• প্রথম দিনের এসএসসি পরীক্ষা শেষ, এখনও কোনও গোলযোগের খবর নেই
    আনন্দবাজার | ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • মোটের উপর নির্বিঘ্নেই শেষ হল স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)-এর নবম-দশম শ্রেণিতে নিয়োগের পরীক্ষা। দুপুর ১২টায় রাজ্যের ৬৩৬টি কেন্দ্রে পরীক্ষা শুরু হয়েছিল। দেড়টায় পরীক্ষা শেষ হল। অবশ্য বিশেষ ভাবে সক্ষমেরা আধ ঘণ্টা বেশি সময় পাবেন। তাঁদের পরীক্ষা শেষ হবে দুপুর ২টোয়। এখনও পর্যন্ত পরীক্ষা সংক্রান্ত কোনও গোলযোগের খবর নেই। পরীক্ষা দিয়ে খুশি পরীক্ষার্থীরাও। তাঁদের অধিকাংশই পরীক্ষাকেন্দ্র থেকে বেরিয়ে জানিয়েছেন, প্রশ্নপত্র ভাল হয়েছিল।

    তবে পরীক্ষা চলাকালীন বেলঘরিয়ার ভৈরব গাঙ্গুলি কলেজের ভিতর ঢোকার চেষ্টা করেন এক ব্যক্তি। পুলিশ তাঁকে বাধা দিলে দু’পক্ষের বচসা শুরু হয়। এই ঘটনায় শিবাশিস দাস নামের ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে বেলঘরিয়া থানার পুলিশ। পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু সমাজমাধ্যমে একটি পোস্ট করে লেখেন, “সব পরীক্ষার্থী, পশ্চিমবঙ্গ স্কুল সার্ভিস কমিশন, রাজ্যের স্কুল শিক্ষা দফতর এবং গোটা প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত আধিকারিকদের ধন্যবাদ।”

    ২০১৬ সালের এসএসসির পরীক্ষায় ওএমআর শিট (উত্তরপত্র) কারচুপির ঘটনা ঘটেছিল। তাই এ বার ওএমআর নিয়ে বাড়তি সতর্কতা জারি করেছিল কমিশন। নতুন নিয়োগ বিধি অনুযায়ী, পরীক্ষার্থীরা ওএমআরের কার্বন কপি সঙ্গে করে বাড়ি নিয়ে যেতে পারবেন। সেই মতো ওএমআরের কার্বন কপি সঙ্গে নিয়ে বেরোন পরীক্ষার্থীরা। নিয়োগ বিধি অনুযায়ী, প্যানেল এবং ওয়েটিং লিস্টের মেয়াদ থাকবে নিয়োগের প্রথম কাউন্সেলিংয়ের পরে এক বছর পর্যন্ত। তবে রাজ্য সরকারের আগাম অনুমতি নিয়ে তার মেয়াদ আরও ছ’মাস বৃদ্ধি করতে পারবে কমিশন। বিধিতে এ-ও বলা হয়েছে, প্যানেলের মেয়াদ শেষের পরে দু’বছর ওএমআর শিট সংরক্ষণ করা হবে। ওএমআর শিটের স্ক্যান করা প্রতিলিপি প্যানেলের মেয়াদ শেষের ১০ বছর পর্যন্ত সংরক্ষিত থাকবে।

    রবিবার নবম-দশমে নিয়োগের পরীক্ষায় মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৩,১৯,৯১৯। মোট পরীক্ষাকেন্দ্র ৬৩৬। পরের রবিবার, অর্থাৎ ১৪ সেপ্টেম্বর একাদশ-দ্বাদশে নিয়োগের পরীক্ষা। তাতে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ২,৪৬,৫০০। মোট পরীক্ষাকেন্দ্র ৪৭৮। এসএসসি আগেই জানিয়েছিল, ২০১৬ সালে যাঁরা চাকরি পেয়েছিলেন, তাঁদের প্রায় সকলেই আবার আবেদন করেছেন। গত বারের চেয়ে এ বার পরীক্ষার্থীর সংখ্যা অন্তত আড়াই লক্ষ বেশি।

    ২০১৬ সালের এসএসসি পরীক্ষা ঘিরে বিস্তর দুর্নীতি এবং অনিয়মের অভিযোগ উঠেছিল। তাতে স্বাভাবিক ভাবে মুখ পুড়েছিল কমিশন এবং রাজ্য সরকারের। সুপ্রিম কোর্টেও ২০১৬ সালের প্যানেল বাতিল হয়ে গিয়েছে। তাতে চাকরি খুইয়েছেন প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মী। শীর্ষ আদালতেরই নির্দেশে সেই পরীক্ষাই আবার নতুন করে হল।

    এই পরীক্ষা ঘিরেও কম বিতর্ক হয়নি। চাকরি হারানোদের মধ্যে সুপ্রিম কোর্ট যাঁদের দাগি বা টেন্টেড বলে চিহ্নিত করেছিল, তাঁরা নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে চেয়ে কলকাতা হাই কোর্ট এবং শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। পরীক্ষার সূচি পরিবর্তনের আর্জিও জানানো হয়েছিল। সুপ্রিম কোর্ট অবশ্য দু’টি আর্জিই খারিজ করে দেয়। শীর্ষ আদালত স্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দেয়, এক জন দাগিও নতুন নিয়োগে অংশ নিতে পারবেন না। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনেই গত ৩০ সেপ্টেম্বর ‘দাগি’দের তালিকা প্রকাশ করে স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)। ১,৮০৬ জন ‘দাগি’ অযোগ্যের তালিকা প্রকাশ করা হয়। তবে এ বার বিতর্ক সরিয়ে নিয়োগ প্রক্রিয়া স্বচ্ছ ভাবে হবে বলেই আশাবাদী পরীক্ষার্থীরা।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)