• হঠাৎ ছিঁড়ে গেল রোপওয়ের তার, ধপ করে নীচে পড়তেই বিপত্তি, মোদির রাজ্যে ফের মৃত্যুমিছিল ...
    আজকাল | ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: ফের ভয়াবহ দুর্ঘটনা গুজরাটে। শনিবার দুপুরে হঠাৎ মন্দিরের যাওয়ার পথে ছিঁড়ে গেল রোপওয়ের তার। তার ছিঁড়ে নীচে হুড়মুড়িয়ে পড়ে যায় রোপওয়ে। তাতেই মৃত্যুমিছিল। এখনও পর্যন্ত ছয়জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। 

    সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে গুজরাটের পঞ্চমহল জেলার পাভাগড়ে। পুলিশ জানিয়েছে, দুপুর সাড়ে তিনটে নাগাদ মন্দিরের যাওয়ার পথের রোপওয়ের তার ছিঁড়ে বিপত্তি ঘটে। ওই রোপওয়েতে কোনও পুণ্যার্থী ছিলেন। সকলেই কর্মী ছিলেন। দুর্ঘটনায় ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের মধ্যে দুইজন কর্মী, দুইজন লিফ্টম্যান ও আরও দুইজন ছিলেন। 

    আজ সকাল থেকেই রোপওয়েতে ওঠা পুণ্যার্থীদের জন্য নিষেধ ছিল। খারাপ আবহাওয়ার কারণে পুণ্যার্থীদের নিয়ে রোপওয়ে মন্দিরে যাতায়াত করেনি। মন্দিরে যাওয়ার জন্য দুই হাজার সিঁড়িতে হেঁটে পৌঁছতে হয়। নতুবা ছোট ছোট গাড়ির ব্যবস্থা রয়েছে। 

    প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, হঠাৎ করেই দুপুরে বিকট শব্দ শোনা যায়। সকলে ছুটে যেতেই দেখেন মালবোঝাইকারী রোপওয়ে তার ছিঁড়ে নীচে পড়ে গেছে‌। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ ও দমকলে খবর দেওয়া হয়। ঘটনাস্থলে তড়িঘড়ি পৌঁছয় উদ্ধারকারী দলও। কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ছয়টি মৃতদেহ উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায় তারা। 

    গোধরা-পঞ্চমহলের রেঞ্জের এক পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, পাভাগড়ের পাহাড়ের কোলেই রয়েছে একটি কালী মন্দির। জায়গাটি জনবহুল এলাকায়। নিত্যদিন কয়েক লক্ষ পুণ্যার্থী এই মন্দিরে পুজো দিতে আসেন। নির্মাণকাজের জন্য মালবোঝাইয়ের জন্যেই রোপওয়েটি ব্যবহার করা হয়। মন্দিরটি ভূপৃষ্ঠ থেকে ৮০০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত। পুণ্যার্থীদের যাওয়ার জন্যেও আরও একটি রোপওয়ে চলাচল করে। কিন্তু সেদিন এটি বন্ধ ছিল। খারাপ আবহাওয়ার কারণে। 

    ইতিমধ্যে দুর্ঘটনায় নিহতদের শনাক্ত করেছেন উদ্ধারকারীরা। মৃতদের মধ্যে একজন রাজস্থান ও অন্য দু’জন জম্মু-কাশ্মীরের বাসিন্দা ছিলেন। বাকি তিনজন স্থানীয় বাসিন্দা ছিলেন। কীভাবে দুর্ঘটনাটি ঘটল, তা ঘিরে ইতিমধ্যেই উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। রোপওয়েটি ছিঁড়ে পড়ার কারণ খতিয়ে দেখছে তারা। খারাপ আবহাওয়া সত্ত্বেও কেন রোপওয়েটি চলাচল করছিল, কর্তৃপক্ষের গাফিলতি রয়েছে কিনা, রোপওয়েতে কত ওজনের পণ্য চাপানো হয়েছিল, তাও পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করে দেখছে তারা। 

    প্রসঙ্গত, ২০২২ সালে এপ্রিল মাসে দেওঘরের ত্রিকূট পাহাড়ে রোপওয়ের কেবল কারের মধ্যে মুখোমুখি সংঘর্ষের জেরে আরও একটি ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা ঘটেছিল। ত্রিকূট পাহাড়ের উপর বাবা বৈদ্যনাথ দেবের মন্দিরে যাওয়ার সময় রোপওয়েতে এই দুর্ঘটনা ঘটে। মোট ১৯টি রোপওয়ে সেই সময় সক্রিয় ছিল। একাধিক পর্যটক নিয়ে বেশ কয়েকটি রোপওয়ে মন্দিরের উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলেন। অনেকেই আবার পুজো দিয়ে রোপওয়ে করে ফিরছিলেন।

    ওই দুর্ঘটনায় একাধিক পর্যটক আহত হয়েছিলেন। মৃত্যু হয়েছিল দুই মহিলার। ঘটনাস্থলে দুদিন ফেঁসে ছিলেন আরও ৪৮ জন যাত্রী। মোট ১২টি রোপওয়েতে পর্যটকরা আটকে ছিলেন। তাঁদের উদ্ধারের জন্য নামানো হয়েছিল আধাসেনা এবং বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর (NDRF) সদস্যদের। প্রায় ৪৮ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে রোপওয়েতে আটকে ছিলেন পর্যটকরা। তদন্তে জানা গিয়েছিল, যান্ত্রিক গোলযোগের জন্যই দুর্ঘটনা ঘটেছিল। দুর্ঘটনার পরে আতঙ্কে কেবল কার থেকে লাফ দেন এক দম্পতি। তাঁরা গুরুতর আহত হন। 
  • Link to this news (আজকাল)