যর্থ হওয়ায় সাতজন দিল্লি পুলিশকর্মী, যার মধ্যে ছিলেন কনস্টেবল ও হেড কনস্টেবল, তাঁদের বরখাস্ত করা হয়েছিল।
কলস চুরির এই ঘটনা ঘিরে বিভিন্ন মহল থেকে কড়া প্রতিক্রিয়া এসেছে। ইতিহাসবিদ থেকে নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ—সবাই বলছেন, দেশের অন্যতম প্রতীকী স্থাপত্যে এরকম নিরাপত্তা ব্যর্থতা কোনওভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। বিশেষত বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান কিংবা গণসমাবেশের সময় নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী করা জরুরি। অনেকেই মনে করছেন, এ ধরনের দুঃসাহসিক চুরি প্রতিরোধ করতে হলে নিরাপত্তা প্রটোকলে ব্যাপক পরিবর্তন আনা প্রয়োজন। লালকেল্লার মতো ঐতিহাসিক স্থানে কোটি টাকার কলস চুরি নিছক একটি অপরাধের ঘটনা নয়; এটি নিরাপত্তা ব্যবস্থার গুরুতর ব্যর্থতা। এখন দেখার বিষয়, দিল্লি পুলিশ কত দ্রুত এই মামলার সমাধান করতে পারে এবং ভবিষ্যতের জন্য কী ধরনের কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়।