এক মাসের মধ্যে ফের উত্তরকাশী তছনছ, মেঘভাঙা বৃষ্টিতে তলিয়ে গেল পরপর বাড়ি, নিমেষের মধ্যে বিরাট ক্ষয়ক্ষতি ...
আজকাল | ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: ফের মেঘ ভাঙা বৃষ্টিতে তছনছ উত্তরাখণ্ডের উত্তরকাশী। সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, শনিবার যমুনা ভ্যালিতে মেঘ ভাঙা বৃষ্টির ঘটনা ঘটেছে। যার জেরে নওগাঁ এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ভেঙে পড়েছে একটি বসতবাড়ি। তলিয়ে গেছে একাধিক বাড়ি, হোটেল। মেঘ ভাঙা বৃষ্টির জেরে তুমুল বেগে হড়পা বানের জল ঢুকে পড়েছে কমপক্ষে ১২টি বাড়িতে।
জেলা শাসক প্রশান্ত আর্য জানিয়েছেন, শনিবার সন্ধ্যায় যমুনা ভ্যালিতে সাইওরি ফল পট্টিতে মেঘ ভাঙা বৃষ্টির ঘটনা ঘটেছে। ওই অঞ্চলের নীচু এলাকাগুলি আবারও প্লাবিত হয়ে পড়েছে। একাধিক ভিডিওতে দেখা গেছে, কাদাজলের স্রোত প্রবল বেগে ছুটে যাচ্ছে গ্রামের রাস্তা দিয়ে। যদিও এখনও পর্যন্ত হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। ভারী বৃষ্টির কারণে আগেভাগেই সতর্কতা জারি করা হয়েছিল। ওই এলাকা থেকে স্থানীয় বাসিন্দাদের আগেই নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়। জানা গেছে, কয়েকটি ছোট গাড়ি, বাইক, স্কুটার তলিয়ে গেছে গতকাল। ওই এলাকাতেও আতঙ্ক ছড়িয়েছে। বাড়িতে বাড়িতে ঢুকে পড়েছে জল।
মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামী সোশ্যাল মিডিয়ায় জানিয়েছেন, 'উত্তরকাশী জেলার নওগাঁয়ে ভারী বৃষ্টির জেরে ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে জানতে পেরেছি। জেলা শাসকের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি আমি। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় উদ্ধারকাজ ও ত্রাণ পৌঁছানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি স্থানীয় বাসিন্দাদের দ্রুত নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ঈশ্বরের কাছে সকলের সুরক্ষার জন্য প্রার্থনা করছি।'
প্রসঙ্গত, উত্তরকাশীর ধারালি গ্রামে আগস্ট মাসের শুরুতেই পরপর প্রবল মেঘ ভাঙা বৃষ্টি এবং হড়পা বান, বিশাল ভূমিধসের ঘটনাটি ঘটেছে। জানা গিয়েছে, এই ঘটনার জেরে প্রাথমিকভাবে ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিখোঁজ ছিলেন। স্থানীয় সূত্রে খবর, এই ভয়াবহ দুর্যোগে গঙ্গোত্রী ধামের সঙ্গে সমস্ত রাস্তার সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ঘটনাস্থলের খুব কাছেই অবস্থিত গঙ্গার শীতকালীন আসন মুখবা ও পবিত্র গঙ্গোত্রী ধাম। পর্যটকদের তোলা ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, পাহাড় থেকে নেমে আসা জলপ্রবাহ ধেয়ে আসছে নিচের দিকে, একের পর এক বাড়ি ও গাছপালা ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। হরশিল অঞ্চলের খীর গাধ নালার উপচে পড়া জলের কারণে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে পড়েছে।
নিমেষে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায় গোটা গ্রাম। বাড়ি, হোটেল, হোমস্টে, রেঁস্তোরা, দোকানপাট, আর কিছুরই নেই চিহ্ন। এই উত্তরকাশীতে ভয়ঙ্কর প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের পরেই মৃত্যুমিছিল বাড়ছে। আরও বাড়ল মৃতের সংখ্যা। মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় পাঁচ। নিখোঁজের সংখ্যাও শতাধিক ছিল। প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছিল, হড়পা বানে তলিয়ে মৃত্যু হয়েছে চারজনের। বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত ১০০ জনের বেশি বাসিন্দা নিখোঁজ রয়েছেন। এর মধ্যে সেনা বাহিনীর ১১ জন জওয়ান নিখোঁজ রয়েছেন।
অন্যদিকে মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামী জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত এক হাজার মানুষকে উদ্ধার করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে অনেকেই পুণ্যার্থী ও ভিন রাজ্যের বাসিন্দা রয়েছেন। শনিবার মুখ্যমন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, আগামী ছয় মাস ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে রেশন দেবে রাজ্য সরকার। তিন জন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। দুর্গতদের কাছে রেশন, আর্থিক ক্ষতিপূরণ সময় মতো পৌঁছে দেওয়ার বিষয়টি তাঁরাই দেখাশোনা করবেন।