মিল্টন সেন, হুগলি: সিঙ্গুরের আক্ষেপ মিটবে এবার। জেলায় ছোট গাড়ি তৈরির কারখানা হতে চলেছে। এবার শুধু সময়ের অপেক্ষায়। পোলবার সুগন্ধায় তৈরি হতে চলছে নতুন ইলেকট্রিক চার চাকা গাড়ি তৈরির কারখানা। শনিবার সুগন্ধায় এসে এই কথা ঘোষণা করলেন তৃণমূলের প্রাক্তন রাজ্যসভার সাংসদ কুণাল ঘোষ।
কুণাল ঘোষ জানান, সুগন্ধ্যার 'সাইনাসোর' কোম্পানি শীঘ্রই ওই ইলেকট্রিক চার চাকার গাড়ি উৎপাদন শুরু করবে। এদিন একইসঙ্গে উদ্বোধন হয় সংস্থার নতুন 'টিফোজ ই-রিক্সার। এদিন দিল্লি রোড সংলগ্ন কারখানা প্রাঙ্গণে আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী জাভেদ খান, উজ্জ্বল বিশ্বাস প্রমুখ। এদিন কুণাল ঘোষ নতুন এই কারখানা তৈরির কথা ঘোষণা করে বলেন, 'এর ফলে এই এলাকার অর্থনৈতিক মানচিত্র অনেকটাই বদলে যাবে। বহু বেকার যুবক যুবতী চাকরি পাবেন। সিঙ্গুরে টাটার ন্যানো কারখানা না হওয়ার আক্ষেপ মিটবে।'
কুণাল ঘোষ আরও জানান, কারখানা গড়তে রাজ্য সরকার সর্বতোভাবে সহায়তা করবে। আগামী বছর জানুয়ারি মাসে নতুন এই ইলেকট্রিক চার চাকার গাড়ি বাজারে আসবে। কারখানার ১২ একর জমিতে টিফোজ বিএলডিসি পাখা তৈরি হচ্ছে দুই বছর ধরে। সিঙ্গুরে এক লাখি ন্যানো গাড়ি তৈরি হয়নি। সেটা শিল্পের বিতর্কে নয়। সেটা ছিল জমি বিতর্ক। তিন ফসলি জমিতে শিল্পের প্রতিবাদ হয়েছিল। সুগন্ধায় দিল্লি রোডের পাশে বারো একর জমি রয়েছে সাইনোসোর সংস্থার। সেখানেই এক লাখি ইলেকট্রিক চার চাকা গাড়ি তৈরি হোক।
কুণাল ঘোষ বলেন, 'তেল লাগছে না, দক্ষ শ্রমিক রয়েছেন। যাঁরা ব্যাটারির গাড়ি তৈরি করতে পারেন। তাই কম দামে চার চাকা গাড়ি হতে পারে। এনিয়ে আলোচনা হয়েছে।' কোম্পানির কর্ণধার শান্তনু ঘোষ জানান, দিওয়ালির পর গাড়ির লুক বেরোবে। জানুয়ারি মাসে গাড়ি লঞ্চ হতে পারে। সিঙ্গুরে ন্যানো না হওয়ার আক্ষেপ এবার মিটবে সুগন্ধায় তৈরি এক লাখি গাড়িতে। অনুসারী শিল্প তৈরি হবে। এলাকার ভোল বদলে যাবে।
উল্লেখ্য, হুগলির সুগন্ধ্যার এই সাইনোসোর কোম্পানি ইতিমধ্যেই বিএলডিসি ফ্যান তৈরি করেছে। যা ইতিমধ্যেই বাজারে ব্যাপক বিক্রি হচ্ছে। এদিন কোম্পানির নতুন 'ইলেকট্রিক থ্রি হুইলার' - এর আনুষ্ঠানিক প্রকাশ হয়। সংস্থার পক্ষে সম্রাজ্ঞী ঘোষ বলেন, বাজারে যে 'ই রিক্সা' পাওয়া যাচ্ছে তার থেকে অনেক কম দামে পাওয়া যাবে এই 'ই রিক্সা'। আধুনিক ডিজাইনের এই গাড়িও অচিরেই বাজার দখল করবে বলে জানান তিনি।
নতুন এই ইলেকট্রিক গাড়ি ডিলার নেটওয়ার্কের মাধ্যমে সারা বাংলায় ছড়িয়ে দেওয়া হবে। কোম্পানির তরফে জোর দেওয়া হচ্ছে দামের উপর। প্রথমত, মধ্যবিত্তের কথা মাথায় রেখে দাম রাখা হবে। দ্বিতীয়ত, যেহেতু এটা ইলেকট্রিক গাড়ি, তাই চার্জিং টেকনোলজি এমনভাবে করা হচ্ছে, যাতে অন্তত ১৮ ঘণ্টা ব্যাটারিতে চার্জ থাকে। তৃতীয়ত, জোর দেওয়া হচ্ছে গুণগত মানের উপর। কারখানা থেকে সমস্তরকম পরীক্ষা করার পর, সরকারি সার্টিফিকেট নেওয়ার পরই বাজারে গাড়ি ছাড়া হবে।