• আন্দোলন নিয়ে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ পঞ্চায়েত সদস্যার, ধর্নায় বসে বিক্ষোভের মুখে খগেন
    বর্তমান | ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • সংবাদদাতা, চাঁচল: চাঁচল থানা প্রাঙ্গণে ধর্নায় বসে দলেই ক্ষোভের মুখে বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু। তাঁর বিরুদ্ধে এবার আন্দোলন নিয়ে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ করলেন দলেরই এক পঞ্চায়েত সদস্যা। তাঁর অভিযোগ, স্বামী বিরোধী দলের হাতে মার খেলেও তা নিয়ে একবারও প্রতিবাদের পথে হাঁটেননি সাংসদ।

    শুক্রবার বিকেল সাড়ে চারটে থেকে শুরু হওয়া খগেনের ধর্না শনিবার দুপুর একটা নাগাদ স্থগিত হয়। ধর্না ঘিরে থানা প্রাঙ্গণে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে শনিবার। প্রিজন ভ্যান আটকে নিগ্রহ ও মহিলা পুলিসকর্মীদের শ্লীলতাহানির অভিযোগ বিজেপি সমর্থক ও কর্মীদের বিরুদ্ধে। শুক্রবার গভীর রাতে ধর্নাস্থলে এসে থানাপাড়ার বিজেপি পঞ্চায়েত সদস্যা প্রিয়াঙ্কা হালদার সরকার সরাসরি সাংসদকে একাধিক প্রশ্ন ছুড়ে দেন। প্রিয়াঙ্কার কথায়, আমার স্বামী সুমিত সরকারও বিজেপি করেন। আমিও দলের জনপ্রতিনিধি। তাহলে সাংসদ কেন একপক্ষের হয়ে আন্দোলন করছেন। এটা দলবিরোধী কাজ। সাংসদ ধর্নার নামে নাটক করছেন।

    প্রিয়াঙ্কার উপস্থিতিতে দুই গোষ্ঠীর সমর্থকদের মধ্যে তীব্র বাদানুবাদ শুরু হলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এমন সময় থানা থেকে অন্য আসামীদের আদালতে নিয়ে যাওয়ার সময় প্রিজন ভ্যান আটকে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। সেই সময় ধস্তাধস্তিতে কয়েকজন বিজেপি সমর্থক ও পুলিসকর্মী জখম হন। পুলিসের অভিযোগ, মহিলা সহ ছয় পুলিসকর্মী নিগ্রহের শিকার হয়েছে। মহিলা পুলিসদের শ্লীলতাহানি করা হয়েছে। প্রিজন ভ্যান আটকে আসামী নামানোর চেষ্টা, মারধর, অশালীন ভাষায় আক্রমণ ও গভীর রাতে অবৈধভাবে মাইক বাজানোর অভিযোগে পুলিস মামলা করেছে। গেরুয়া শিবিরের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে দ্বন্দ্বের সূত্রপাত গত ২৮ আগস্ট রাতে আশ্রমপাড়া বুথে বিজেপির সদস্য প্রসেনজিৎ শর্মা ও দলের পঞ্চায়েত সদস্যা প্রিয়াঙ্কার স্বামী সুমিত সরকারের মধ্যে সংঘর্ষকে ঘিরে। পরে প্রসেনজিৎ সহ দু’পক্ষের ছ’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রসেনজিতের পরিবার ও সমর্থকদের অভিযোগ, সুমিতকে কেন গ্রেপ্তার করা হল না। চাঁচল ১ ব্লকের তৃণমূলের প্রাক্তন যুব সভাপতি জয়ন্ত দাসও ঘটনায় জড়িত। তাঁকেও কেন ধরা হয়নি। সেজন্যই ধর্নায় বসেছেন তাঁরা।

    ঘুরিয়ে প্রিয়াঙ্কাকে আক্রমণ করে সাংসদের মন্তব্য, বিজেপির টিকিটে জিতে কারা তৃণমূলের সঙ্গে ঘুরছেন, সেসব সবাই জানেন। যাঁদের অন্যায়ভাবে পুলিস ধরেছে, তাঁদের পরিবারকে নিয়েই আন্দোলন করছি। 

    চাঁচল থানার আইসি পূর্ণেন্দু কুণ্ডু বলেন, দুপুরে চেয়ার ছেড়ে গিয়ে সাংসদকে ডাকলেও তিনি আসেননি। পুলিসকে হেনস্তা ও মারধর করায় মামলা হচ্ছে। বিজেপির গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব নিয়ে খোঁচা দিয়েছেন চাঁচলের তৃণমূল বিধায়ক নীহাররঞ্জন ঘোষ। তাঁর মন্তব্য, সাংসদ এক গোষ্ঠীর হয়ে থানায় আন্দোলন করছেন, অন্য গোষ্ঠীর পঞ্চায়েত সদস্য তাঁর বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ করছেন। এ থেকেই স্পষ্ট বিজেপি মাটি হারাচ্ছে।
  • Link to this news (বর্তমান)