• ‘আমার দ্বারা হল না’, স্কুলে বেরিয়ে শিলিগুড়ির বহুতল থেকে ঝাঁপ নবম শ্রেণির ছাত্রীর! হাতঘড়ি দিয়ে চাপা চিঠি
    আনন্দবাজার | ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • বাবা মায়ের চাহিদা পূরণ করতে পারেনি। পারছেও না। তাই আত্মহত্যার পথ বেছে নিল সে। চিঠির বয়ান এমনই। চিঠিটি লিখেছে (মনে করা হচ্ছে) নবম শ্রেণির এক ছাত্রী। শনিবার স্কুলে যাওয়ার নাম করে বাড়ি থেকে বেরোয় মেয়েটি। কিন্তু বাড়ি থেকে খানিক দূরে একটি বহুতলের নীচ থেকে তার রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, ওই বহুতল থেকে ঝাঁপ দিয়েছে মেয়েটি।

    স্থানীয় সূত্রে খবর, মৃত কিশোরীর নাম সরলা ঠকচক। কদমতলা বিএসএফ স্কুলের নবম শ্রেণির পড়ুয়া সে। বয়স মাত্র ১৫ বছর। ছাত্রীর মা বিএসএফে কর্মরত। কদমতলা পাঁচ নম্বর গেটের কাছে বিএসএফের আবাসনেই থাকে সরলারা।

    পুলিশ সূত্রে খবর, অন্যান্য দিনের মতো শনিবার আবাসন থেকে স্কুলে যাওয়ার জন্য বার হয় সরলা। তবে শনিবার আর সে স্কুলে যায়নি। আবাসন থেকে খানিকটা দূরেই একটি বেসরকারি বহুতল আবাসন রয়েছে। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, সরলা সেই আবাসনে ঢুকছে। প্রাথমিক অনুমান, ওই বহুতলের ছাদে উঠে সেখান থেকে ঝাঁপ দেয় নাবালিকা।

    ইতিমধ্যে একটি চিঠি উদ্ধার করেছে পুলিশ। সেটি সরলারই লেখা বলে মনে করা হচ্ছে। তাতে লেখা, ‘‘আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়। বাবা-মায়ের চাহিদা পূরণ করতে পারিনি। আমি পড়াশোনায় ভাল না। আমার দ্বারা হল না।’’ জানা যাচ্ছে, সুইসাইড নোটটি হাতঘড়ি দিয়ে চাপা দিয়ে বহুতল থেকে ঝাঁপিয়ে পড়ে মেয়েটি।

    এখন প্রশ্ন উঠছে সংশ্লিষ্ট বহুতলের নিরাপত্তা নিয়ে। একটি মেয়ে যে অন্য আবাসনে থাকে, সে কী ভাবে সকলের নজর এড়িয়ে আর একটি বহুতলের ছাদে চলে গেল, তা নিয়ে খোঁজখবর করা হচ্ছে। ওই বহুতল আবাসনের বাসিন্দা ইন্দ্রজিৎ ঠাকুর জানান, তাঁর নজরে প্রথমে পড়ে সরলা। তবে তখন সরলা পড়ে রয়েছে আবাসনের নীচে। তাকে উদ্ধার করে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা সরলাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

    মেডিক্যাল ফাঁড়ির পুলিশ অকুস্থলে গিয়েছে। খতিয়ে দেখা হচ্ছে সিসিটিভি। তারা মনে করছে, পড়াশোনার চাপে মেয়েটি আত্মহত্যা করেছে। শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের ডিসিপি রাকেশ সিংহ বলেন, ‘‘সুইসাইড নোট দেখে প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে যে, বাবা-মায়ের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারছিল না বলে মনে মনে কষ্ট পাচ্ছিল মেয়েটি। সেটাই লিখেছে। তবে তদন্ত চলছে। অন্য কোনও কারণ থাকলে তা অবশ্যই বেরিয়ে আসবে।’’
  • Link to this news (আনন্দবাজার)