তালের খাবারে বিকল্প রোজগারের পথ দেখাচ্ছেন জামবনীর মহিলারা
বর্তমান | ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, ঝাড়গ্ৰাম: জামবনী ব্লকের মহিলারা এখন তাল শাঁসের বড়া ও অনান্য সুখাদ্য তৈরি করে বিকল্প রোজগারের দিশা দেখাচ্ছেন। তাল শাঁসের তৈরি নানা ধরনের খাবার প্যাকেটজাত করে বিদেশে পাঠানোর উদ্যোগ চলছে। ঝাড়গ্রাম শাল, পিয়াল অরণ্য অধ্যুষিত এলাকা। গ্রামে গ্রামে তাল গাছের সারি দেখা যায়। উৎসব, অনুষ্ঠান ছাড়াও গ্ৰামের মহিলারা বাড়িতে তালের বড়া, রুটি তৈরি করেন। গ্ৰামীণ এলাকার বাসিন্দাদের কাছে যা প্রিয় খাদ্য। সেই তাল শাঁস দিয়ে তৈরি নানা ধরনের বড়া শহরের বাজার, মেলা ও পর্যটনস্থলগুলিতে বিক্রি করা হচ্ছে। জেলায় বেড়াতে আসা পর্যটকরা তাল শাঁসের তৈরি নানা রকমারি ধরনের বড়া কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। বেশিরভাগ তাল গাছ থেকে পড়ে নষ্ট হতো। তাল শাঁসের তৈরি বড়া যে বিকল্প রোজগারের পথ হতে পারে তা জানা ছিল না। জামবনী ব্লকের ধরসা, কাপগাড়ি গিধনি, পরিহাটি গ্ৰাম পঞ্চায়েতের ২ হাজার মহিলা এই উদ্যোগে নেমেছেন। এক একটি দলে ১৫ জন করে মহিলা রয়েছেন। যে তাল জমির আলে, বাড়ির পাশে অবহেলায় পড়ে থাকত, তা সংগ্ৰহ করতে ধুম পড়ে গিয়েছে। এখন টাকা দিয়ে পাকা তাল সংগ্ৰহ করা হচ্ছে। সেই তালের শাঁস দিয়ে নানা ধরনের সুস্বাদু তালের বড়া তৈরি করা হচ্ছে।
জামবনী ব্লকের বেনাশুলি গ্ৰামের বাসিন্দা মালারানি মাহাত বলেন, উৎসব পার্বণে তাল দিয়ে বড়া তৈরি করতাম। তাল রুটি বাড়িতে খাওয়া হতো। তালের তৈরি নানা ধরনের বড়ার বাজারে চাহিদা বাড়ছে। বাজারে, মেলায় বিক্রির জন্য তৈরি বড়া কিনে নিয়ে যাচ্ছে। এখান থেকে যে রোজগার হতে পারে তার ধারণা ছিল না। মা লক্ষ্মী দল গড়ে তোলা হয়েছে।
অপর বাসিন্দা গৌরী মাহাত বলেন, যে তাল এতদিন অবহেলায় পড়ে থাকত তা এখন রোজগারের পথ খুলে দিচ্ছে। তালের খাদ্য বিপণনের অন্যতম উদ্যোক্তা কৌশিক মুদি বলেন, গ্ৰামীণ মহিলারা বাড়িতে তাল বড়া সহ নানা ধরনের খাবার তৈরি করেন। জামবনী পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মুধসূদন মুর্মু বলেন, জামবনী ব্লক শুখাপ্রবণ এলাকা। জলের অভাবে আগে বছরে একবার ফসল ফলত। রোজগারের জন্য বাসিন্দাদের ভিনরাজ্যে কাজ করতে যেতে হতো। ব্লকের প্রাকৃতিক সম্পদকে কাজে লাগিয়ে বিকল্প রোজগারের পথ খোলা হচ্ছে। তালের খাবার বিকল্প রোজগারের পথ খুলে দিচ্ছে। গ্ৰামের মহিলারা তালের তৈরি খাবার পক্রিয়াকরণ, বিপণন যাতে করতে পারে তারজন্য উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। আর্থিক সহযোগিতাও করা হবে।