• চোরাপথে কার্তুজ এসেছিল কোথা থেকে, খোঁজ রহড়া-কাণ্ডে
    আনন্দবাজার | ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • রহড়ার আবাসন থেকে আগ্নেয়াস্ত্রের সঙ্গে পয়েন্ট থ্রি এইট বোরেরকার্তুজও উদ্ধার করেছিলেন গোয়েন্দারা। ওই কার্তুজ ব্যবহার করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার কাজে যুক্ত সরকারি বাহিনী। সূত্রের দাবি, চোরাপথে সেই কার্তুজ এসেছিল রহড়া থেকে ধৃত অস্ত্র কারবারি মধুসূদন মুখোপাধ্যায়ের কাছে। যেগুলি সে দুষ্কৃতীদের কাছে কয়েক হাজার টাকায় বিক্রি করেছিল বলে গোয়েন্দাসূত্রের খবর। এর পাশাপাশি, ওই কার্তুজ কে পাচার করেছিল, তদন্তকারীরা তা-ও জানতে পেরেছেন বলে সূত্রের দাবি।

    পুলিশের এক কর্তা জানাচ্ছেন, অভিযুক্ত ওই ব্যক্তির খোঁজ শুরু হয়েছে। আশা করা হচ্ছে, কার্তুজ পাচারের পিছনে যে চক্র সক্রিয়, তাদের সকলের সন্ধান মিলবে। এর পাশাপাশি, অস্ত্র পাচারের অভিযোগে বি বা দী বাগের শতাব্দী-প্রাচীন অস্ত্র বিপণির তিন মালিককে গ্রেফতার করার পরে তাদের দুইকর্মচারীকেও জেরা করতে চাইছেন তদন্তকারীরা। তাঁদের ধারণা, জেরা করলে অনেক তথ্য মিলতে পারে। গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, বি বা দী বাগের ওই অস্ত্র বিপণির পাশাপাশি শহরের আরও কয়েকটি অস্ত্র বিপণি তাঁদের নজরে রয়েছে। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, মধুসূদন ওই বিপণি ছাড়াও অন্য কয়েকটি বিপণি থেকে চোরা পথে অস্ত্র এবং কার্তুজ কিনেছিল। তাই অন্য বিপণিগুলিতেও তল্লাশি চালানো হতে পারে বলে গোয়েন্দা সূত্রের খবর।

    গত ফেব্রুয়ারিতে রাজ্য পুলিশের এসটিএফ দক্ষিণ ২৪ পরগনার জীবনতলা থেকে বেআইনি অস্ত্র-সহ কয়েক জন দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করার পরে তদন্তে বি বা দী বাগের ওই অস্ত্র বিপণির নাম উঠে আসে। সেই সূত্র ধরেই গ্রেফতার করা হয়েছিল দোকানের দুই কর্মীকে। যারা বর্তমানে জামিনে রয়েছে। উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার ওই দোকানে তল্লাশি চালিয়ে এসটিএফ দোনলা এবং একনলা বন্দুক মিলিয়ে মোট ৪১টি আগ্নেয়াস্ত্র বাজেয়াপ্ত করেছে। সেই সঙ্গে গ্রেফতার করা হয়েছে দোকানের মালিক তিন ভাইকে।

    গোয়েন্দা সূত্রের খবর, গত ফেব্রুয়ারিতে ওই দোকানের মজুত অস্ত্রের তালিকা মিলিয়ে দেখার কাজ হয়েছিল। তখন দোকানের তরফে সময় চাওয়া হয়েছিল তদন্তকারীদের কাছে। কিন্তু সাত মাস পরেও ওই দোকান মজুত অস্ত্র এবং কার্তুজের কোনও হিসাব দিতে পারেনি তদন্তকারীদের। এর পরেই সেখানে হানা দিয়ে অস্ত্রশস্ত্র বাজেয়াপ্ত করা হয়। দোকান সিল করে দেওয়া হয় তদন্তকারীদের তরফে। প্রাথমিক ভাবে গোয়েন্দারা মনে করছেন, ওই দোকানে থাকা অস্ত্র এবং কার্তুজের কোনও নথি মালিকদের কাছে নেই। এমনকি, কত কার্তুজ ওই বিপণি থেকে বিক্রি হয়েছে, তারও হিসাব মেলেনি বলে অভিযোগ।

    এই ঘটনায় ফের কলকাতা পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। নিয়ম অনুযায়ী, প্রতি মাসেই অস্ত্র বিপণিগুলির মজুত জিনিসের তালিকা মিলিয়ে দেখার কথা কলকাতা পুলিশের সংশ্লিষ্ট বিভাগের। এ ক্ষেত্রে তাদের নজরদারি ছিল কিনা, সেই প্রশ্ন উঠেছে। নজরদারি থাকলে মজুত অস্ত্রের হিসাবে গরমিল কেন পুলিশ ধরতে পারল না, তা নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন। কলকাতা পুলিশের তরফে অবশ্য কোনও মন্তব্য করা হয়নি।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)