বিনা নোটিসে গুঁড়িয়ে দেওয়া হল প্রাথমিক বিদ্যালয়! কাঠগড়ায় জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ
প্রতিদিন | ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
রাজ কুমার, আলিপুরদুয়ার: চার লেনের মহাসড়ক নির্মাণের কাজ চলছে। সম্প্রসারণের কাজ চলছে আলিপুরদুয়ারে। সেই রাস্তা সম্প্রসারণের জন্য বিনা নোটিসে গুঁড়িয়ে দেওয়া হল প্রাথমিক বিদ্যালয়! কাঠগড়ায় জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ। যদিও এই বিষয়ে দায় নিতে কার্যত অস্বীকার করেছে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ। আজ, শনিবার চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে আলিপুরদুয়ারে। ঘটনা নিয়ে শুরু হয়েছে চাপানউতোরও।
আলিপুরদুয়ার ১ ব্লকের সোনাপুর চৌপথি লাগোয়া এলাকায় চকচকা সূর্য সেন বিদ্যাপীঠ ছিল। ৫২ বছর ধরে রাজ্য সরকারের ওই প্রাথমিক স্কুলে পঠনপাঠন হয়। ওই এলাকার পাশ দিয়েই গিয়েছে জাতীয় সড়ক। সেই জাতীয় সড়ক চওড়া করার কাজ চলছে। অভিযোগ, এদিন জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ বিনা নোটিসে ওই স্কুল ভেঙে দিয়েছে। শুধু তাই নয়, স্কুল ভেঙে দেওয়ার পরে স্কুলবাড়ির ইট ও অন্যান্য জিনিসপত্র লুট চলছিল বলে অভিযোগ। ঘটনার কথা জানতে পেরে পুলিশ সেখানে যায়। লুটপাট বন্ধ করা হয়।
কিন্তু কেন ওই স্কুল ভেঙে দেওয়া হল? জাতীয় সড়কের জমির উপরেই কি ওই স্কুল রয়েছে? সেই প্রশ্ন উঠেছে। ওই স্কুলে এলাকার ছাত্রছাত্রীরা পড়তে আসে। তাদের পঠনপাঠন কোথায় হবে? সেই আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক উত্তমকুমার দাস বলেন, “আমাদের কোনও নোটিস না দিয়েই এদিন সন্ধ্যার আগে স্কুল ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়েছে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি স্কুলের জিনিসপত্র লুটপাট হচ্ছে। পরে পুলিশকে জানালে পুলিশ এসে লুটপাট বন্ধ করে।” তিনি আরও বলেন, “সোমবার থেকে ছাত্রছাত্রীদের কোথায় পড়াব, তাই নিয়ে দু:শ্চিন্তায় আছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়েছি।”
যদিও এই বিষয় নিয়ে মুখ খুলতে চায়নি জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ। ঘটনার দায়ও নিতে চায়নি। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ইঞ্জিনিয়ার জানিয়েছেন, এমন ঘটনার কথা জানা নেই। বিষয়টি খোঁজখবর নিয়ে দেখা হবে। এই বিষয়ে রাজনৈতিক মহলেও দেখা দিয়েছে চাপানউতোর। ঘটনায় ক্ষুব্ধ রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের আলিপুরদুয়ার জেলার নেতৃত্ব। জেলার তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি প্রকাশ সিং বরাইক বলেন, “দল রাস্তা নির্মাণের পক্ষে। নোটিস আগে দেওয়া উচিত ছিল। এভাবে বিনা নোটিসে স্কুল ভেঙে দেওয়া যায় না। বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।” আলিপুরদুয়ারের বিজেপি সভাপতি রুপন দাস বলেন, “জেলা প্রশাসনের আগেই এই স্কুলটিকে অন্যত্র সরিয়ে দেওয়া উচিত ছিল। তাহলে এই ঘটনা ঘটত না।” স্কুল ভেঙে দেওয়ার ঘটনা দুঃখজনক বলে তিনি জানিয়েছেন।