জমি-বাড়ির অতীত মালিকানার সব তথ্য মিলবে রাজ্য পোর্টালে, ১৯৮৫’র আগের দলিলও খুঁজে দেবে এআই
বর্তমান | ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
প্রীতেশ বসু, কলকাতা: জমি-বাড়ি কিনতে গেলে প্রথমেই খোঁজ পড়ে ‘চেইন ডিড’-এর। অর্থাৎ, আগে ভালোভাবে জানতে হয়, অতীতে ওই জমি বা বাড়ির মালিকানা কার বা কাদের ছিল এবং কখন কীভাবে মালিকানা বদল হয়েছে। সরকারি তথ্যভাণ্ডারে জমিটির অস্তিত্ব আছে কি না, তা জানাটাও জরুরি। এক্ষেত্রে ১৯৮৫ সালের পরবর্তী সময়ের তথ্য অনলাইনে পাওয়া যায়। কিন্তু তার আগের দলিল সহ তথ্য পেতে গেলে রেজিস্ট্রি অফিসে গিয়ে মোটা টাকার বিনিময়ে ‘সার্চিং’ করানো ছাড়া উপায় নেই। অবশেষে এই হয়রানির দিন শেষ হতে চলেছে। কারণ, এবার থেকে জমি-বাড়ির অতীত মালিকানার যাবতীয় তথ্য সংবলিত দলিল (চলতি অর্থে চেইন ডিড) মিলবে এক ক্লিকেই। অর্থদপ্তরের আওতাধীন ‘ডাইরেক্টরেট অব রেজিস্ট্রেশন এবং স্ট্যাম্প ডিউটি’র নির্দিষ্ট পোর্টালে মিলবে এই তথ্য। গোটা প্রক্রিয়ায় সাহায্য নেওয়া হচ্ছে এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার।
সূত্রের খবর, ১৯৮৫ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত যত জমি-বাড়ির রেজিস্ট্রেশন হয়েছে, সেই সমস্ত দলিল ডিজিটাইজেশন করে ফেলেছে রাজ্য। এসব দলিলের ছবি সংরক্ষিত রয়েছে রাজ্যের অনলাইন তথ্যভাণ্ডারে। ফলে এই সময়কাল পর্যন্ত দলিলের কপি সহজেই পাওয়া যায়। এবার ১৯৮৫ সালের আগের সমস্ত দলিল ডিজিটাইজেশন শুরু করছে রাজ্য। দু’টি ধাপে এই কাজ হবে। প্রথমে ১৯৭০ থেকে ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত সমস্ত দলিল ডিজিটাইজেশন করা হবে। তারপর ১৯৭০-এর আগের দলিলগুলি। এখানেই থাকবে এআই’র গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। বহু পুরনো হওয়ার কারণে এসব দলিলের অবস্থা এমনিতেই খারাপ। জরাজীর্ণ, ঝুরঝুরে হয়ে গিয়েছে হলদেটে কাগজ। তাছাড়া, অধিকাংশ দলিলই হাতে লেখা। ফলে ম্যানুয়ালি বা কর্মচারীদের নামিয়ে এসব নথি ডিজিটাইজেশন করালে কাজ কবে শেষ হবে, বলা মুশকিল। তাছাড়া, দলিলের পাঠোদ্ধার করতে গিয়ে ভুল হওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে। তাই ১৯৮৫ সালের আগের দলিল ডিজিটাইজেশনের জন্য আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) কাজে লাগানো হবে। সমস্ত দলিলের ডিজিটাইজেশন সম্পূর্ণ হলে তা তুলে দেওয়া হবে রাজ্যের তথ্যভাণ্ডারে। তখন জমির খতিয়ান বা দাগ নম্বরের মতো তথ্য পোর্টালে দিয়ে সহজেই পাওয়া যাবে অতীত মালিকানার যাবতীয় তথ্য। সেই সঙ্গে যতবার ওই জমির মালিকানা বদল হয়েছে বা রেজিস্ট্রি হয়েছে, তার সমস্ত দলিল মিলে যাবে অনলাইনে। সূত্রের খবর, এই কাজের জন্য ‘প্রুফ অব কনসেপ্ট’ তৈরি করতে রাজ্য ইতিমধ্যে দরপত্র আহ্বান করেছে। দেশের বিভিন্ন সংস্থার পাশাপাশি বিষয়টি নিয়ে আগ্রহ দেখিয়েছে আমেরিকা, ইউরোপ, সিঙ্গাপুরের একাধিক সংস্থা।