নিজস্ব প্রতিনিধি, কোচবিহার: শনিবার কোচবিহারে মনীষী পঞ্চানন বর্মার আবক্ষ মূর্তি ভেঙে নিয়ে চলে গেল দুষ্কৃতীরা। ঘটনায় শুকটাবাড়ি-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের ফাঁসিরঘাট এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। আগামী ৯ সেপ্টেম্বর পঞ্চানন বর্মার তিরোধান দিবস। তার আগে বেদি থেকে মূর্তি গায়েব হয়ে যাওয়ার ঘটনা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
শনিবার সকালে এমন দৃশ্য নজরে আসতেই জেলাজুড়ে হইচই। খবর পেয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক, দলের জেলা চেয়ারম্যান তথা বিশিষ্ট পঞ্চানন অনুরাগী গিরীন্দ্রনাথ বর্মন ঘটনাস্থলে পৌঁছন। ঘটনার প্রতিবাদে এলাকায় মিছিল হয়। পরে কোচবিহার পুরসভার চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ ঘোষ, উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের চেয়ারম্যান পার্থপ্রতিম রায় যান। বিশ্ব রাজবংশী উন্নয়ন মঞ্চ সহ সোশ্যাল মিডিয়ায় বহু বিশিষ্ট ব্যক্তি ঘটনার তীব্র নিন্দা করেন। কে বা কারা মূর্তিটি সেখানে থাকা বেদির উপর থেকে লোপাট করল, তাদের কী উদ্দেশ্য এসব নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। বিজেপি অবশ্য এই ঘটনার জন্য তৃণমূল কংগ্রেসের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বকেই দায়ী করেছে।
জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক বলেন, ২০২২ সালে আমরা ওই মূর্তি এখানে স্থাপন করেছিলাম। শুকটাবাড়ি ও ঘুঘুমারি অঞ্চলের সীমানায় মূর্তিটি ছিল। মূর্তিটি এখান থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া ও ভগ্নাবশেষের একটা চিহ্ন পর্যন্ত না থাকায় বোঝা যাচ্ছে পরিকল্পিতভাবে করা হয়েছে। উদ্দেশ্য হল বিশৃঙ্খলা তৈরি করা। আগামী ৯ সেপ্টেম্বর পঞ্চানন বর্মার তিরোধান দিবস। সেদিন পুনরায় তাঁর মূর্তি এখানে স্থাপন করা হবে। মূর্তি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কমিটি তৈরি করা হবে।
দিন কয়েক আগে গ্রেটার নেতা তথা বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ অনন্ত মহারাজ রাসমেলা ময়দান থেকে পঞ্চানন বর্মাকে নিয়ে মন্তব্যের জেরে বিতর্ক দানা বেঁধেছিল। তারপরেই এদিনের ঘটনা নিয়ে একাধিক প্রশ্ন উঠছে। তৃণমূলের একাংশের দাবি, দু’টি ঘটনার মধ্যে যোগ থাকতে পারে। পার্থপ্রতিম রায় বলেন, রাজনৈতিক ফায়দা তোলার জন্যই এমনটা করা হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। কোচবিহার জেলায় মনীষী পঞ্চানন বর্মার মূর্তি কেউ ভাঙবে, কল্পনাও করতে পারি না। অত্যন্ত লজ্জাজনক ঘটনা। কারা করল, তাদের উদ্দেশ্য কী, পুলিস খুঁজে বের করুক।
এদিকে, বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক বিরাজ বসুর মন্তব্য, শুকটাবাড়িতে তৃণমূল কংগ্রেস গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জর্জরিত। আগের গোষ্ঠী এই মূর্তি বসিয়েছিল। এবার আর এক গোষ্ঠী মূর্তি বসিয়ে কৃতিত্ব নেবে।