সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শ্রীনগরের হজরতবল মাজারে অশোকস্তম্ভ সম্বলিত উদ্বোধনী ফলক ভাঙচুরের ঘটনায় উপত্যকায় বিতর্ক তুঙ্গে। এভাবে মসজিদের ভিতরে ভারতের জাতীয় প্রতীক ভাঙচুরের ঘটনায় একইসঙ্গে ধর্মীয় এবং রাজনৈতিক বিতর্ক শুরু হয়েছে। যাতে জড়িয়ে পড়েছেন বিজেপি ছাড়াও উপত্যকার আঞ্চলিক দলগুলি। ঠিক কী ঘটেছে?
জম্মু ও কাশ্মীরের হজরতবল মাজার মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষদের জন্য অত্যন্ত পবিত্র এবং শ্রদ্ধার স্থল। শুক্রবার সকালে সেখানে নমাজ পড়তে আসা একদল ব্যক্তি অশোকস্তম্ভ সম্বলিত উদ্বোধনী ফলকে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। তাঁরা এর বিরুদ্ধে স্লোগানও দিতে থাকে। এক প্রতিবাদীর বক্তব্য, মসজিদের ভিতরে ভাষ্কর্য স্থাপন করায় অনুমতি দেয় না ইসলাম। এদিকে ফলক স্থাপনের ঘটনায় রাজনৈতিক বিতর্ক শুরু হয়েছে। উপত্যকার নেতারা এটিকে ওয়াকফ বোর্ডের “ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করার নির্লজ্জ প্রচেষ্টা” বলে অভিহিত করেছেন।
ওয়াকফ বোর্ডের ভাইস চেয়ারপার্সন দারখশান আন্দ্রাবি একজন বিজেপি নেতা। ন্যাশনাল কনফারেন্সের নেতা এবং হজরতবলের বিধায়ক তনভির সাদিক বলেন, অশোকস্তম্ভ সম্বলিত ফলকটি ‘তাওহিদ’ (একেশ্বরবাদ) বিশ্বাসের বিরোধী। তনভির এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন, “আমি কোনও ধর্মীয় পণ্ডিত নই কিন্তু ইসলামে মূর্তিপূজা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ, সবচেয়ে বড় পাপ।” আরও লেখেন, “শ্রদ্ধেয় হজরতবল দরগায় একটি ভাস্কর্য স্থাপন করা (ধর্মীয়) বিশ্বাসের পরিপন্থী। পবিত্র স্থানগুলিতে কেবল তাওহিদের পবিত্রতা প্রতিফলিত হওয়া উচিত, অন্য কিছু নয়।”
অন্যদিকে বিজেপি নেতা দারখশান আন্দ্রাবি মসজিদের উদ্বোধনী ফলকে ভাঙচুর চালানো ব্যক্তিদের ‘জঙ্গি’ আখ্যা দিয়েছেন। অবিলম্বে তাদের গ্রেপ্তারিরও দাবি জানিয়েছেন। অন্যদিকে তনভির সাদিকের বিরুদ্ধে বিতর্কে ‘উসকানি’ দেওয়ার অভিযোগ এনেছেন তিনি। টুইট করেন, “আগুন ঘি দিচ্ছে সাদিক”। এই বিষয়ে ন্যাশনাল কনফারেন্স সাংসদ আগা রুহুল্লাহ মেহেদি বলেন, আন্দ্রাবির বক্তব্য “বোকা বোকা, অগ্রহণযোগ্য, এবং মানুষের প্রিয় মাজারের উপর আক্রমণ করা হয়েছে।” উল্লেখ্য, এখনও পর্যন্ত যেমন জাতীয় প্রতীক ভাঙার ঘটনা কারও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি, তেমনই মসজিদ থেকে ফলক পুরোপুরি সরিয়ে ফেলা হবে কিনা তাও জানানো হয়নি প্রশাসনের তরফে।