‘ব্রিটেনের নাগরিক’, রাহুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা সেই বিজেপি নেতাকে সমন ইডির
প্রতিদিন | ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘রাহুল গান্ধী ব্রিটেনের নাগরিক’, এমনই বিস্ফোরক দাবি করে এলাহাবাদ হাই কোর্টে মামলা দায়ের করেছিলেন ভিগ্নেশ শিশির নামে এক বিজেপি নেতা। এবার তাঁকেই সমন পাঠাল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি। ভিগ্নেশের দাবি ছিল, নিজের ব্যবসা চালানোর জন্যই ব্রিটেনের নাগরিকত্ব নেন রাহুল।
সংবাদমাধ্যম টাইমস অফ ইন্ডিয়ার রিপোর্ট অনুযায়ী, রাহুলের বিরুদ্ধে তিনি যে অভিযোগ করেছেন সে বিষয়ে বিশদ তথ্য জানার জন্য ভিগ্নেশকে সমন পাঠানো হয়েছে ইডির তরফে। ইডি জানতে চায়, রাহুল গান্ধীর কোথায় বিদেশি সংস্থা রয়েছে বা কোন বিদেশি ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট রয়েছে। এক্ষেত্রে ফরেন এক্সচেঞ্জ ম্যানেজমেন্ট অ্যাক্ট (FEMA)-এর কোনও নিয়ম ভঙ্গ করা হয়েছে কিনা? বিজেপি নেতা নিজেই জানিয়েছেন, তাঁকে ইডির তরফে নোটিস পাঠানো হয়েছে এবং আগামী ৯ সেপ্টেম্বর ইডি দপ্তরে হাজিরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই মামলার শেষ শুনানিতে আদালতে ভিগ্নেশ দাবি করেছিলেন, ব্রিটেনের সরকার রাহুল গান্ধীর নাগরিকত্ব নিয়ে ভারত সরকারের সঙ্গে তথ্যের আদান প্রদান করেছে। আদালতে মামলা করার জেরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফেও তাঁকে নোটিস পাঠানোর কথা জানিয়েছিলেন বিজেপি নেতা। এবার সেই মামলায় যাবতীয় তথ্য জানতে মামলাকারী ভিগ্নেশকে নোটিস পাঠাল ইডি।
প্রসঙ্গত, রাহুল গান্ধীর নাগরিকত্ব নিয়ে এলাহাবাদ হাইকোর্টে একটি মামলা চলছে। মামলাকারীর অভিযোগ রাহুল ব্রিটিশ নাগরিক। সেই সমস্ত তথ্যপ্রমাণ তিনি মামলায় জমা করেছেন। কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে নির্দিষ্ট তথ্য না থাকায় মামলাটি আগে বাতিল হয়ে গেলেও সম্প্রতি ব্রিটিশ সরকার কেন্দ্রীয় সরকারকে রাহুল গান্ধীর নাগরিকত্ব সংক্রান্ত নথি তুলে দেওয়ার পর হাইকোর্ট মামলাটি নতুন করে চালু করেছে। ওই বিজেপি কর্মীর অভিযোগ ছিল, রাহুল একই সঙ্গে ব্রিটেন এবং ভারতের নাগরিক। তাঁর কাছে নাকি তথ্যপ্রমাণও আছে। রাহুলের নাগরিকত্ব নিয়ে তথ্য জানতে ব্রিটেনের সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। কিছু তথ্য তাঁরা দিয়েছেন। তবে সব তথ্য গোপনীয়তার খাতিরে দেয়নি। এ বিষয়ে সিবিআই তদন্ত হওয়া উচিত। কেন্দ্রেরও উচিত, এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা। কারণ নিয়ম অনুযায়ী, কোনও ভারতীয়ের দ্বৈত নাগরিকত্ব আইনত অপরাধ।
উল্লেখ্য, রাহুল গান্ধীর নাগরিকত্ব নিয়ে এর আগেও একাধিকবার প্রশ্ন উঠেছে। এর আগে দিল্লি হাই কোর্টে এই একই অভিযোগে মামলার করেছেন বিজেপি নেতা সুব্রহ্মণ্যম স্বামী। স্বামীর দাবি, ব্রিটিশ সংস্থা ব্যাকপ্স লিমিটেডের মাধ্যমে ২০০৫ এবং ২০০৬ সালে রাহুলের দাখিল করা বার্ষিক রিটার্ন সংক্রান্ত নথিগুলি তাঁর ব্রিটেনের নাগরিকত্বের প্রমাণ। এছাড়া ইংল্যান্ডে রাহুলের নামে থাকা একটি কোম্পানির ঘোষণাপত্রে, নিজেকে ইংল্যান্ডের নাগরিক হিসেবে উল্লেখ করেছেন তিনি। রাহুল ব্রিটেনের নাগরিক, এই অভিযোগ তুলে তাঁর মনোনয়ন খারিজের দাবিও একাধিকবার উঠেছে। ঘটনাচক্রে বিজেপি নেতারা এর আগে বারবার রাহুল গান্ধীকে বিদেশের নাগরিক হিসাবে প্রমাণ করার চেষ্টা করলেও কেন্দ্র সেভাবে উচ্চবাচ্য করেনি।