ক্যানিংয়ে চোর সন্দেহে ‘গণপিটুনি’তে মৃত্যু যুবকের, দলের বিধায়ককেই তোপ কাশেমের
প্রতিদিন | ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: ক্যানিংয়ে চোর সন্দেহে গণপিটুনিতে মৃত যুবকের পরিবারের পাশে তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক কাশেম সিদ্দিকী। তবে শোকার্ত পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে দলবিরোধী মন্তব্য করে বসলেন তিনি। বিধায়ক পরেশরাম দাসের বিরুদ্ধে অভিযোগও করেন। এই বিরোধী মন্তব্যে দলকে অস্বস্তিতে ফেললেন তিনি। বিষয়টি শীর্ষ নেতৃত্বকে জানিয়েছেন ক্যানিং পশ্চিমের বিধায়ক পরেশরাম দাস।
ক্যানিংয়ের এই ঘটনার চারদিন পর মৃতের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন কাশীম। কাশেম সিদ্দিকী সরাসরি স্থানীয় বিধায়ক পরেশরাম দাসকে নিশানা করেন। ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে পরেশকে হারিয়ে দেওয়ারও হুমকি দেন। এ বিষয়ে কাসেম সিদ্দিকী বলেন, “২০২৬ এ বিধানসভা নির্বাচনে এর ফল ভুগতে হবে।” শুধু তাই নয় নিহত পরিবারকে বিধায়ক কেন চাকরি বা ক্ষতিপূরণ দিলেন না তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তৃণমূল নেতা।
তবে সরাসরি কাশেম সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে কোনও মন্তব্য করেননি বিধায়ক পরেশরাম দাস। তবে কাশেমের মন্তব্য সম্পর্কে শীর্ষ নেতৃত্বকে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ” উনি যেভাবে দলের বিরুদ্ধে মন্তব্য করছেন তা দলকে জানানো হয়েছে। ২০২৬ এর বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে যেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করুন না কেন ক্যানিং পশ্চিমের মানুষ তার পাশে থাকবেন। উনি প্রকাশ্যে এইভাবে দলবিরোধী মন্তব্য না করে সমস্ত বিষয়টা দলকে জানাতে পারতেন।” মৃত যুবকের পরিবারের পাশে দাঁড়ানো নিয়ে তিনি বলেন, “আমি কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে প্রায় ১৫ দিন যাবত চিকিৎসাধীন। ওই যুবকের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছি। প্রশাসন ঘটনা অনুযায়ী ব্যবস্থা নিয়েছে। প্রশাসনিকভাবে যা যা সাহায্য করার তা করা হয়েছে। যে কোনও মৃত্যুই আমাদের কাছে দুর্ভাগ্যজনক।”
উল্লেখ্য, গত বুধবার চোর সন্দেহে ক্যানিংয়ের তালদিতে গণপিটুনিতে এক যুবকের মৃত্যু হয়। নিহত যুবকের নাম জামির আলি শেখ। তাঁর বাড়ি ঘুটিয়ারি শরীফে। নিহত যুবক পেশায় গাড়িচালক ছিলেন। তালদির বাজার সংলগ্ন একটি পাড়াতে গভীর রাতে ঘুটিয়ারির যুবককে ঘোরাফেরা করতে দেখে সন্দেহ দানা বাঁধে স্থানীয় কয়েকজনের মধ্যে। কারণ এলাকার কিছুদিন ধরে চুরি হচ্ছিল। চুরি যাচ্ছিল গৃহস্থের বিভিন্ন জিনিসপত্র। জামির আলি ধরা পড়ার পর কয়েকজন যুবক তাকেই চোর সন্দেহে মারতে শুরু করে। গণপিটুনিতে তাঁর মৃত্যু হয়।ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে গণেশ সর্দার ও বিশ্বজিৎ সাপুই নামে দুই যুবককে গ্রেপ্তারকে করেছে পুলিশ। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।