জলের ক্ষতিকর পদার্থ চিহ্নিত হবে ১০ সেকেন্ডেই, উদ্ভাবন গুয়াহাটির বাঙালি গবেষকের
বর্তমান | ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
দিব্যেন্দু বিশ্বাস, নয়াদিল্লি: মিল্ক প্রোটিন থেকে উদ্ভাবন করা হয়েছে ন্যানো সেন্সরের। জলে অত্যধিক দূষিত পদার্থ আছে কি না, তা চিহ্নিত হবে ১০ সেকেন্ডেরও কম সময়ে। এহেন চমকপ্রদ সাফল্যের দাবিদার আইআইটি গুয়াহাটির একজন বাঙালি গবেষক। অধ্যাপক লালমোহন কুণ্ডুর নেতৃত্বে ওই টিমে যে আরও দু’জন সদস্য কাজ করছেন, তাঁরাও বাঙালি। পল্লবী পাল এবং অনুষ্কা চক্রবর্তী। বাঙালি গবেষকদের এহেন অভিনব উদ্ভাবন বিজ্ঞান মহলে রীতিমতো সাড়া ফেলে দিয়েছে। জানা যাচ্ছে, যে ন্যানো সেন্সর তৈরি করা হয়েছে, তা প্রধানত কার্বন ডটস এবং অতিবেগুনি রশ্মিকে ব্যবহার করে কাজ করে।
ক্রমশ এগচ্ছে সভ্যতা। বৃদ্ধি পাচ্ছে কলকারখানার সংখ্যাও। তালিকায় রয়েছে বিভিন্ন ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থার কারখানাও। গবেষকদের আশঙ্কা, ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলি যে অ্যান্টিবায়োটিক তৈরি করে, অনেক সময় তার অবশিষ্টাংশ জলে মিশে যায়। কিছু ক্ষেত্রে সেগুলি দ্রবীভূত হয়ে যায়। বহু ক্ষেত্রেই তা হয় না। দ্রবীভূত হোক বা না হোক—তা সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকারক। এমন বহু অ্যান্টিবায়োটিক আছে, যা মানুষের শরীরে গেলে হিতে বিপরীতের আশঙ্কা থাকে। উদ্ভাবিত ন্যানো সেন্সর এহেন ক্ষতিকারক পদার্থকে অত্যন্ত কম সময়ে চিহ্নিত করতে সক্ষম। এমনই দাবি করেছেন গবেষকরা। আবার পারদ বা তার জৈব রূপ কোনওভাবে জলে মিশে মানব শরীরে প্রবেশ করলেও ক্ষতি হয়। অধ্যাপক কুণ্ডু এবং তাঁর সহযোগী টিমের উদ্ভাবন করা ন্যানো সেন্সর খুব সহজেই একে চিহ্নিত করে ক্ষতির আশঙ্কা কমিয়ে দিতে সক্ষম হবে। একইসঙ্গে পরিশুদ্ধ হবে জলও।
অত্যন্ত কম মাত্রায় ক্ষতিকারক পদার্থ জলে মিশে থাকলেও ন্যানো সেন্সর তা চিহ্নিত করতে সক্ষম হবে। এর ব্যবহারিক প্রয়োগ শুরুর জন্য আরও কতদিন অপেক্ষা করতে হবে? অধ্যাপক কুণ্ডু বলেন, ‘পরীক্ষাগারে সাফল্য পেয়েছে ঠিকই। কিন্তু ব্যবহারিক প্রয়োগ শুরুর আগে নিয়মমতো আরও কিছু পরীক্ষা নিরীক্ষা করা প্রয়োজন। এখন সেই প্রক্রিয়াই চলছে। আমার টিমের সদস্যরা নিরলস সেই পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।’ ইতিমধ্যেই সায়েন্স জার্নাল ‘মাইক্রোকিমিকা অ্যাক্টা’য় প্রকাশিত হয়েছে এই সংক্রান্ত পেপার। জানিয়েছেন গবেষক।