• শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি কেমন? জানতে কলকাতায় বড় পুজো কমিটির উদ্যোক্তাদের সঙ্গে বৈঠকে পুলিশ কমিশনার
    আনন্দবাজার | ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • আর সপ্তাহ দুয়েক পরে শহর জুড়ে পুজোর ধুম পড়ে যাবে। আসন্ন দুর্গাপুজো ঘিরে নিরাপত্তা থেকে শুরু করে নানা প্রশাসনিক ও আইনি নির্দেশিকা মেনে চলা নিশ্চিত করতে বিশেষ ভাবে উদ্যোগী হল কলকাতা পুলিশ। আগামী ১০ সেপ্টেম্বর, বুধবার সন্ধ্যা ৬টায় আলিপুরের ধনধান্য অডিটোরিয়ামে বড়সড় বৈঠকের আয়োজন করেছেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা। কলকাতা পুলিশের শীর্ষমহল সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই লালবাজার থেকে কলকাতার সব থানার ওসিদের কাছে এই বৈঠক সংক্রান্ত বিস্তারিত নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে। তবে এই বৈঠকে বাছাই করা পুজো কমিটির কর্তাদের তলব করা হয়েছে বলে লালবাজার সূত্রে খবর। কারণ প্রসঙ্গে জানা গিয়েছে, কলকাতা জুড়ে যে সব পুজোয় বৃহৎ জনসমাগম হয়, মূলত সেই সব পুজো কমিটির কর্তাদের নিয়ে এই বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে।

    শহরের ১০টি পুলিশ ডিভিশনের অন্তর্গত নির্বাচিত বড় পুজো কমিটি থেকে প্রতি কমিটি দু’জন প্রতিনিধি পাঠাবে এই বৈঠকে। সব মিলিয়ে প্রায় ১৫০০ উদ্যোক্তা উপস্থিত থাকবেন। উদ্যোক্তাদের পাশাপাশি বৈঠকে থাকবেন কলকাতা পুরসভার আধিকারিকেরা, বিদ্যুৎ সরবরাহকারী সংস্থা সিইএসসি, দমকল দফতর, রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ, এবং বিভিন্ন প্রশাসনিক সংস্থার প্রতিনিধিরা। কলকাতার সব থানার ওসি, এসি ও ডিসিরাও বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন বলে জানা গিয়েছে। লালবাজার থেকে পাঠানো নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, বৈঠকে মূলত অনলাইনে পুজোর অনুমতি নেওয়ার প্রক্রিয়া, হাইকোর্টের নির্দেশিকা মেনে চলা, চাঁদা আদায়ের নিয়মনীতি, প্যান্ডেল নির্মাণে বিধিনিষেধ, প্রতিমা বিসর্জনের সময়সূচি ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা নিয়ে আলোচনা হবে। এ ছাড়াও শহর জুড়ে পুজোর দিনগুলিতে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে পুলিশের পাশাপাশি অন্যান্য দপ্তরের ভূমিকা নিয়েও সমন্বয় ঘটানো হবে।

    পুলিশের এক আধিকারিক জানান, দুর্গাপুজো ঘিরে প্রতি বছরই ভিড় নিয়ন্ত্রণ, ট্রাফিক সমস্যা, শব্দদূষণ, চাঁদা নিয়ে অভিযোগ-সহ নানা জটিলতা তৈরি হয়। এ বার থেকে অনলাইন পারমিট প্রক্রিয়া আরও সহজ করা হয়েছে। উদ্যোক্তারা যাতে শেষ মুহূর্তে কোনও সমস্যায় না পড়েন, সেই বিষয়টিও আলোচনার অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু হবে।

    লালবাজারের একটি সূত্রের দাবি, কমিশনার মনোজ উদ্যোক্তাদের উদ্দেশে স্পষ্ট বার্তা দেবেন যে, আদালতের নির্দেশিকা ও প্রশাসনিক বিধিনিষেধ অমান্য করলে কঠোর পদক্ষেপ করা হবে। একই সঙ্গে, সব পক্ষের সক্রিয় সহযোগিতার মাধ্যমেই দুর্গাপুজো শান্তিপূর্ণ ভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে এগোচ্ছে কলকাতা পুলিশ। কলকাতার দুর্গাপুজো কমিটিগুলির দায়িত্বপ্রাপ্ত সংগঠন ফোরাম ফর দুর্গোৎসবের সহ-সভাপতি শাশ্বত বসু বলেন, ‘‘নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের পুজোয় কী ভাবে কাজ করতে হবে, সে বিষয়ে স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছেন। তা সত্ত্বেও কলকাতা পুলিশের কমিশনার যখন আমাদের বৈঠকে তলব করেছেন, তখন আমরা অবশ্যই যাব। তাঁর কথাও মন দিয়ে শুনে তা কার্যকর করার চেষ্টা করব। তবে এ ক্ষেত্রে আমাদেরও কিছু পরামর্শের কথা কলকাতা পুলিশকে জানাব।’’

    বিশেষজ্ঞ মহলের মতে, এই বৈঠক শুধুমাত্র নিয়মশৃঙ্খলা নয়, বরং শহরের অন্যতম বড় উৎসব সফল ভাবে আয়োজন করার জন্য উদ্যোক্তা ও প্রশাসনের যৌথ প্রচেষ্টার মঞ্চ হিসেবেই কাজ করবে। ফলে, ১০ সেপ্টেম্বরের এই বৈঠককে কেন্দ্র করে উদ্যোক্তামহলে ইতিমধ্যেই যথেষ্ট গুরুত্ব তৈরি হয়েছে।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)