সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: উমার আগমনির বার্তা ‘থিম সং’-এ! আশ্বিনের নীল আকাশ ও সাদা মেঘের চলাফেরার নিচে কাশের দোলায় মায়ের আগমনির বার্তাও সংগীতে। তবে ‘থিম সং’ শিল্পাঞ্চলে ঢালাও প্রচলন না হলেও বেশ কয়েকটি পুজো কমিটি প্রতিবছর নতুন নতুন গান নিয়ে হাজির হয়।
শুধু অডিও নয়, ঝাঁ চকচকে ভিডিওগ্রাফিতেও এই থিম সংয়ের বাহার বাড়ায়। পুজোর কয়েকদিন প্যান্ডেলে সাউন্ড সিস্টেমে নিজেদের পুজোর থিম সং চালানো যেন একটা আলাদা ‘দেমাক’। বিখ্যাত শিল্পীদের পরিবারের সদস্যদের দিয়েও থিমের গান গাইয়ে চমক দেয় কোনও কোনও পুজো কমিটি। যদিও স্থানীয় শিল্পীদের ‘ফেমাস’ করার অন্যতম প্ল্যাটফর্ম এই থিম সং বলে দাবি পুজো কমিটির কর্তাদের।
দুর্গাপুরে উর্বশী সর্বজনীন ২০২০ সাল থেকে থিম সং নিয়ে হাজির হচ্ছে। বরাবর তাঁরা ধারাবাহিকতা রেখেছে। পুজোর দিন দশেক আগে এই থিম সং উদ্বোধন হয়। স্থানীয় শিল্পীদের দিয়েই গান গাওয়ানো হয়। ভিজুয়ালেও অভিনয় করেন স্থানীয় কলাকুশলীরা। এবার পুজোর ২২-তম বর্ষে থিম সংয়ের শিল্পী স্নিগ্ধা সরকার। ভিডিও-তে অভিনয় করছেন স্থানীয়রাই। এবারের থিম সংয়ের ‘থিম’ পতিতালয়ে যে সমস্ত প্রতিবন্ধী নারীরা থাকেন, তাঁদেরকে দুর্গোৎসবে শামিল করা।
উর্বশী দুর্গোৎসব কমিটির সম্পাদক সুপ্রিয় গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব বিভিন্ন আঙ্গিকে আসুক। থিম সং তৈরি করে নিজস্বতা বজায় রাখা ও স্থানীয় শিল্পীদের সুযোগ করে দেওয়াই আমাদের লক্ষ্য।’’
দুর্গাপুরের অপর বিগ বাজেটেক পুজো বুদ্ধবিহার সর্বজনীন। তাঁরাও ২০২১ সাল থেকে পুজোর থিম সং নিয়ে হাজির হয়। প্রথম বছরেই ছিল চমক। জনপ্রিয় সঙ্গীত শিল্পী মহম্মদ আজিজের মেয়ে সানা আজিজ গেয়েছিলেন। তারপর থেকে যদিও স্থানীয় শিল্পীরা সুযোগ পান।
প্রতিবছর এই গান লেখেন দুর্গাপুরের পার্থসারথি গোস্বামী। এবার ৩৬-তম বর্ষে পুজোর থিম ‘আমি সেই মেয়ে’। সেই অনুকরণেই থিম সং গাইছেন শিল্পী শুভশ্রী দেবনাথ। পুজো কমিটির সম্পাদক সৌগত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘থিম সং হচ্ছে আমাদের পরিচিতি। স্থানীয় শিল্পীরাই সেই গানে কন্ঠ দেন। এটাই এখন আমাদের পুজোর ইউএসপি।’’